শরীয়তপুরের জাজিরায় পালেরচর ইউনিয়নের গরম বাজার জোড়াব্রিজ খালের ওপর নির্মিত সেতুটি পরিণত হয়েছে মরণফাঁদে। যে কোনো সময় ঘটতে পারে বড় দুর্ঘটনা। ঝুঁকি নিয়েই পারাপার হচ্ছে যানবাহন ও মানুষ। দ্রুত নতুন আরেকটি ব্রিজ তৈরি করার দাবি জানিয়েছেন এলাকাবাসী ।
সরেজমিনে গিয়ে দেখা যায়, সেতুটির মাঝে স্লাব ভেঙে যাওয়ায় মানুষের দুর্ভোগের অন্ত নেই। সেতুর মাঝখানে ভেঙে বড় গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। প্রতিদিন এই সড়কে ঝুঁকিপূর্ণ সেতুটি দিয়ে প্রায় ৬০ হাজার মানুষ এবং অগণিত যানবাহন চলাচল করে। ফলে ঝুঁকি নিয়েই চলতে হচ্ছে যানবাহনসহ স্থানীয় বাসিন্দাদের।
স্থানীয় বাসিন্দারা জানান, বড় যানবাহন চলাচল করতে না পারায় এলাকায় কৃষিপণ্যসহ নির্মাণসামগ্রী ও নিত্যপ্রয়োজনীয় পণ্য সরবরাহে মারাত্মক সমস্যা হচ্ছে। এ ছাড়া অটোরিকশা, অটোভ্যান, নসিমন ও মোটরসাইকেলসহ হালকা যানবাহনগুলো ঝুঁকি নিয়ে চলাচল করছে। এতে প্রতিদিনই ঘটছে ছোট-বড় দুর্ঘটনা। স্থানীয় জনপ্রতিনিধি ও সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তারা দুর্ভোগ লাঘবের আশ্বাস দিলেও সেতুটির মেরামতের কোনো উদ্যোগ লক্ষ করা যাচ্ছে না।
স্থানীয় স্কুলশিক্ষক মুদাচ্ছের মাদবর বলেন, সেতুর এ অবস্থা হঠাৎ করে হয়নি। প্রায় ৪ থেকে ৫ বছর আগে সেতুটির মাঝখানে হালকা ফাটল দেখা দেয়। তারপর থেকে বড় ভাঙন দেখা দিয়েছে। সেতুর এই অবস্থার কারণে স্কুল কলেজে যাতায়াত করা ছাত্র-শিক্ষকদের জন্য কষ্টকর।
অটোভ্যান চালক সালাম শেখ, ব্যবসায়ী আল আমিন মাদবর, কলেজছাত্র সোহাগসহ অনেকেই জানান, সেতুটি প্রায় দুই বছর ধরে মাঝখানে ভেঙে বেহাল অবস্থায় পড়ে আছে। সংস্কারের কোনো উদ্যোগ নেই। এখানে প্রায় প্রতিদিনই সেতুর ভাঙা গর্তে পড়ে ছোট-বড় দুর্ঘটনা ঘটছে। দ্রুত এর সংস্কার করা না হলে যে কোনো সময় বড় ধরনের দুর্ঘটনা ঘটার সম্ভাবনা রয়েছে।
মোতাহার ঢালী নামে আরেক ব্যক্তি কালবেলাকে বলেন, সেতুটির ওপর দিয়ে চলাচলের সময় ভয়ে থাকতে হয়, কখন যেন এটি ভেঙে পড়ে। এমন আশঙ্কা নিয়ে ওই সেতুর ওপর দিয়ে জেলা-উপজেলা সদরে নিয়মিত চলাচল করছে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষ।
বিষয়টি নিয়ে পালেরচর ইউনিয়নের ৪নং ওয়ার্ড মেম্বার হাবিব ঢালী বলেন, ব্রিজের বর্তমান অবস্থা খুবই জঘন্য হয়ে পড়েছে। মানুষের অভিযোগ শুনতে হচ্ছে প্রতিনিয়ত। শুনেছি সেতুর টেন্ডার হয়েছে। এখন কাজ শুরু করতে পারলে জনগণের ভোগান্তি দূর হতো।
এ ব্যাপারে স্থানীয় পালেরচর ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান আবুল হোসেন ফরাজী কালবেলাকে বলেন, সেতুটি আমার ইউনিয়নের সঙ্গে জাজিরা উপজেলা শহর ও পার্শ্ববর্তী ইউনিয়নবাসীর যাতায়াতের প্রধান মাধ্যম। ভেঙে যাওয়া সেতুটি ঝুঁকিপূর্ণ জেনেও প্রতিদিন হাজারো মানুষ বাধ্য হয়ে চলাচল করছে।
জাজিরা উপজেলা প্রকৌশলী ইমন মোল্লা বলেন, এখানে নতুন একটি সেতু নির্মাণের জন্য টেন্ডার সম্পন্ন হয়েছে। কিছুদিনের মধ্যেই একটি নতুন সেতুর নির্মাণকাজ শুরু করা হবে।
মন্তব্য করুন