

হজমশক্তি দুর্বল হওয়া, পেট ফাঁপা, অস্বস্তি কিংবা ঘুমের সমস্যা— এসব কমাতে অনেকেই এখন ঘরোয়া সমাধানের দিকে ঝুঁকছেন। আর সেই তালিকায় সবচেয়ে জনপ্রিয় উপাদানগুলোর একটি হলো জিরা পানি। সাধারণ এই রান্নাঘরের মসলা হজমপ্রক্রিয়া উন্নত করা, প্রদাহ কমানো ও মেটাবোলিজম বাড়ানোর জন্য পরিচিত। পুষ্টিবিদরা বলছেন, এক মাস ধরে প্রতি রাতে জিরা ভেজানো পানি পান করলে শরীরে বেশকিছু পরিবর্তন আসতে পারে। চলুন তাহলে জেনে নিই, কী কী পরিবর্তন আসতে পারে—
১. হজমশক্তি বাড়ায়, পেট ফাঁপা কমায়
জিরা পানি দীর্ঘদিন ধরে হজম সমস্যার প্রাকৃতিক সমাধান হিসেবে ব্যবহৃত হয়ে আসছে। এটি হজম এনজাইমকে উদ্দীপিত করে, ফলে খাবার ভাঙার প্রক্রিয়া সহজ হয়। এক মাস ধরে খেলে পেট ফাঁপা, অ্যাসিডিটি ও গ্যাসের সমস্যা কমে আসে। জার্নাল অব ফুড সাইন্সে প্রকাশিত এক গবেষণায় বলা হয়, জিরা হজম এনজাইমের কার্যকারিতা বাড়াতে সাহায্য করে।
২. বিপাক ক্ষমতা বাড়ায়
রাতে নিয়মিত জিরা ভেজানো পানি পান করলে তা বিপাক ক্ষমতা বৃদ্ধি করে। জিরায় জৈব সক্রিয় যৌগ রয়েছে যা খাবারকে শক্তিতে রূপান্তরিত করতে সহায়তা করে। এর অর্থ রাতারাতি ওজন হ্রাস নয়, তবে নিয়মিত পান করলে ধীরে ধীরে নিজেকে হালকা বোধ করতে শুরু করবেন। সুষম খাদ্যের পাশাপাশি এই পানীয় নিয়মিত পান করা হলে তা শরীরে দীর্ঘস্থায়ী ইতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে।
৩. ঘুমের মান উন্নত করে
জিরা ভেজানো পানি শরীরের ওপর স্বাভাবিকভাবেই শান্ত প্রভাব ফেলে। রাতে পান করলে এটি পাচনতন্ত্রকে প্রশমিত করতে সাহায্য করে যা ফলস্বরূপ ভালো ঘুম পেতে কাজ করে। এক মাস ধরে নিয়মিত জিরা ভেজানো পানি পান করার পর শরীর হালকা এবং আরামদায়ক বোধ হতে পারে। পেট স্থির থাকলে গভীর এবং আরামদায়ক ঘুম আসে।
৪. ত্বকের স্বাস্থ্যের উন্নতি
জিরার অ্যান্টিঅক্সিডেন্ট ফ্রি র্যাডিকেলের বিরুদ্ধে লড়াই করতে সাহায্য করে যা নিস্তেজতা এবং ব্রণ সৃষ্টি করতে পারে। এক মাস ধরে রাতে জিরা ভেজানো পানি পান করার ফলে সূক্ষ্ম উজ্জ্বলতা বা ত্বকের জ্বালাপোড়া কম লক্ষ্য করতে পারবেন। নিয়মিত তরল গ্রহণের ফলে উন্নত হজম এবং উন্নত হাইড্রেশন ত্বককে পরিষ্কার করতে ভূমিকা পালন করে।
৫. রক্তে শর্করার মাত্রা বজায় রাখে
রক্তে শর্করা নিয়ন্ত্রণে জিরা মুখ্য ভূমিকা রাখতে পারে। প্রতি রাতে জিরা ভেজানো পানি পান করলে তা হঠাৎ রক্তে শর্করা বৃদ্ধি এবং হ্রাস রোধ করতে সাহায্য করতে পারে, বিশেষ করে যদি আপনার গভীর রাতে ক্ষুধা লাগার মতো সমস্যা থেকে থাকে। জার্নাল অফ ডায়াবেটিস অ্যান্ড মেটাবলিক ডিসঅর্ডারে প্রকাশিত একটি নিয়ন্ত্রিত পরীক্ষায় দেখা গেছে যে, জিরা সাপ্লিমেন্ট গ্রহণকারীদের রক্তে শর্করার মাত্রা স্বাভাবিক ছিল।
৬. ডিটক্সিফিকেশন সহায়তা
যদিও শরীর স্বাভাবিকভাবেই ডিটক্সিফাই করে, তবে জিরা ভেজানো পানি এই প্রক্রিয়াটিকে সহায়তা করে। এটি পরিপাকতন্ত্রকে সুষ্ঠুভাবে কাজ করতে সাহায্য করে। এই সম্মিলিত প্রভাব আপনাকে ধীরে ধীরে হালকা এবং আরও সতেজ করবে। অনেকে ডিটক্স ডায়েটের বদলে একটি মৃদু উপায় হিসেবে জিরা ভেজানো পানি ব্যবহার করেন।
সূত্র : এনডিটিভি
মন্তব্য করুন