পাংশা (রাজবাড়ী) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:১৫ পিএম
আপডেট : ২০ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৩০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

রাজবাড়ীতে ভয়ংকর রাসেল ভাইপার, আতঙ্ক

রাসেল ভাইপার। পুরোনো ছবি
রাসেল ভাইপার। পুরোনো ছবি

রাজবাড়ীর পাংশায় এবার দেখা মিলেছে ভয়ংকর রাসেল ভাইপারের। এ ঘটনায় স্থানীয়দের মধ্যে আতঙ্ক বিরাজ করছে। এদিকে প্রায় চার ফুট দৈর্ঘ্যের একটি রাসেল ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরেছে কয়েকজন শিশু।

বুধবার (২০ ডিসেম্বর) সকালে উপজেলার হাবাসপুর ইউনিয়নের শাহমীরপুর গ্রামের পদ্মানদীর তীরের আখ মাড়াইয়ের খোলা থেকে সাপটি মারা হয়।

ওই এলাকার বাসিন্দা কামরুল ইসলাম জানান, ১০-১২ বয়সী কয়েকজন শিশু আখ খেতের খোলায় যায়। এ সময় খোলাতে স্তূপ করে রাখা আখের বিজ সরানোর কাজ করছিলেন এক নারী। পরে আখ বিজের স্তূপের মধ্যে তিনি একটি সাপ দেখতে পেয়ে চিৎকার করে উঠেন। একপর্যায়ে সেখানে থাকা ওই শিশুরা পিটিয়ে সাপটি মেরে নদীতে ফেলে দেয়। জানা যায়, সাপটির দৈর্ঘ‍্য হবে প্রায় চার ফুট।

রাজবাড়ীর পাংশায় ভয়ংকর রাসেল ভাইপারের সন্ধান পাওয়া যায়। ছবি : কালবেলা

স্থানীয় ইউপি সদস্য খোকন বিশ্বাস বলেন, বিষয়টি আমি শুনেছি। ঘটনাস্থলে যায়নি বা সরাসরি দেখিনি।

এ বিষয়ে হাবাসপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মো. আল মামুন খান বলেন, রাসেল ভাইপার সাপ পিটিয়ে মেরে ফেলার ঘটনাটি জানা নেই। তবে ওই এলাকায় বর্ষার সময় সাপের উপদ্রব ছিল, সেটা এখন কম।

রাসেল ভাইপার সম্পর্কে তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক এবং বাংলাদেশ বন বিভাগের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা জোহরা মিলা জানান, রাসেলস ভাইপার (Russell's Viper) সাপটি ‘চন্দ্রবোড়া’ বা ‘উলুবোড়া’ নামেও পরিচিত। আইইউসিএনের ২০১৫ সালের লাল তালিকা অনুযায়ী রাসেলস ভাইপার বাংলাদেশে সংকটাপন্ন প্রাণীর তালিকায় রয়েছে। এটি ইঁদুর ও টিকটিকি খায়। ফসলের ক্ষেত ও বসতবাড়ির আশপাশে প্রাণী দুটির প্রাচুর্যতা বেশি থাকায় খাবারের খোঁজে রাসেলস ভাইপার অনেক সময় লোকালয়ে চলে আসে এবং মানুষকে দেখে আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে কখনো কখনো আক্রমণও করে।

জোহরা মিলা বলেন, পদ্মার চরাঞ্চল, নদী অববাহিকা ও বরেন্দ্র এলাকায় উঁচু-নিচু ঘাস বা ফসলের জমিতে এই সাপটি বেশি দেখা যায়। সাধারণত জুন-জুলাই মাসে এর প্রজননকাল। সাপটি ডিম দেওয়ার বদলে সরাসরি ৬-৬৩টি বাচ্চা প্রসব করে। দেখতে মোটা, লম্বায় ২ থেকে ৩ ফুট দৈর্ঘ্য বিশিষ্ট এই সাপের গায়ে ছোপ-ছোপ গোলাকার কালো দাগ থাকে। ঘন ঘন জিহ্বা বের করে হিস হিস শব্দ করে। সাপটি সম্পর্কে যার ধারণা নেই তিনি এটিকে অজগর ভেবেই ভুল করবেন।

জোহরা মিলা বলেন, এই সাপের বিষ ‘হেমোটক্সিন’ হওয়ায় মাংস পচেই আক্রান্ত ব্যক্তির মৃত্যু হয়। সাপটির কবল থেকে বাঁচতে সচেতনতাই কার্যকর পথ। বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইন-২০১২ অনুযায়ী সাপটি সংরক্ষিত।

এটি দুর্লভ প্রজাতির একটি সাপ। পূর্বে শুধু বাংলাদেশের রাজশাহী অঞ্চলে এ সাপ পাওয়া গেলেও বর্তমানে এরা পদ্মা নদীর তীরবর্তী জেলা ও চরগুলোতেও বিস্তার লাভ করেছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

ইরান-ইসরাইল সংঘাতে কোন দিকে ভারত

রেমিট্যান্স যোদ্ধাদের সুখবর দিল বিমান বাংলাদেশ

বক্তব্যের সময় লোডশেডিং, নুর বললেন ‘এটা এক ধরনের শয়তানি’

টাইমড আউট বিতর্কে দুঃখ প্রকাশ করেন আম্পায়াররা, দাবি ম্যাথুসের

সাবেক প্রতিমন্ত্রীর গাড়িসহ আটক ২

ইসরায়েলে ৩৭০টি ক্ষেপণাস্ত্র হামলা করেছে ইরান 

নগরভবনে সভা করছেন ইশরাক, ব্যানারে লেখা ‘মাননীয় মেয়র’

রাতের মধ্যে কখন কোথায় হতে পারে বজ্রপাত

ইসরায়েলি হামলায় নিহত মোহাম্মদ কাজেমি কে

ইরান পরমাণু অস্ত্র বানাবে কি না, জানালেন প্রেসিডেন্ট

১০

মঙ্গলবারও কর্মসূচি পালন করবেন সচিবালয়ের কর্মচারীরা

১১

চিন্ময়কে কারাফটকে জিজ্ঞাসাবাদের নির্দেশ

১২

ইরান থেকে শিক্ষার্থীদের সরিয়ে নিচ্ছে ভারত

১৩

দ্রুত নির্বাচন চায় বিএনপি: আমীর খসরু 

১৪

নতুন সামরিক নেতৃত্বে কাদের রাখল ইরান

১৫

সারা দেশে ভারি বৃষ্টির পূর্বাভাস, কমবে তাপমাত্রা

১৬

হাত ও পায়ে ঝিনঝিনে ভাব হলে করণীয়

১৭

সরকারি চাকরি অধ্যাদেশ পুনর্বিবেচনার সুযোগ রয়েছে : আইন উপদেষ্টা

১৮

আবারও সচিবালয়ে বিক্ষোভ

১৯

শিক্ষকের মর্যাদার গল্পে প্রশংসিত জোভান-কেয়া

২০
X