রাজশাহী-৪ (বাগমারা) আসনে কাঁচি প্রতীকের স্বতন্ত্র প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের বিরুদ্ধে বিভিন্ন ইউনিয়ন থেকে ভোটারদের একটি নিদিষ্ট জায়গায় ডেকে নিয়ে মিটিং করার নামে টাকা দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) সকাল থেকে স্বতন্ত্র প্রার্থী এনামুলের নিয়ন্ত্রণাধীন বাগমারার মাড়িয়া ইউনিয়নের শিকদারীতে অবস্থিত সালেহা ইমারত কোল্ড স্টোরেজে এই টাকা বিতরণ করা হয়। এমন অভিযোগ তুলে আসনটিতে নৌকার প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদের পক্ষে সুপ্রীম কোর্টের আইনজীবী মো. জালাল উদ্দীন বাগমারার সহকারী রিটার্নিং কর্মকর্তা বরাবর একটি লিখিত অভিযোগ করেছেন।
অভিযোগে উল্লেখ করা হয়, স্বতন্ত্র প্রার্থী মো. এনামুল হকের সালেহা ইমারত কোল্ড স্টোরেজে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও রিটার্নিং অফিসারের গণবিজ্ঞপ্তির নির্দেশনা অমান্য করে একটি মিটিং (অনুষ্ঠান) আহ্বানের মাধ্যমে তার সমর্থিত শত শত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের জমায়েত করেছেন। সেই মিটিংয়ে স্বতন্ত্র প্রার্থী কাঁচি প্রতীকের সমর্থিত নেতাকর্মী ও সমর্থকদের নির্বাচনী এলাকার বিভিন্ন ইউনিয়ন ও ওয়ার্ডের সাধারণ ভোটারদের ভোট কেনার জন্য ব্যাপক অর্থ দেওয়া হচ্ছে এবং সেই মিটিংয়ের কার্যক্রম চলমানও রয়েছে। কাঁচি প্রতীকের এই ধরনের মিটিং আহ্বান নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন এবং রাজশাহীর রিটার্নিং কর্মকর্তার গত ৩ জানুয়ারি তারিখের গণবিজ্ঞপ্তি আদেশ ও নির্দেশনার পরিপন্থী। অভিযোগে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘন ও রিটার্নিং কর্মকর্তার গণবিজ্ঞপ্তির আদেশ অমান্য করায় কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা গ্রহণের অনুরোধ জানানো হয়।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে শুক্রবার (৫ জানুয়ারি) বিকেলে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ইঞ্জিনিয়ার এনামুল হকের মুঠোফোনে একাধিকবার কল করা হলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি। এ জন্য তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
আওয়ামী লীগের নৌকা প্রতীকের প্রার্থী অধ্যক্ষ মো. আবুল কালাম আজাদ এ বিষয়ে বলেন, ‘নির্বাচনী আচারণবিধি লঙ্ঘন করে জমায়েতের মাধ্যমে কাঁচি প্রতীকের প্রার্থী ভোটারদের মধ্যে অর্থ বিলি করছেন। আমরা কর্তৃপক্ষের কাছে এ বিষয়ে লিখিত অভিযোগ করেছি। তারা প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেবে।’
তিনি আরও বলেন, ‘ইতিমধ্যেই এনামুলের ভাড়া করা সন্ত্রাসীরা এলাকার ২-৩টি স্কুলে আগুন দিয়ে কক্ষ পুড়িয়ে দিয়েছে। ভোটারদের মধ্যে আতঙ্ক সৃষ্টি করতে ককটেল ফেলে রেখে যাচ্ছে। তার উদ্দেশ্য হচ্ছে কিছু একটা ঘটিয়ে নির্বাচন বানচাল করা। কিন্তু কাঁচি প্রতীকের প্রার্থীর এই হীন প্রচেষ্টা ও উদ্দেশ্য সফল হবে না। কেননা, মাঠে শক্ত অবস্থানে প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী রয়েছে। প্রশাসনই এর সমুচিত জবাব দেবে।’
জানতে চাইলে রাজশাহী জেলা প্রশাসক ও নির্বাচনের রিটার্নিং কর্মকর্তা শামী আহমেদ বলেন, ‘লিখিত অভিযোগ পেয়ে শুক্রবার সকালে বাগমারার ইউএনও, এসিল্যান্ড ও দায়িত্বরত নির্বাহী ম্যাজিস্ট্রেট ঘটনাস্থলে গিয়েছিলেন। তবে ভোটারদের মধ্যে টাকা দেওয়ার প্রমাণ হাতেনাতে পাওয়া যায়নি। স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থকরা বলেছেন, তারা সেখানে পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণ দিচ্ছেন। কিন্তু এখন তো সেই প্রশিক্ষণেরও সুযোগ নেই। কেননা, গত বৃহস্পতিবার রাত ৮টা থেকে নির্বাচনের সব ধরনের প্রচার-প্রচারণা বন্ধ। আমাদের দায়িত্বরত ম্যাজিস্ট্রেট ও বিজিবি ঘটনাস্থলে গিয়ে পোলিং এজেন্টদের প্রশিক্ষণের সেই মিটিং তাৎক্ষণিক বন্ধ করে দিয়েছেন। তবে আমরা যদি টাকা দেওয়ার কোনো প্রমাণ পাই তবে সঙ্গে সঙ্গে জেল হয়ে যাবে।
প্রশাসন সর্বোচ্চ সতর্ক ও নিরপেক্ষভাবে দায়িত্ব পালন করছে বলেও জানান রিটার্নিং কর্মকর্তা ।
মন্তব্য করুন