নওগাঁর মান্দায় হাট-বাজার উন্নয়ন প্রকল্পে ঘুষ বাণিজ্যের অভিযোগ উঠেছে। অভিযোগকারীরা বলছেন, উপজেলা স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামকে ঘুষ দিলে সহজে কাজ হয়ে যায়; না দিলে তিনি তালবাহানা শুরু করেন। ফাইল আটকে রেখে হয়রানি করেন।
সম্প্রতি ওই প্রকল্পের পাঁচটি কাজের বিল পাস করিয়ে দিতে অভিযুক্ত প্রায় ৮০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছেন বলে ভুক্তভোগীরা দাবি করছেন। এ অভিযোগ উপজেলা প্রশাসনে প্রচার করায় চাঞ্চল্য সৃষ্টি হয়।
জানা যায়, ২০২৩-২৪ অর্থবছরের হাট-বাজার উন্নয়ন খাতের বরাদ্দকৃত অর্থ থেকে গৃহীত প্রকল্পের মাধ্যমে কশব ইউনিয়নের মিঠাপুর বাজারে উন্নয়নমূলক কাজ করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে মিঠাপুর তরকারি বাজারের রাস্তা সংস্কারকরণ, ১ লাখ ৮০ হাজার টাকা ব্যয়ে ড্রেন নির্মাণ, ২ লাখ টাকা ব্যয়ে সেফটিক ট্যাংক ও টিউবওয়েল স্থাপন, ১ লাখ ৪১ হাজার টাকা ব্যয়ে পাকা রাস্তায় ড্রেন নির্মাণ, ৩০ হাজার ৯৭৫ টাকা ব্যয়ে টয়লেট ও ড্রেন পরিষ্কার কাজ করা। এসব প্রকল্পের কাজ শেষে প্রতিটি বিল পাস করতে ২০ থেকে ২৫ হাজার টাকা করে ঘুষ গ্রহণ করেন নজরুল ইসলাম। এমন অভিযোগ করেন প্রকল্পের পিআইসি ও ইউপি সদস্যরা।
ইউপি সদস্য আব্দুল মজিদ অভিযোগ করে বলেন, প্রকল্পের বিল পাস করতে আমার কাছে ৩০ হাজার টাকা দাবি করেন উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলাম। ঘুষের টাকা না দেওয়ায় কয়েক দিন হয়রানি করেছেন। পরে ২৫ হাজার টাকা ঘুষ নিয়ে বিল পাস করেন।
নাম প্রকাশে আরও এক ইউপি সদস্য বলেন, সব কাজের বিলের শতকরা অনুযায়ী টাকা কেটে নেন নজরুল ইসলাম।
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ঠিকাদার জানান, এ ক্যাটাগরির কাজ করার পরেও ঘুষ দিতে হয় তাকে। ঘুষ নেওয়ার মাধ্যমে বিল পাস করে দেওয়া নজরুলের পুরোনো অভ্যাস। এমনকি চলমান কাজ দেখভালের জন্য গেলেও ঘুষ দিতে হয় তাকে। টাকা দিলেই কাজ ফাইনাল, আর না দিলে সমস্যার শেষ নেই। তার এমন কর্মকাণ্ডে অতিষ্ঠ ঠিকাদাররা।
এদিকে কশব ইউনিয়ন পরিষদের (ইউপি) চেয়ারম্যান এস এম ফজলুর রহমান বলেন, প্রতিটি প্রকল্পে ১৫ থেকে ২০ হাজার টাকা ঘুষ নিয়েছে বলে ইউপি সদস্যরা জানিয়েছেন। সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের এমন ঘুষ কর্মকাণ্ডে আমিও অতিষ্ঠ।
অভিযোগের বিষয়ে জানতে উপ-সহকারী প্রকৌশলী নজরুল ইসলামের মুঠোফোনে কল দিলে তিনি তার রিসিভ করেন। কিন্তু সাংবাদিক পরিচয় পেয়ে মোবাইল ফোনের লাইন কেটে দেন। পরবর্তীতে তার মোবাইল ফোনে একাধিকবার কল দিলেও তিনি তা আর রিসিভ করেননি। তাই তার বক্তব্য পাওয়া যায়নি।
এ ব্যাপারে এলজিইডির উপজেলা প্রকৌশলী শাইদুর রহমান বলেন, এখন পর্যন্ত আমার কাছে কেউ কোনো অভিযোগ করেনি এবং বিষয়টি আমার জানা নেই। অভিযোগ পেলে খতিয়ে দেখে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
মন্তব্য করুন