নাটোরের বাগাতিপাড়া উপজেলার বিভিন্ন এলাকায় বাড়ি ও দোকানে হামলা, ভাঙচুর এবং টাকা লুটের অভিযোগ উঠেছে। সোমবার (৮ জানুয়ারি) সকাল পর্যন্ত অন্তত ২০টি বাড়িঘর ও দোকানে হামলা হয়। এসব বাড়িঘর ও দোকানপাট সদ্য সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীদের বলে জানা গেছে।
নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য আবুল কালাম আজাদের অনুসারীরা ও স্থানীয় বিএনপির কিছু নেতাকর্মী এ সহিংসতায় অংশ নিয়েছে বলে ভুক্তভোগীদের অভিযোগ। ঘটনার পর থেকে সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারীরা আত্মগোপনে রয়েছেন।
খোঁজ নিয়ে জানা যায়, রোববার (৭ জানুয়ারি) রাত ৯টায় ভোটের ফলাফল ঘোষণার খবর ছড়িয়ে পড়ে। এতে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালাম আজাদ নির্বাচিত হলে তার কর্মী হিসেবে পরিচিত দয়ারামপুর ইউনিয়নের চানপুর এলাকায় ইউপি সদস্য আক্কাস আলীর নেতৃত্বে তার ছেলে সবুজ, আওয়ামী লীগ কর্মী জাহিদুল, লিটন, শাহজালাল, কালুসহ ৮-৯ জন উপজেলা ছাত্রলীগের সাবেক উপপাঠচক্র সম্পাদক জাকারিয়া হোসেনের বাড়িতে হামলা চালান। এ সময় তার বাড়িতে ছিলেন মা আলেয়া বেগম ও দুই ভাই। তারা হাঁসুয়ার কোপে বাড়ির টিনের দেয়াল কেটে ঘরে ঢুকে ঘরের আসবাব ও টেলিভিশন ভাঙচুর করেন।
জাকারিয়া বলেন, আমাকে যেখানে পাওয়া যাবে সেখানেই মেরে ফেলা হবে বলে আমার মাকে শাসিয়েছে মেম্বারের লোকজন। আমার বাসার সামনে এখনও মেম্বারের লোকজন আমার খোঁজে বসে আছে।
এদিকে ঘোষণার পর দুই দফা হামলার ঘটনা ঘটে সাবেক সংসদ সদস্য শহিদুল ইসলাম বকুলের অনুসারী যুবলীগ কর্মী রুহুল আমিন রুবেলের বাড়িতে। বাগাতিপাড়া পৌরসভার টুনিপাড়া এলাকায় রুবেলের বাড়িতে প্রথমে স্থানীয় বিএনপির কর্মীরা এবং পরে স্বতন্ত্র প্রার্থী আবুল কালামের সমর্থকরা হামলা চালায়। এ সময় বাড়িতে থাকা ১ লাখ ৬০ হাজার টাকা ও দুটি স্বর্ণের চেইন নিয়ে যায় বিএনপির কর্মীরা।
রুবেল বলেন, রাত থেকে আমার বাসায় আমাকে কয়েক দফা খুঁজতে এসেছেন বিএনপি ও স্বতন্ত্র নির্বাচিত এমপির লোকরা। আমার বাবা কুয়েত প্রবাসী। বাসার নারীদের বলে গেছে, আমি বাসায় এলে পরিণতি খারাপ হবে। আমি এখন অন্য একজনের বাড়িতে অবস্থান করছি।
এ ছাড়া রোববার রাতেই ভাঙচুর করা হয়েছে দয়ারামপুর ইউনিয়নের সোনাপুর বাজারের মিস্টারের মুদি দোকান ও চাস্টল, বাগাতিপাড়া পৌর ১ নম্বর আওয়ামী লীগের সাধারণ সম্পাদক বেলাল হাজি, আওয়ামী লীগ কর্মী কাচু ও তুষারের বাড়ি।
বাগাতিপাড়া উপজেলা আওয়ামী লীগের সভাপতি নুরুল ইসলাম ঠান্ডু বলেন, আওয়ামী লীগের কর্মীদের ২০টি বাড়িঘর ভাঙচুর করা হয়েছে। আমাদের কর্মীরা বাড়িঘরে থাকতে পারছেন না। দ্রুত ব্যবস্থা না নিলে পরিস্থিতি আরও খারাপ হবে।
এসব বিষয়ে জানতে অভিযুক্ত ইউপি সদস্য আক্কাস আলীর সঙ্গে মোবাইল ফোনে যোগাযোগের চেষ্টা করা হয়। কিন্তু তিনি কল রিসিভ না করায় বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
বাগাতিপাড়া মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) নান্নু খান বলেন, বিজয় মিছিল নিয়ে আওয়ামী লীগের কিছু কর্মীর বাড়িতে হামলা করা হয়েছে। মৌখিকভাবে অভিযোগের পর পুলিশ পাঠানো হয়েছে। সকাল থেকেই পুলিশের টহল বাড়ানো হয়েছে।
মন্তব্য করুন