দিনাজপুরের ফুলবাড়ীতে আগাম আলু চাষে আশানুরূপ লাভ হওয়ায় খুশি চাষি। উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে অন্তত চারগুণ লাভ হচ্ছে বলে জানাচ্ছেন তারা। পাইকাররা চাষিদের ক্ষেত থেকেই আলু কিনে নিয়ে যাচ্ছেন। এতে চাষিরা বিপণন নিয়েও দুশ্চিন্তামুক্ত। সংশ্লিষ্টরা বলছেন, আগাম আলু চাষে চাষিদের কৌশলী হতে হয়। আলু তোলার সঙ্গে সঙ্গে ওই জমিতে যেন অন্য শীতকালীন ফসলও বেড়ে উঠে, সেদিকে মনোযোগী হতে হয়।
উপজেলা কৃষি অফিস সূত্রে জানা যায়, উপজেলার পৌর এলাকাসহ সাতটি ইউনিয়নে ১ হাজার ৭৭০ হেক্টর জমিতে আলু চাষের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা ধরা হয়েছে প্রতি হেক্টরে ২৫ থেকে ৩০ টন আলু। এর মধ্যে ২২০ হেক্টর জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করা হয়েছে।
উপজেলার পলিশিবনগর গ্রামের আলু চাষি হামিদুল ইসলাম বলেন, দেড় বিঘা জমিতে আগাম জাতের আলু চাষ করেছেন তিনি। মাত্র ৫৬ দিন পরেই ক্ষেত থেকে নতুন আলু তুলতে শুরু করেছেন। আলুর ফলন ও দাম দুটোই আশানুরূপ পেয়েছেন। আবহাওয়া ভালো থাকায় আলুক্ষেতে তেমন রোগবালাই না ধরায় কীটনাশক স্প্রে করতে হয়নি। দেড় বিঘা জমিতে আলু চাষে তার খচর হয়েছে প্রায় ৩২ হাজার টাকা।
তিনি আরও জানান, জমি থেকেই পাইকাররা প্রতি কেজি ৪৪ টাকা কেজি দরে কিনে নিয়ে গেছেন। তার জমির উৎপাদন খরচ বাদ দিয়ে অন্তত দেড় লাখেরও বেশি টাকা লাভ হবে হবে আশা করছেন।
উপজেলার গোপালপুর গ্রামের আলু চাষি যোতিশ চন্দ্র রায় বলেন, প্রায় চার বিঘা জমি বর্গা নিয়ে আলু চাষ করেছেন। দুয়েক দিনের মধ্যে তার জমির আলু তোলা শেষ হবে। তেমন প্রাকৃতিক দুর্যোগ না থাকায় আলুর উৎপাদন খরচ তুলনামূলক কম হয়েছে। বর্তমানে আলুর বাজার দর ভালো থাকায় আশানুরূপ লাভ হবে বলে তিনি আশা করছেন।
উপজেলার আলুর পাইকারি ক্রেতা কালুকান্ত দত্ত বলেন, বাজারে আগাম জাতের আলু উঠায় এসব আলু রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে সরবরাহ করা হচ্ছে। এ বছর আলুসহ সব ধরনের সবজির দাম বেশি হওয়ায় চাষিরা লাভবান হচ্ছেন।
এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ রুম্মান আক্তার বলেন, চাষিরা আগাম জাতের আলু ক্ষেত থেকে ৫৫-৬০ দিনের মধ্যে উত্তোলনের পর ওই জমিতে পুনরায় ভুট্টা বা বোরো ধান চাষ করতে পারবেন।
তিনি আরও বলেন, উপজেলায় আগাম জাতের আলু ২২০ হেক্টর জমিতে চাষ হয়েছে। এতে উৎপাদনের লক্ষ্যমাত্রা নির্ধারণ করা হয়েছে প্রতি হেক্টর জমিতে ১৫ টন। এ বছর বাজারে নতুন আলুর আশানুরূপ দাম পাওয়ায় আলু চাষিরা লাভবান হয়েছেন। উপজেলা কৃষি অফিস থেকে কৃষকদের সার্বিক সহযোগিতা ও পরামর্শ দেওয়া হচ্ছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন