বৃহস্পতিবার, ০৪ ডিসেম্বর ২০২৫, ১৯ অগ্রহায়ণ ১৪৩২
ঠাকুরগাঁও প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৮ ডিসেম্বর ২০২৩, ০৭:৫৬ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

ঠাকুরগাঁও হাসপাতালে ১ মাসে ১২ শিশুর মৃত্যু

ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল। ছবি : সংগৃহীত
ঠাকুরগাঁও সদর হাসপাতাল। ছবি : সংগৃহীত

ঠাকুরগাঁওয়ে শিশুসহ নানা বয়সের নারী পুরুষের নিউমোনিয়া, সর্দি, কাশি, ডায়রিয়া ও জ্বরসহ ঠান্ডাজনিত রোগের প্রকোপ বে‌ড়ে‌ছে। ব্যাপক হারে শিশুরা শীতজনিত রোগে আক্রান্ত হওয়ায় অভিভাবকরা দিশাহারা হয়ে পড়েছে।

অপরদিকে হাসপাতালগুলোতে রোগীর চাপ বাড়ায় দেখা দিয়েছে প্রয়োজনীয় সংখ্যক ওষুধ, স্যালাইন ও শয্যাসংকট। পর্যাপ্ত ওষুধ ও স্যালাইন না পেয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করছে রোগী ও স্বজনরা।

ঠাকুরগাঁও ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতাল সূত্রে জানা যায়, হাসপাতালে শিশু ওয়ার্ডে শয্যার সংখ্যা মাত্র ৪৫টি। বর্তমা‌নে শিশু বিভাগে ভর্তি রয়েছে মোট ১৮৫ জন শিশু। তাদের মধ্যে অন্তত ৭১ জন শিশু ডায়রিয়ায় আক্রান্ত। এ ছাড়া গত ১ মা‌সে বি‌ভিন্ন রো‌গে আক্রান্ত হ‌য়ে ১২ জন ‌শিশুর মৃত‌্যু হয়েছে।

মারা যাওয়া শিশু‌দের ম‌ধ্যে প্রিম্যাচিউরড বা ওজনে কম থাকা নবজাতক ও অপরিপক্ব শিশু র‌য়ে‌ছে আটজন। যা‌দের বয়স ১ থেকে দুদিন। ঠান্ডাজ‌নিত রো‌গে আক্রান্ত হ‌য়ে দুজন, হা‌র্টের সমস‌্যা নি‌য়ে একজন ও খিচুনিসহ জ্বর নি‌য়ে একজন শিশুর মৃত‌্যু হয়।

বৃহস্পতিবার (২৮ অক্টোবর) হাসপাতাল ঘুরে দেখা যায়, শিশু ওয়ার্ডের শয্যাগুলোর একটিও ফাঁকা নেই। কোনো কোনো শয্যায় একাধিক শিশুকে রেখে চিকিৎসা চলছে। বে‌শিরভাগ শিশুই নিউমোনিয়া, ডায়রিয়া, সর্দি-কাশি ও জ্বরে আক্রান্ত। শয্যা সংকুলান না হওয়ায় অনেক শিশুকে মেঝেতে শুইয়ে রেখে স্যালাইনসহ প্রয়োজনীয় চিকিৎসাসেবা দেওয়া হচ্ছে।

পীরগঞ্জ উপ‌জেলা লোহাগড়া গ্রামের এক গৃহবধূ ঠান্ডা জ্বর ও কাশিতে আক্রান্ত শিশু আহাদ ইসলামকে নিয়ে চারদিন হাসপাতালে ভর্তি। তিনি বলেন, ওষুধ কেনার টাকা নেই। গতকাল ডাক্তার ওষুধ লি‌খে দেছে। ওই ওষুধ হাসপাতা‌লে নেই। বা‌ইরে থে‌কে কি‌নে আন‌বে, সে টাকাও নেই। তাই বাবুর চি‌কিৎসা বন্ধ আছে।

হাসপাতালে চিকিৎসা নিতে আসা লায়লী বেগম না‌মে এক শিশু রোগীর মা ব‌লেন, শয্যার অভাবে মেঝেতে শয্যা পেতে থাকতে হচ্ছে তা‌কে। এতে শিশু‌টি আরও বেশি অসুস্থ হয়ে পড়ছে।

শিশু ওয়ার্ডের ইনচার্জ সি‌নিয়র স্টাফ নার্স শিল্পী আখতার ব‌লেন, ১৫ নার্স ও তিনজন চিকিৎসক দি‌য়ে দৈ‌নিক প্রায় ১৮০ থে‌কে ২০০ জন ভ‌র্তিকৃত শিশু রোগী‌কে চি‌কিৎসা দেওয়া হচ্ছে। প্রতিদিন শিশু ওয়ার্ডে ৪৫ শয্যার বিপরীতে ১০০ জনের ওপর নত‌ুন রোগী ভর্তি হয়ে চিকিৎসা নিচ্ছে।

২৫০ শয‌্যা জেনা‌রেল হাসপাতালের শিশু রোগ বি‌শেজ্ঞ ডা.সাজ্জাদ হায়দার শাহীন জানান, শীতের এ সময়ে ভাইরা‌সের প্রবণতা বে‌ড়ে যায়। যার ফ‌লে শিশুরা ঠান্ডাজনিত বিভিন্ন রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ ছাড়া শিশু‌দের রোগ প্রতি‌রোধ ক্ষমতা কিছুটা কম ব‌লে তারা সহ‌জে আক্রান্ত হ‌চ্ছে। এসব রোগের হাত থেকে রক্ষা পেতে শিশুদের প‌রিস্কার প‌রিচ্ছন্নতা রাখার পাশাপা‌শি ধু‌লোবা‌লি এ‌ড়ি‌য়ে চল‌তে হ‌বে। আর প্রয়োজনীয় সব টিকা দিতে হবে। সেই সঙ্গে শিশুর শরীর ঘামলে তা মুছিয়ে দেওয়া এবং যাতে ঠান্ডা না লাগে, সে ব্যাপারে সতর্ক থাকতে গুরুত্ব আরোপ করেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

শেরপুর জেলা জাতীয় পার্টির সভাপতি মনি গ্রেপ্তার

খালেদা জিয়ার সুস্থতা কামনায় ফরিদপুরে কর্মসূচি

এখনো ‘ট্রাভেল পাস’ চাননি তারেক রহমান : পররাষ্ট্র উপদেষ্টা

রাবির তিন শিক্ষক বরখাস্ত, ছাত্রত্ব বাতিল দুই শিক্ষার্থীর

‘চশমা’ প্রতীকে নির্বাচন করবে আট দলের শরিক জাগপা

মানুষের অধিকারের প্রশ্নে খালেদা জিয়া সব সময় আপসহীন : মাসুদুজ্জামান

খালেদা জিয়ার রোগমুক্তি কামনায় সৌদি আরব পশ্চিমাঞ্চল বিএনপির ওমরাহ পালন

সেঞ্চুরিও বাঁচাতে পারল না ভারতকে, সমতায় সিরিজ

মাদকাসক্ত ছেলের আগুনে পুড়ল বসতঘর

খালেদা জিয়ার চিকিৎসায় হাসপাতালে চীনের বিশেষজ্ঞ চিকিৎসক দল

১০

মাদ্রাসাছাত্রের রহস্যজনক মৃত্যু

১১

শরীয়তপুরে খালেদা জিয়ার আরোগ্য কামনায় মিলাদ ও দোয়া

১২

পে-স্কেল নিয়ে সরকারি কর্মচারীদের যে দাবি

১৩

সন্তানহারা মা কুকুরটিকে দেওয়া হলো দুটি নতুন ছানা

১৪

সালাউদ্দিনের পদত্যাগপত্র গ্রহণ করেনি বিসিবি, থাকছেন জাতীয় দলের সাথেই

১৫

সনাতনী ধর্মাবলম্বীদের অধিকার রক্ষার অঙ্গীকার কাজী আলাউদ্দিনের

১৬

স্কুলে ভর্তিতে বয়সসীমা নিয়ে নতুন নির্দেশনা

১৭

বাস-ভ্যানের সংঘর্ষে প্রাণ গেল দুজনের

১৮

চা খেয়ে ফিরছিলেন চার বন্ধু, একে একে প্রাণ গেল তিনজনের

১৯

বিশাল এক ইলিশ ১৪ হাজারে বিক্রি

২০
X