ঝালকাঠির সুগন্ধা নদীতে তেলবাহী ‘সাগর নন্দিনী-২’-এর আগুন পুরোপুরি নিয়ন্ত্রণে এসেছে। জাহাজটিতে দ্বিতীয়বার কেন আগুন লাগল, তার অনুসন্ধান চলছে।
১০টি ইউনিটের চেষ্টায় মঙ্গলবার ভোর সাড়ে ৫টার দিকে আগুন নিয়ন্ত্রণে আসে বলে ফায়ার সার্ভিস ও সিভিল ডিফেন্সের ঝালকাঠির স্টেশন কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম জানিয়েছেন।
ফায়ার সার্ভিস বলছে, রাতেই ঝালকাঠি ফায়ার সার্ভিসের ইউনিটের সঙ্গে খুলনা, বরিশাল, পিরোজপুর, বরগুনা, পটুয়াখালীসহ প্রায় ১০টি ইউনিট যুক্ত হয়। আগুন নিয়ন্ত্রণে পানির সঙ্গে ‘বিশেষ ফোম’ ব্যবহার করা হয়। রাতভর চেষ্টার পর তা নিয়ন্ত্রণে আসে।
ফায়ার সার্ভিস কর্মকর্তা মো. শফিকুল ইসলাম আরও বলেন, বিস্ফোরণে জাহাজের মাঝের অংশের লোহার পাত বিধ্বস্ত হয়ে ফাঁকা হয়ে গেছে। ১১ ঘণ্টা পর আগুন নিয়ন্ত্রণে এলেও মঙ্গলবার সকালে জাহাজ থেকে ধোঁয়া বের হচ্ছিল। ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা পানি ছিটানো অব্যাহত রেখেছেন।
সাগর নন্দিনীতে দ্বিতীয়বারের মতো আগুন লাগার কারণ অনুসন্ধান চলছে জানিয়ে তিনি বলেন, জাহাজটিতে এখনো প্রায় চার লাখ লিটার তেল মজুত রয়েছে। ঝালকাঠি শহরের পৌরসভার খেয়াঘাটসংলগ্ন সুগন্ধা নদীতে থাকা জাহাজটিতে সোমবার (৩ জুলাই) সন্ধ্যা সাড়ে ৬টার দিকে বিস্ফোরণ হয়ে দাউদাউ করে আগুন ধরে যায়। এতে দগ্ধ হন ১৪ জন।
এ বিস্ফোরণে দগ্ধ ৩৫ বছর বয়সী শওকত নামের এক পুলিশ সদস্য ও ৪০ বছর বয়সী মো. শরিফ নামের অপর আরেক ব্যক্তিকে রাতেই ঢাকার শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি করা হয়।
দুর্ঘটনাকবলিত জাহাজে ঝালকাঠি সদর থানার এসআই গণেশ চন্দ্র ঘরামির নেতৃত্বে ১১ পুলিশ সদস্য দায়িত্বে ছিলেন। তাদের মধ্যে তিনজন নৌ পুলিশের সদস্য। বিস্ফোরণে ৯ পুলিশ সদস্যসহ ১৪ জন আহত হন। আহতরা সবাই ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে ভর্তি।
বিস্ফোরণে দগ্ধ আরেক পুলিশ সদস্য দ্বীপের (৩২) শারীরিক অবস্থার একটু উন্নতি হওয়ায় তাকে শের-ই-বাংলা মেডিকেল কলেজ হাসপাতাল থেকে আবার ঝালকাঠি সদর হাসপাতালে পাঠানো হয়েছে বলে সংশ্লিষ্টরা জানিয়েছেন।
ঝালকাঠির পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক জানান, আহতদের মধ্যে শরিফ নামের একজন রয়েছেন। তিনি সাগর নন্দিনী-৪ নামে আরেকটি একটি তেলের জাহাজের কর্মী। বিস্ফোরণে পুলিশ সদস্য শওকতের শরীরের ১৬ শতাংশ পুড়ে গেছে।
জেলা সিভিল সার্জন এইচ এম জহিরুল ইসলাম জানান, আহত ব্যক্তিরা অনেকেই আতঙ্কগ্রস্ত হয়ে ভীতির মধ্যে আছেন, তাদের চিকিৎসা চলছে। দ্রুতই তারা সুস্থ হয়ে বাড়ি ফিরতে পারবেন বলে আশা করা হচ্ছে।
জেলা পুলিশ সুপার মোহাম্মদ আফরুজুল হক বলেন, ঢাকায় শেখ হাসিনা জাতীয় বার্ন ও প্লাস্টিক সার্জারি ইনস্টিটিউটে ভর্তি দগ্ধ দুজনের সার্বক্ষণিক খোঁজ নেওয়া হচ্ছে। আর ঝালকাঠিতে ভর্তি আহত ব্যক্তিদের চিকিৎসার ব্যবস্থা করা হয়েছে।
মন্তব্য করুন