জামালপুর প্রতিনিধি
প্রকাশ : ১৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ০৭:৪১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জামালপুরে কৃষকের বন্ধু গন্ধগোকুল উদ্ধার

জামালপুর পৌর শহরের বিসিক শিল্প এলাকায় উদ্ধার হওয়া বিরল প্রজাতির গন্ধগোকুল। ছবি : কালবেলা
জামালপুর পৌর শহরের বিসিক শিল্প এলাকায় উদ্ধার হওয়া বিরল প্রজাতির গন্ধগোকুল। ছবি : কালবেলা

জামালপুর পৌর শহরের বিসিক শিল্প এলাকায় বিরল প্রজাতির একটা গন্ধগোকুল পাওয়া গেছে। মঙ্গলবার (১৩ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে বিসিক শিল্পনগরী এলাকায় শ্রমিকরা এ বন্য প্রাণীটিকে উদ্ধার করে। প্রাণীটি কৃষকের বন্ধু হিসেবে পরিচত বলে জানিয়েছেন বাংলাদেশ বন অধিদপ্তরের বন্যপ্রাণী ও জীববৈচিত্র্য সংরক্ষণ কর্মকর্তা এবং তরুণ বন্যপ্রাণী গবেষক জোহরা মিলা।

বিসিক শিল্প মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক এনামুল হক খান মিলন জানান, প্রাণীটিকে দেখতে পেয়ে শ্রমিকরা প্রথমে আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। পরে বিভিন্ন উপায়ে চটের বস্তায় আটক করে রশি দিয়ে বেঁধে রাখা হয়।

খোঁজ নিয়ে জানা যায়, বিসিক শিল্পনগরীর আর সি আই লিমিটেডের গোডাউনের বাইরের পেছন অংশে পেঁপে গাছের নিচে গন্ধগোকুলটি রোদ পোহাচ্ছিল। এ সময় সেই কারখানার শ্রমিক মান্নানসহ অন্যরা সুকৌশলে অক্ষত অবস্থায় প্রাণীটি ধরে ফেলেন।

পরে জামালপুর বন বিভাগকে খবর দিলে তারা বন্যপ্রাণীটি উদ্ধার করে। জামালপুর সামাজিক বনায়ন প্রশিক্ষণ কেন্দ্রের ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা মো. আব্দুল করিম জানান, এ প্রাণীটির নাম গন্ধগোকুল। তাকে চিকিৎসা দেওয়ার পর বনে অবমুক্ত করা হবে।

জোহরা মিলা জানান, নিশাচর এ প্রাণীটি লোকালয়ের কাছাকাছি ঝোপ-জঙ্গলে বাস করে। এরা তাল-খেজুর রস, ফল, সবজি ছাড়াও কৃষির জন্য ক্ষতিকর পোকামাকড় ও ইঁদুর খেয়ে কৃষকের উপকার করে। মজার বিষয় হলো, বট বা অন্যান্য গাছের ফল খাওয়ায় এদের মলের সঙ্গে নির্গত বীজগুলোর শতভাগ অঙ্কুরোদগম হয়, যা উদ্ভকূল রক্ষায় দারুণ কার্যকরী।

জোহরা মিলা আরও জানান, আপনি বনজঙ্গল বা ঝোপ-ঝাড়ের পাশ দিয়ে যাওয়ার সময় যদি পোলাওয়ের চালের মতো গন্ধ পান তবে বুঝে নেবেন আপনার আশপাশেই গন্ধগোকুল আছে।

তিনি জানান, বনজঙ্গল ধ্বংস, খাদ্যের অভাব, পিটিয়ে হত্যা ইত্যাদি কারণে প্রকৃতির উপকারী এই প্রাণীটির অস্তিত্ব হুমকির মুখে পড়েছে। বিভিন্ন লোকজ ওষুধ ও টোটকা তৈরিতে গন্ধগোকুল হত্যা করা হয়। কিন্তু এসব ওষুধের কোনো বৈজ্ঞানিক ভিত্তি নেই। বরং কিছু অসাধু ব্যক্তি দেশের সরল মানুষকে ঠকাচ্ছে। এক সময় দেশে প্রচুর গন্ধগোকুলের দেখা মিললেও বর্তমান পরিস্থিতি এতটাই খারাপ হয়েছে যে, আন্তর্জাতিক প্রকৃতি ও প্রাকৃতিক সম্পদ সংরক্ষণ সংঘের (আইইউসিএন) বিবেচনায় এটি পৃথিবীর বিপন্ন প্রাণীর তালিকায় ওঠে এসেছে।

বাংলাদেশের ২০১২ সালের বন্যপ্রাণী (সংরক্ষণ ও নিরাপত্তা) আইনের তপশিল-১ অনুযায়ী এ প্রাণীটি সংরক্ষিত। তাই এটি হত্যা বা কোনো ক্ষতি করা শাস্তিযোগ্য অপরাধ বলেও জানান এই কর্মকর্তা।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

মহাসড়কে গাড়ি থামিয়ে ডাকাতি, ক্লু পাচ্ছে না পুলিশ

পাতানো জালে আটকা নিখোঁজ বৃদ্ধের লাশ

ভারত বাংলাদেশে রাজনৈতিক স্থিতিশীলতা চায় না : মুশফিকুর রহমান

সিলেটে যানজট মোকাবিলায় এনসিপির ২৭ প্রস্তাবনা

একমাস পর খুলছে বাকৃবি, সেশনজটের শঙ্কা

মানুষের কাছে জাগপার বার্তা পৌঁছে দিতে হবে : রাশেদ প্রধান 

গাজীপুরে রাতের আঁধারে সড়কে ঝরল ৩ প্রাণ

তোফায়েল আহমেদের মৃত্যুর গুঞ্জন

আ. লীগের সহসম্পাদক ব্যারিস্টার হাবিব গ্রেপ্তার

এক টাকারও অভিযোগ দিতে পারলে রাজনীতি থেকে ইস্তফা দিব : সারজিস

১০

ঢাকা মহানগর আদালতে পরিচ্ছনতা অভিযান

১১

উপস্বাস্থ্যকেন্দ্রে নারীসহ ফার্মাসিস্ট আটক

১২

৮ দিন পর খাগড়াছড়িতে ১৪৪ ধারা প্রত্যাহার

১৩

চাঁদা না দেওয়ায় ঠিকাদারকে ডেকে নিয়ে মারধর

১৪

মাউন্ট-সেশকোর গোলে ম্যানইউর স্বস্তির জয়

১৫

সাবেক ছাত্রলীগ নেতা শিবু প্রসাদ গ্রেপ্তার

১৬

‘শহিদুল আলম ও গাজার পাশে আছি-থাকব’

১৭

রেবতী মহাজন বাড়ির বিজয়া সম্মিলনী

১৮

জামায়াত ধর্মের জন্য ক্ষতিকর : আমিনুল হক

১৯

এভারেস্ট বেজ ক‍্যাম্প সামিট ৮ বাংলাদেশির

২০
X