দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে জয়পুরহাট জেলার দুইটি সংসদীয় আসনে নির্বাচনী আচরণবিধি লঙ্ঘনের দায়ে জেলার দুই ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যানসহ ছয় জনের বিরুদ্ধে মামলা করার নির্দেশ দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। এ নির্দেশনা পেয়ে সদর উপজেলা, ক্ষেতলাল ও আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাগণ বাদি হয়ে জয়পুরহাট জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা দায়ের করেছেন। মামলার বিষয়টি নিশ্চিত করেন জয়পুরহাট আদালতের রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী (পিপি) নৃপেন্দ্রনাথ মন্ডল।
আদালত ও জেলা নির্বাচন কার্যালয় সূত্রে জানা গেছে, নির্বাচনী আচরণ বিধি লঙ্ঘনের অভিযোগে যাদের বিরুদ্ধে মামলা দায়ের করার নির্দেশনা দিয়েছেন নির্বাচন কমিশন। তারা হলেন, জেলার ১নং আসনের সদর উপজেলার ভাদসা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ছারোয়ার হোসেন স্বাধীন, একই উপজেলার সুন্দরপুর গ্রামের সুজাইত হোসেন এবং কামরুল ইসলাম। জেলার ২নং আসনের ক্ষেতলাল উপজেলার মামুদপুর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান মশিউর রহমান এবং ক্ষেতলালের মো. রাশেদ। ২নং আসনের আক্কেলপুর উপজেলার আকন্দপাড়ার এসআই টুটুল। অনুসন্ধান কমিটিতে অভিযোগ করে ছিলেন জেলার দুইটি আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী।
জয়পুরহাট-১ আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী ঈগল প্রতীকের জহুরুল ইসলামের কর্মীকে ইতোপূর্বে মারধর করা হয়। এ ঘটনায় প্রার্থী জহুরুল ইসলাম জয়পুরহাট নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটিতে ইউপি চেয়ারম্যান ছারোয়ার হোসেন স্বধীনের বিরুদ্ধে অভিযোগ দাখিল করেন। এ আসনের অপর স্বতন্ত্র প্রার্থী কাঁচি প্রতীকের আব্দুল আজিজ মোল্লার নির্বাচনী ক্যাম্পের ভেতরে ঢুকে নির্বাচনী পোষ্টার ছিঁড়ে আগুন দিয়ে পুড়ে দেয়। এ ঘটনায় তিনি নির্বাচন অনুসন্ধান কমিটিতে সুজাইত হোসেন এবং কামরুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ করেন।
ক্ষেতলাল উপজেলার চৌমুনী বাজার ও মিনিগাড়ি গ্রামে ২নং আসনের স্বতন্ত্র প্রার্থী কাঁচি প্রতীকের গোলাম মাহফুজ চৌধুরীর পোষ্টার ছিঁড়ে ফেলা হয়। এ ঘটনায় ইউপি চেয়ারম্যান মশিউর রহমান ও রাশেদ এর বিরুদ্ধে নির্বাচনী ২ আসনের অনুসন্ধান কমিটির কাছে অভিযোগ দেন কাঁচি প্রতীকের গোলাম মাহফুজ চৌধুরী। যাদের বিরুদ্ধে মামলা হয়েছে তারা নৌকা প্রতীকের কর্মী।
জেলার নির্বাচনী অনুসন্ধান কমিটি অভিযোগগুলো সরেজমিন তদন্ত করে স্বাক্ষ্য প্রমাণে সত্যতা পাওয়ায় প্রতিবেদন দাখিল করেন নির্বাচন কমিশনে। নির্বাচন কমিশনের উপসচিব (আইন) আব্দুছ সালাম ৫ জানুয়ারি স্বাক্ষরিত নির্দেশনায় জেলার উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তাদের মামলা করার নির্দেশ দেন। সদর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা মশিউর রহমান, আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ এবং ক্ষেতলাল উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আয়েশা বেগম বাদি হয়ে ৬টি মামলা দায়ের করেন।
আক্কেলপুর উপজেলা নির্বাচন কর্মকর্তা আব্দুস সামাদ রাতে জানান, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশে তারা মামলা করেছেন।
রাষ্টপক্ষের আইনজীবী (পিপি) জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে গত শনিবার রাত আট টার দিকে ছয়টি মামলা দায়ের বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন।
মন্তব্য করুন