নেত্রকোনার কেন্দুয়ায় সাধারণ মুলা, গাজর, শিম, টমেটো, ফুলকপি, বাঁধাকপিসহ বিভিন্ন ধরনের শীতকালীন শাকসবজির চাষ করা হয়। তবে এবার ফসলের মাঠে দেখা মিলল ব্যতিক্রমী রঙিন ফুলকপি। এদিকে প্রথমবারের মতো রঙিন ফুলকপি চাষে সফলতা পেয়েছেন চিরাং ইউনিয়নের মনাটিয়া গ্রামের আব্দুল বারেকের ছেলে তরুণ উদ্যোক্তা শাহিরান হিরা। কোনোরকম কীটনাশক ছাড়াই চাষ করেছেন তিনি।
শাহিরান হিরা বলেন, আমি কেন্দুয়া সরকারি কলেজে সমাজকর্ম বিষয়ে অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের ছাত্র। বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে রঙিন ফুলকপি চাষের ভিডিও দেখে ফসলটিতে আগ্রহী হয়ে ওঠি। পরে সিনজেনটা অ্যাগ্রো কোম্পানির কাছ থেকে বিনামূল্যে ২০০০ বীজ সংগ্রহ করি এবং ১৫ শতাংশ জমিতে রঙিন ফুলকপি চাষ করি। এখন আমার জমিতে ১৫০০ রঙিন ফুলকপি বিক্রি উপযোগী হয়েছে। রঙিন ফুলকপির মধ্যে কোনোটির রঙ হলুদ আবার কিছু বেগুনি।
শাহিরান হিরা আরও বলেন, এ রঙিন ফুলকপির সৌন্দর্য উপভোগ করতে প্রতিদিনই সকাল থেকে বিকেল পর্যন্ত উৎসুক জনতা ভিড় জমান। কেউ কেউ বাগান থেকেই ফুলকপি কিনে নিয়ে যান, আবার অনেক পরামর্শ নেন।
তিনি বলেন, আমি মোট ৯০ শতাংশ জমিতে সাধারণ হল্যান্ড জাতীয় সাদা ফুলকপি চাষ করেছি। তাই প্রথম দিকে আমি সাধারণ বাঁধাকপি ও ফুলকপিই চাষ করতে চেয়েছিলাম। পরে মনে হলো একটু রঙিন কপি চাষ করলে কেমন হয়। তাই ১৫০০ হলুদ রঙের ফুলকপির সঙ্গে অল্প ব্রুকলি ও বাঁধাকপি রোপণ করি।
তিনি আরও বলেন, প্রতিটি রঙিন ফুলকপির ওজন এক থেকে দুই কেজি পর্যন্ত হয়েছে। বাজারে পাইকারি ৬০-৭০ টাকা পিস বিক্রি হবে বলে আশা করছি। সব বিক্রি করতে পারলে ৭০ থেকে ৮০ হাজার টাকার মতো বিক্রি হবে। এখন আমি সফল উদ্যোক্তা হওয়ার স্বপ্ন দেখছি।
উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা শারমিন সুলতানা বলেন, রঙিন কপি নিঃসন্দেহে একটি আকর্ষণীয় সবজি। রঙিন কপি চাষে বর্তমানে কৃষকের আগ্রহ বাড়ছে। সেইসঙ্গে মানবদেহের জন্য সাদা ফুলকপির চেয়ে এ রঙিন ফুলকপি অনেক পুষ্টিকর এবং এন্টিঅক্সিডেন্ট হিসাবে কাজ করে। অন্যদিকে, তরুণ উদ্যোক্তা শাহিরান হিরার রঙিন ফুলকপি চাষের প্রচারের ফলে ভোক্তা ও বিক্রেতাদের মাঝে ক্রয়-বিক্রয়ে আগ্রহ লক্ষ করা গেছে। কীটনাশক ছাড়াই চাষাবাদ করা যাচ্ছে এ রঙিন কপি। এতে কৃষকেরা লাভবান হবেন। আশা করি আগামীতে এ জাতের ফুলকপি চাষের পরিমাণও বাড়বে।
মন্তব্য করুন