কেন্দুয়া (নেত্রকোনা) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ৩০ জানুয়ারি ২০২৪, ০৯:২৮ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

মাদ্রাসায় ১৪ দিন ধরে ঝুলছে তালা

মনকান্দা এমইউ আলিম মাদ্রাসা অ্যান্ড বিএম কলেজে ১৪ দিন ধরে ঝুলছে তালা। ছবি : কালবেলা
মনকান্দা এমইউ আলিম মাদ্রাসা অ্যান্ড বিএম কলেজে ১৪ দিন ধরে ঝুলছে তালা। ছবি : কালবেলা

নেত্রকোনার কেন্দুয়া উপজেলার মনকান্দা এমইউ আলিম মাদ্রাসা অ্যান্ড বিএম কলেজে ১৪ দিন ধরে ঝুলছে তালা।

অধ্যক্ষের অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতার বিরুদ্ধে এলাকাবাসী বিক্ষুব্ধ হওয়ায় প্রতিষ্ঠানের পাঠদান কার্যক্রম বন্ধ রেখে উধাও রয়েছেন শিক্ষকরা। ১৪ দিন ধরে শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানটির অচলাবস্থা বিরাজ করলেও সমাধানে এগিয়ে আসছে না কেউ।

সূত্র জানায়, গত ১৬ জানুয়ারি অধ্যক্ষের নানা অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতায় অতিষ্ঠ হয়ে স্থানীয় জনপ্রতিনিধিসহ এলাকাবাসী মাদ্রাসায় যায়। ওই সময়ে এলাকাবাসীর সঙ্গে অধ্যক্ষের অসৌজন্যমূলক আচরণের ফলে বিক্ষুব্ধ হয় তারা। একপর্যায়ে অধ্যক্ষকে অফিস কক্ষে অবরুদ্ধ করে রাখে এলাকাবাসী।

খবর পেয়ে কয়েকঘণ্টা পর স্থানীয় ইউপি চেয়ারম্যান ও থানার পুলিশের সহায়তা অধ্যক্ষ মুক্ত হন। এরপর থেকে মাদ্রাসায় শিক্ষার্থীরা এলেও অধ্যক্ষসহ বেশিরভাগ শিক্ষকরা মাদ্রাসায় যান না।

মঙ্গলবার (৩০ জানুয়ারি) বেলা সাড়ে ১১টার দিকে মাদ্রাসায় সরেজমিনে গেলে দেখা যায়, মাদ্রাসার প্রধান ফটকে থালা ঝুলছে। কয়েকজন শিক্ষার্থী ও দুজন শিক্ষককে মাদ্রাসার সামনে দাঁড়িয়ে থাকতে দেখা যায়।

মাদ্রাসার নিরাপত্তাকর্মী জানান, ১৬ তারিখের ঘটনার পর মূল ফটক মাঝেমধ্যে খোলা থাকলেও এখন আর খোলা হয় না। কেন খোলা হয় না জানতে চাইলে তিনি জানান, কর্তৃপক্ষের নির্দেশে সারাক্ষণ তালা দিয়ে রাখি।

স্থানীয় বাসিন্দা ও অভিভাবকরা জানান, ঝামেলা চলছে অধ্যক্ষের সঙ্গে, অন্য কোনো শিক্ষকের সঙ্গে তো আমাদের ঝামেলা নেই, তাহলে তারা কেন আসে না? তারা চান দ্রুত প্রতিষ্ঠানটি খুলে দেওয়া হোক, ক্লাশ শুরু হোক। পাঠদান বন্ধ রাখায় শিক্ষার্থীরা মারাত্মকভাবে ক্ষতি হচ্ছে বলেও জানান তারা।

মাদ্রাসার সহকারী অধ্যাপক সাইফুল ইসলাম জানান, তিনিসহ তিনজনের বেতনভাতা বন্ধ করে রেখেছেন অধ্যক্ষ। মাদ্রাসায় এলেও হাজিরা খাতায় স্বাক্ষর দিতে দেন না তিনি। তার বেতনভাতা বন্ধ চার মাস ধরে। জুনিয়র শিক্ষক সুলতানা পারভীনের বেতনভাতা বন্ধ ২০ মাস এবং অফিস সহকারী জাহাঙ্গীর আলমের বেতনভাতা ২ বছর ধরে বন্ধ করে রেখেছেন।

তিনি সিনিয়রিটি না মেনে অসদুপায়ে আবু সালেহকে সহকারী অধ্যাপকের বেতন স্কেল না দিয়ে জুনিয়র দুজনকে সহকারী অধ্যাপক পদে পদায়ন করেছেন। এভাবে অত্যাচার ও নানা কুটকৌশল করে একজন নৈশ্যপ্রহরীকে চাকরি ছাড়তে বাধ্য করেছেন তিনি। তাদের নিয়েও তিনি এমন খেলা শুরু করেছেন বলে অভিযোগ করেন সাইফুল ইসলাম।

স্থানীয়রা আরও জানান, মাদ্রাসায় অধ্যক্ষের ভাইবোনসহ নিকটতাত্মীদের চাকরি দিয়ে স্টাফদের মাঝে একটা সিন্ডিকেট গড়ে তুলেছেন। তার মতের সামান্য বাইরে গেলেই নানা ভোগান্তিতে পড়েন শিক্ষক কর্মচারীরা। তাছাড়া অধ্যক্ষ মাদ্রাসার এক একর ১০ শতাংশ জমি বিক্রি করে বিক্রয় লব্ধ টাকা আত্মসাৎ করেছেন।

দীর্ঘদিন ধরে পকেট কমিটি দ্বারা প্রতিষ্ঠান পরিচালনা করছেন। ওই কমিটিতে অভিভাবক সদস্য যাদের রাখা হয়েছে তাদের তারা চেনেন না। অধ্যক্ষের বিরুদ্ধে অভিযোগের শেষ নেই। তার এসব অনিয়ম, দুর্নীতি ও সেচ্ছাচারিতা কার্যক্রম বন্ধ করে প্রতিষ্ঠানটি সুষ্ঠুভাবে পরিচালনার জন্য বলতে গেলে আমাদের কক্ষ থেকে বের করে দেয় এবং গালাগাল করেন। আমরা তার অপসারণ চাই।

এবিষয়ে জানতে অধ্যক্ষ এ এম এম মুহিব্বুল্লাহর ফোনে বারবার কল দিলে তিনি রিসিভ না করায় তার বক্তব্য জানা সম্ভব হয়নি।

ভাইস প্রিন্সিপাল মো. নুরুল ইসলাম জানান, উদ্বুদ্ধ পরিস্থিতির কারণে আমরা মাদ্রাসায় যাচ্ছি না।

উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ভারপ্রাপ্ত) রাজিব হোসেন বলেন, বিষয়টি দ্রুত নিরসনের জন্য মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তার সঙ্গে কথা বলবেন বলে জানান তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

সীমান্ত দিয়ে ৬০ বাংলাদেশিকে ফেরত দিয়েছে বিএসএফ

‘নিজামী, মীর কাসেম ও সালাউদ্দিন কাদেরকে মিথ্যা মামলায় ফাঁসি দেওয়া হয়েছে’

ভাতের প্রতি ভালোবাসা প্রদর্শনে তৈরি ৬০০ মিটার লম্বা রাইস কেক

সালমানকে নিয়ে মন্তব্য করে তোপের মুখে সোহেল রানা

গাজায় যুদ্ধবিরতি সমন্বয় কেন্দ্রের বেসামরিক প্রধান নিয়োগ দিল যুক্তরাষ্ট্র

কুয়াকাটায় সব হোটেল-মোটেল বন্ধের ঘোষণা

নির্বাচনে বিজয়ী হওয়ার লক্ষ্যে নেতাদের কাজ করার আহ্বান সেলিমুজ্জামানের 

মারা গেল গাজীপুর সাফারি পার্কে বেঁচে থাকা সর্বশেষ জিরাফ

এইচএসসির পুনর্নিরীক্ষণের ফল প্রকাশের সম্ভাব্য তারিখ জানা গেল

বিশ্বকাপ চলাকালেই হয়রানির শিকার দুই নারী ক্রিকেটার

১০

এখন থেকেই ‘লেভেল প্লেয়িং ফিল্ড’ তৈরি করতে হবে : রাশেদ প্রধান

১১

কর্মস্থলে যোগদানের দিনেই প্রাণ গেল পুলিশ সদস্যের

১২

ছবিতে কতগুলো সংখ্যা লুকিয়ে আছে? ৯৯% মানুষই ভুল করেন উত্তর দিতে

১৩

কিশোরের পেটে ১০০ শক্তিশালী চুম্বক, অতঃপর...

১৪

‘হৃদরোগ প্রতিরোধে উত্তরাঞ্চলে বড় ভূমিকা রাখবে ন্যাশনাল হার্ট ফাউন্ডেশন’

১৫

মারা গেলেন ঘরে ৩ বস্তা টাকা পাওয়া সেই ভিক্ষুক

১৬

ডিবেট ফর ডেমোক্রেসি’র ছায়া সংসদ / গৃহকর্মীদের অধিকার রক্ষায় ন্যায়পাল নিয়োগ প্রয়োজন 

১৭

লাখ টাকা বেতনে কর্মী নেবে প্রবাসীর সিটি

১৮

ফজলে রাব্বির শারীরিক অবস্থা নিয়ে যা জানালেন ম্যাচ রেফারি

১৯

প্রেম প্রস্তাব পেয়ে বাবার ভয় দেখালেন শ্রদ্ধা কাপুর

২০
X