শীত ও ঘনকুয়াশায় বিপদে পড়েছেন সুনামগঞ্জের বোরো চাষিরা। গেল প্রায় আট দিনের ঠান্ডায় কোনো কোনো ধানের গোছা সাদা হয়ে গেছে। কৃষি অফিস অবশ্য বলছে, শীতের তীব্রতা কমে এসেছে, রোদের দেখাও মিলেছে। এখন আর ধানের ক্ষতি হবে না।
হাওরে বোরো চাষাবাদের শেষ সময় চলছে। একেবারে তলানির জমিতে বোরো ধানের চারা রোপণ চলছে। তবে শীতের তীব্রতা এতটাই প্রকট, হাওরে কাজ করা কঠিন হয়ে পড়েছে। ঘনকুয়াশা ও ঠান্ডা বাতাসে রীতিমতো বেকায়দায় পড়েছেন কৃষকরা।
সুনামগঞ্জে এবার দুই লাখ ২৩ হাজার ২৪৫ হেক্টর জমিতে বোর চাষাবাদ করে ১৩ লাখ ৭০ হাজার ২০২ টন ধান উৎপাদনের কথা। টাকার অঙ্কে যার মূল্য চার হাজার ১১০ কোটি টাকা। তিন দিন আগেও শীতের তীব্রতায় দিশাহারা ছিলেন কৃষক। লাগাতার ঘনকুয়াশা ও শীত থাকলে বোরোর ফলন কমে যাবে। কৃষকরা জানিয়েছেন, শীতের তীব্রতা কমার লক্ষণ দেখা দিয়েছে, যদি তাই হয়, তাহলে শঙ্কা কেটে যাবে।
জামালগঞ্জের হালির হাওরপারের হরিণাকান্দি গ্রামের কৃষক ইমরুল কায়েস বলেন, শীতের তীব্রতায় ধানের গোছা সাদা হয়ে গেছে। বাড়ছে কম। একনাগাড়ে চারদিন রোদের দেখা মেলেনি। বুধবার থেকে কিছু সময় রোদ পাওয়া গেছে। আজ শনিবার বেলা ১১টা থেকেই রোদের দেখা মিলেছে। সাদা গোছা কেউ কেউ তুলে রোপণ করছে। তাতে চাষাবাদ খরচ বেড়ে যাচ্ছে।
একই এলাকার কৃষক মিলন মিয়া বলেন, হালির হাওরে ৯২ জাতের ধান যারা রোপণ করেছেন। তাদের সকলের ধানের গোছা সাদা হয়ে গেছে। কৃষি অফিসের সঙ্গে যোগাযোগ করলে, তারা কীটনাশকের কথা বলে দিচ্ছেন। সবার কীটনাশক কেনারও সামর্থ্য নেই। কেউ কেই ধানের গোছা তুলে আবার রোপণ করছে। তাতে অতিরিক্ত খরচ লাগছে। গোছা তুলে সাদা হওয়া চারা বাছাই করে ফেলে দিয়ে আবার রোপণ করায় ধানের গোছা জমিতে কমে যাচ্ছে। এতে ফলনও কম হতে পারে।
জেলা কৃষি সম্প্রসারণ বিভাগের উপপরিচালক বিমল চন্দ্র সোম জানিয়েছেন, বোরো চাষাবাদ শেষ পর্যায়ে। ৯৮ ভাগ জমিতে ধান রোপণের কাজ শেষ। ঘনকুয়াশা ভেদ করে দুপুরের পর থেকে গেল তিন চার দিন রোদের দেখা মিলেছে। শনিবার বেলা ১০টার পরই রোদ উঠেছে। এজন্য ধানের ক্ষতি হবার আশঙ্কা দূর হয়ে গেছে।
মন্তব্য করুন