

গাজায় দীর্ঘ দুই বছর গণহত্যা চালানোর পর এবার নতুন এক সংকটে পড়েছেন ইসরায়েলি প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। দেশটির প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের বাসভবন ঘেরাও করে নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে বিক্ষোভ করেছে বিক্ষোভকারীরা। এতে যোগ দেন বিরোধী দলের নেতারাও। মূলত নেতানিয়াহু তার ভুল স্বীকার না করে এবং কোনো অনুশোচনা ছাড়াই প্রেসিডেন্ট কাছে ক্ষমার আবেদন করেন। এরপরই রোববার রাতে বিক্ষোভে নামেন ইসরায়েলিরা।
একজন বিক্ষোভকারী কয়েদিদের কমলা রঙের জাম্পস্যুট পরে বিক্ষোভে অংশ নেন। অন্য বিক্ষোভকারীরা কলার একটি স্তূপের পেছনে দাঁড়িয়ে ছিল। যেখানে লেখা ছিল ক্ষমা করুন। মূলত নেতানিয়াহু তার দোষ স্বীকার না করে ক্ষমা চাওয়ায় তাকে উপহাস করতেই এই বিক্ষোভের আয়োজন করা হয়।
এদিকে প্রেসিডেন্ট হারজগের কার্যালয় এক বিবৃতিতে নেতানিয়াহুর আবেদনকে নজিরবিহীন বলে মন্তব্য করেছে। এছাড়া এই আবেদনের ব্যাপক গুরুত্ব রয়েছে বলেও জানানো হয়েছে। নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে জালিয়াতি, ঘুষ এবং আস্থা ভঙ্গের অভিযোগে তিনটি মামলায় বিচার চলছে। এসব মামলায় নেতানিয়াহুর বিরুদ্ধে চলমান বিচার নিয়ে তার সমর্থক ও বিরোধীদের মধ্যে বিভাজন বেড়েছে। নেতানিয়াহু ও তার সমর্থকদের দাবি, এসব অভিযোগ ভিত্তিহীন। এই বিচার রাজনৈতিক উদ্দেশ্যপ্রণোদিত।
এক ভিডিও বার্তায় নেতানিয়াহু বলেন, এই বিচার অব্যাহত থাকায় আমরা ভেতর থেকে ভেঙে পড়ছি এবং তীব্র বিভাজন তৈরি হচ্ছে। এছাড়া বিভেদের মাত্রা বাড়ছে। ৭৬ বছর বয়সী নেতানিয়াহু ইসরায়েলের সবচেয়ে বেশি সময় দায়িত্বপালনকারী প্রধানমন্ত্রী। ১৯৯৬ সালে তিনি সর্বপ্রথম প্রধানমন্ত্রী নির্বাচিত হন। এরপর তিন মেয়াদে তিনি ১৮ বছরের বেশি সময় ধরে দেশটির প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
এদিকে প্রেসিডেন্ট আইজ্যাক হারজগের কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে ক্ষমা চেয়েছেন ইসরায়েলের প্রধানমন্ত্রী বেনিয়ামিন নেতানিয়াহু। প্রেসিডেন্টের কার্যালয় এ তথ্য জানিয়ে বলেছে, এই ‘অনুরোধের’ জাতীয় ও আইনি গুরুত্ব বিবেচনা করে তারা বিচার বিভাগীয় কর্মকর্তাদের মতামত নেওয়ার পর সিদ্ধান্ত দেবেন।
রোববার (৩০ নভেম্বর) বিবিসির এক প্রতিবেদনে এ তথ্য জানানো হয়েছে।
প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, নেতানিয়াহু গত পাঁচ বছর ধরে তিনটি পৃথক দুর্নীতি মামলায় ঘুষ, জালিয়াতি ও আস্থাভঙ্গের অভিযোগে বিচারের সম্মুখীন। তিনি সব অভিযোগ অস্বীকার করে আসছেন। ভিডিও বার্তায় তিনি বলেন, তিনি চাইলে বিচার প্রক্রিয়া শেষ পর্যন্ত দেখতে পারতেন, তবে ‘জাতীয় স্বার্থ অন্যথা দাবি করেছে’।
এর আগে চলতি মাসের শুরুতে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প নেতানিয়াহুকে ‘সম্পূর্ণ ক্ষমা’ দেওয়ার জন্য ইসরায়েলের প্রেসিডেন্টের প্রতি আহ্বান জানান। হারজগ তখন জানান, ক্ষমা পেতে হলে আনুষ্ঠানিক আবেদন করতে হবে। রোববার প্রেসিডেন্ট কার্যালয় নেতানিয়াহুর আবেদনের চিঠিও প্রকাশ করেছে— যদিও সিদ্ধান্ত কবে নেওয়া হবে সে বিষয়ে কিছু বলা হয়নি।
মন্তব্য করুন