মাঘের শীতে বাঘ কাঁদে-গ্রামবাংলায় প্রচলিত এ প্রবাদ ভেঙে এবার পৌষের শুরুতেই হাড় কাঁপানো শীত রংপুরের কাউনিয়ায় জেঁকে বসেছে। সেই সঙ্গে পাল্লা দিয়ে দিনভর পথঘাট ঘনকুয়াশার চাদরে ঢেকে থাকায় দৈনন্দিন জীবনযাত্রা আরও বিপর্যস্ত করে তুলেছে। শীতের কারণে স্বাভাবিক কর্মকাণ্ডে স্থবিরতা। বিশেষ করে অল্প আয়ের শ্রমজীবী মানুষ কর্মহীন হয়ে পড়েছে। শৈতপ্রবাহের কারণে শ্রমজীবীদের দুর্ভোগের সৃষ্টি হয়েছে।
সরেজমিনে তিস্তার চরাঞ্চলসহ বিভিন্ন গ্রাম ঘুরে দেখে গেছে, সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত সূর্যের মুখ দেখা যায়নি। শৈতপ্রবাহ ও ঘনকুয়াশা এবং কনকনে ঠান্ডায় জনজীবন বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে। চরম দুর্ভোগে পড়েছে ছিন্নমূল ও খেটে খাওয়া মানুষগুলো। তীব্র শীতে অনেকে প্রয়োজন ছাড়া ঘর থেকে বের হচ্ছেন না। এরপরও জীবিকার তাগিদে শ্রমজীবীরা শীত উপেক্ষা তিস্তার চরে আলু ক্ষেতে কাজ করছে।
আলু ক্ষেতে কাজ করা শ্রমজীবী খইমুদ্দিন জানান, ‘হামারগুলোর শীত আর গরম আছে বাহে, পেটের তাগিতে কাম হামাক করাই নাগে। হামারগুলোর খবর কায় রাখে, শীতোত হামরা মরি যাই, চরত কায়েও কম্বল দেয় না, হামরা চরের মানুষ খড়কুটো জালেয়া ছাওয়া পোয়া নিয়া আগুন পোহাই। শীতত কাম-কাজে খুব অসুবিধা হয়।’
ঢুসমারা চরের কোব্বাত আলী জানান, দিনের তুলনায় রাতে শীত কয়েক বেশি। অনেকেই ঘর থেকে বের হতে পারছেন না। সবচেয়ে বেশি সমস্যায় শিশু ও বয়স্ক মানুষের। ঠান্ডাজনিত রোগে আক্রান্ত হচ্ছেন অনেকে। দুর্ভোগ বেড়েছে গবাদিপশুরও। কাউনিয়ায় নিম্নবিত্তের মানুষ শীতবস্ত্রের অভাবে ভীষণ কষ্টে দিন কাটাচ্ছে। ঘন কুয়াশার কারণে বাস, ট্রাক ও অন্যান্য যানবাহন হেড লাইট জ্বালিয়ে চলাচল করছে।
রিকশাচালক আমিনুল জানান, শীতে বাস চলাচল কম থাকায় রিকশা ও অটোচালকদের আয় কমে গেছে।
রংপুর আবহাওয়া অফিসের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মোস্তাফিজার রহমান জানান, এই অঞ্চলে গত বছরের চেয়ে এ বছর শীতের তীব্রতা অনেক বেশি।
উপজেলা প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. আহসান হাবীব সরকার জানান সরকারিভাবে ২ ধাপে ৩ হাজার ৫৩০টি কম্বল পেয়েছি। সেগুলো বিতরণ করা হচ্ছে।
উপজেলা নির্বাহী অফিসার মো. মহিদুল হক জানান, সরকারিভাবে যে কম্বল পাওয়া গেছে তা চেয়ারম্যানদের মাধ্যমে বিতরণ করা হবে।
মন্তব্য করুন