মেহেরপুর-১ আসনের মুজিবনগর উপজেলায় নির্বাচন-পরবর্তী সহিংসায় নৌকা ও ট্রাক প্রতীকের প্রায় অর্ধশতাধিক কর্মী-সমর্থক আহত হয়েছেন। এদের মধ্যে গুরুতর আহত হয়ে ২১ জন মুজিবনগর স্বাস্থ্য কমপ্লেক্স ও মেহেরপুর ২৫০ শয্যা জেনারেল হাসপাতালে চিকিৎসাধীন। অন্যদের প্রাথমিক চিকিৎসা শেষে ছেড়ে দেওয়া হয়েছে।
সোমবার (৮ জানুয়ারি) রাত সাড়ে ৯টার দিকে আনন্দবাস গ্রামে জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দিন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে এ ঘটনা ঘটে।
এ সময় জাতীয় সংসদ নির্বাচনে পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থী প্রফেসর আব্দুল মান্নানের কর্মী-সমর্থকদের হমালায় নবনির্বাচিত সংসদ সদস্য ও বর্তমান জনপ্রশাসন প্রতিমন্ত্রী ফরহাদ হোসেনের ১৮ কর্মী গুরুতর আহত হয়েছেন। একই ঘটনায় গুরুতর আহত হয়েছেন পরাজিত স্বতন্ত্র প্রার্থীর ৩ নেতাকর্মী।
প্রতক্ষ্যদর্শীরা জানান, রাত সাড়ে ৯ টার দিকে আনন্দবাস গ্রামে মেহেরপুর-১ আসনে নৌকার প্রার্থী ফরহাদ হোসেনের কর্মীসমর্থকরা বিজয় মিছিল শুরু করে। মিছিলটি স্বতন্ত্র প্রার্থীর সমর্থক জেলা আওয়ামী লীগের সহসভাপতি ও মুজিবনগর উপজেলা পরিষদের চেয়ারম্যান জিয়াউদ্দীন বিশ্বাসের বাড়ির সামনে পৌঁছালে মিছিলের মধ্যে থেকে পরাজিত স্বতন্ত্রী প্রার্থীর এক কর্মীকে চড়-থাপ্পড় মারে। এতে ক্ষিপ্ত হন স্বতন্ত্রী প্রার্থীর লোকজন। বাড়ির ছাদের ওপর থেকে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর ইটপাটকেল নিক্ষেপ শুরু করে। ঘটনার একপর্যায়ে তারা দেশীয় অস্ত্র ও লাঠিসোঁটা নিয়ে নৌকার কর্মী-সমর্থকদের ওপর হামলা চালায়। এতে নৌকার পক্ষের ১৮ ও স্বতন্ত্র প্রার্থীর তিন কর্মী-সমর্থক আহত হন। স্থানীয়রা তাদের উদ্ধার করে মুজিবনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নিয়ে আসে। এদের মধ্যে সাবেক ইউপি সদস্য ফেরদৌস আলীসহ তিন জনের অবস্থা গুরুতর হলে সেখানকার কর্তব্যরত চিকিৎসক তাদের মেহেরপুর জেনারেল হাসপাতালে পাঠিয়ে দেন।
গুরুতর আহতরা হলেন, আনন্দবাস গ্রামের কিয়ামত আলীর ছেলে সাবেক ইউপি সদস্য ফেরদোস আলী (৫০), আল মাজুল মোল্লার ছেলে আকাশ (২৫), মৃত বক্স বিশ্বাসেট ছেলে টুকু বিশ্বাস (৪০), সিরাজুল ইসলামের ছেলে হাসিব (১৩), আলতাব হোসেনের ছেলে অন্তর (১৬), ফজলু মোল্লার ছেলে আব্দুল হামিদ (৩২), মৃত জিরোত আলীর ছেলে আশরাফুল ইসলাম (৪৫), মৃত ওসমানের ছেলে আয়াত আলী (৪৫), নঈমুদ্দীন মোল্লার ছেলে নাহিদুল ইসলাম (৫৯), আয়ূব হোসেনের ছেলে নাহিদুল ইসলাম (৩৫) ওয়াজ কুরুনির ছেলে পিয়াস (২৫), মৃত শওকত আলীর ছেলে আলী ইয়াছিন (৫০) সহ আরো ৬ জন।
মুজিবনগর থানার অফিসার ইনচার্জ উজ্জ্বল কুমার দত্ত বলেন, খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় মুজিবনগর থানা পুলিশের একটি দল। উভয়পক্ষের নেতাকর্মীদের ছত্রভঙ্গ করে দেওয়া হয়েছে। বর্তমানে পরিস্থিতি শান্ত রয়েছে। এলাকায় পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে। তদন্তসাপেক্ষে দোষীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়া হবে। তবে এ ঘটনায় এখন পর্যন্ত কাউকে আটক করা হয়নি।
মন্তব্য করুন