লালমনিরহাট প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২০ ফেব্রুয়ারি ২০২৪, ১০:৩১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

উত্তর বলে দেয় নাবিলা, খাতায় লিখে রহিমা

মৃদু স্বরে উত্তর বলে দিচ্ছে নাবিলা, আর উত্তর শুনে খাতায় লিখছে রহিমা। ছবি : কালবেলা
মৃদু স্বরে উত্তর বলে দিচ্ছে নাবিলা, আর উত্তর শুনে খাতায় লিখছে রহিমা। ছবি : কালবেলা

কানের কাছে মৃদু স্বরে প্রশ্নের উত্তর বলে দিচ্ছে নাবিলা, আর খাতায় লিখে দিচ্ছে রহিমা খাতুন নামে অষ্টম শ্রেণির এক শিক্ষার্থী।

মঙ্গলবার (২০ জানুয়ারি) সকালে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয়ের পরীক্ষা কেন্দ্রে এমন দৃশ্য চোখে পড়ে।

খন্দকার নাবিলা তাবাসসুম (১৮) একজন দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী। সে লালমনিরহাট শহরের চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয়ের মানবিক বিভাগ থেকে এবার এসএসসি পরীক্ষা দিচ্ছে।

শ্রুতিলিখন পদ্ধতিতে লালমনিরহাট সরকারি বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় পরীক্ষা কেন্দ্রের ১১২ নম্বর কক্ষে নাবিলা পরীক্ষায় অংশ নিয়েছে। সহযোগী হয়ে অষ্টম শ্রেণির রহিমা খাতুন নাবিলার খাতায় উত্তর লিখে দিচ্ছে।

মঙ্গলবার সকালে পরীক্ষাকেন্দ্রে গিয়ে দেখা যায়, ইংরেজি প্রথম পত্র পরীক্ষার উত্তর কানের কাছে মৃদু স্বরে বলে দিচ্ছে নাবিলা, আর উত্তর শুনে খাতায় লিখছে রহিমা। নাবিলা দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী হওয়ায় নির্ধারিত সময়ের চেয়ে তাকে অতিরিক্ত ২০ মিনিট সময় বেশি দেওয়া হয়েছে। উত্তরপত্র রিভিশন দিয়ে নাবিলা নির্ধারিত সময়ের মধ্যে পরীক্ষাকেন্দ্রের কক্ষে দায়িত্বরত শিক্ষকের কাছে খাতা জমা দেয়।

এদিকে শ্রুতিলিখনের কাজ করতে পেরে বেশ খুশি নাবিলার সহযোগী স্কুলছাত্রী রহিমা। সে লালমনিরহাটের আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ি বহুমুখী উচ্চ বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী।

রহিমা বলে, ‘নাবিলা আপু উত্তর বলে দেন, আমি খাতায় লিখি। আপু এসএসসিতে ভালো রেজাল্ট করলে আমার ভালো লাগবে।’

নাবিলা ১০ বছরের বেশি সময় ধরে বেসরকারি সংস্থা আরডিআরএস বাংলাদেশ পরিচালিত লালমনিরহাট সদরের হাঁড়িভাঙ্গায় অবস্থিত দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পুনর্বাসনকেন্দ্র থেকে পড়াশোনা করছে।

পুনর্বাসনকেন্দ্রের কাউন্সিলর নুরবানু আক্তার বলেন, শুধু পড়াশোনায় নয়, নাবিলা কবিতা আবৃত্তি ও সংগীতচর্চায় বেশ সুনাম অর্জন করেছে।

পরীক্ষার্থী নাবিলা বলেন, ‘পাঁচ বছর বয়সে আমি পুরোপুরি দৃষ্টিশক্তি হারিয়ে ফেলি। পরিবারের সদস্যরা চিকিৎসা করার পরেও চোখের আলো ফিরে পাইনি। পরে আরডিআরএস দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী পুনর্বাসনকেন্দ্রে ভর্তি হয়েছি। আমি উচ্চশিক্ষা গ্রহণ শেষে আমার মায়ের মতো শিক্ষকতা করতে চাই।

লালমনিরহাট চার্চ অব গড উচ্চ বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক শহিদার রহমান বলেন, দৃষ্টিপ্রতিবন্ধী নাবিলা পড়ালেখায় খুবই মনোযোগী। এসএসসিতে সে ভালো ফল করবে বলে আমরা আশাবাদী।

নাবিলার স্কুলশিক্ষক মা খন্দকার ফারজানা আফরিন বলেন, ‘শারীরিক প্রতিবন্ধকতা আমার মেয়ের বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারেনি। সামনে আরও এগিয়ে যেতে চায় নাবিলা। পড়ালেখা করে আমার মতো শিক্ষক হতে চায় সে। আপনারা আমার মেয়ের জন্য দোয়া করবেন।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

রুট ১৩ হাজার রান ছুঁতেই মুখ খুললেন শচীন

‘উপদেষ্টা মাহফুজের ওপর হামলা হয়নি, কনস্যুলেট অফিস ভাঙচুর হয়েছে'

১৫০ টাকায় দেখা যাবে বাংলাদেশ-নেদারল্যান্ডস টি-টোয়েন্টি ম্যাচ

সাব্বিরকে পাঁচ বছরের জন্য নিষেধাজ্ঞার সুপারিশ বিসিবির আকুর

জিয়ার সমাধিতে ডা. সাবরিনার শ্রদ্ধা, যুবদল সভাপতির ক্ষোভ

শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে বিতর্ক, অর্থপাচার বিরোধী অভিযানে চাপ

অভিনেত্রী জাহানারা ভূঁইয়া মারা গেছেন

ঢাকা শিশু হাসপাতাল শাখা ড্যাবের নতুন দায়িত্বে ডা. ফারুক

এনসিপির আরও চার নেতার পদত্যাগ 

হাইকোর্টের বিচারপতি হলেন সারজিসের শ্বশুর লুৎফর রহমান

১০

ডাকসু নির্বাচনে প্রচারণার বিধিমালা প্রকাশ

১১

হাসনাতকে ‌‘ফকিন্নির বাচ্চা’ বললেন রুমিন ফারহানা

১২

বিজিবির কাছে ৫ বাংলাদেশিকে হস্তান্তর করল বিএসএফ

১৩

চুরির অভিযোগ, গণপিটুনিতে যুবক নিহত

১৪

সংবিধানের মূলনীতি থেকে আমরা সরে যাচ্ছি : ড. কামাল হোসেন

১৫

রাকসু নির্বাচনে ভোটাধিকারের দাবিতে নবীন শিক্ষার্থীদের বিক্ষোভ

১৬

চট্টগ্রামের মিষ্টি কারখানায় স্বাস্থ্যঝুঁকি, মধুবন ফুডকে জরিমানা

১৭

আশুলিয়ায় সাবেক ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান গ্রেপ্তার

১৮

জাবির সাবেক সহকারী প্রক্টর জনি রিমান্ডে

১৯

প্রাণনাশের শঙ্কায় ভুগছেন ফজলুর রহমান, চাইলেন নিরাপত্তা

২০
X