লালমনিরহাট-বুড়িমারী মহাসড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে। এ সড়কে গত ১৭ দিনে সড়কে ৭ জনের প্রাণহানি হয়েছে। লালমনিরহাটের পাটগ্রাম উপজেলার বুড়িমারী স্থলবন্দর বন্দর ঘিরে প্রতিদিন ভারী পণ্যবোঝাই শতশত ট্রাক চলাচল করে। এসব ট্রাক অতিরিক্ত পণ্য নিয়ে চলাচল করায় গতি থাকে নিয়ন্ত্রণহীন, আর এ কারণে প্রতিনিয়ত ঘটছে দুর্ঘটনা।
জানা গেছে, বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে তিস্তা সড়ক সেতুর দূরত্ব ১২০ কিলোমিটার। এক লেনের হওয়ায় ওই সড়কের ওপর মাত্রার চেয়ে অতিরিক্ত চাপ বেড়েছে। নিয়ম অনুযায়ী ট্রাকগুলোয় ১৫ টন পণ্যের অনুমোদন থাকলেও পাথরবোঝাই ট্রাকগুলো প্রায় ৩০ টন পণ্য নিয়ে চলচল করছে। ওভারলোড থাকায় ট্রাকের গতি থাকে নিয়ন্ত্রণহীন, পাশাপাশি অনুমোদনহীন অবৈধ যান ভটভটি, গরুটানা নসিমন, অটোরিকশা ও ইজিবাইক চলাচল করায় সড়ক হয়ে উঠেছে অনিরাপদ। এসব নিয়ন্ত্রণে ট্রাফিক বিভাগের নেই তেমন কার্যকার ভূমিকা। মাঝেমধ্যে ট্রাফিক পুলিশ লোক দেখানো অভিযান চালায় বলে অভিযোগ সাধারণ পথচারীর।
গত ১৭ দিনে (১৫ ফেব্রুয়ারি থেকে ২ মার্চ) বুড়িমারী স্থলবন্দর থেকে তিস্তা সেতু পর্যন্ত মহাসড়কে দুর্ঘটনায় প্রাণ হারিয়েছে ৭ জন। এর মধ্যে আদিতমারী উপজেলার খাতাপাড়া এলাকায় গত ১৫ ফেব্রুয়ারি পাথরবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় ফরিদুল ইসলাম (৪২) নামে যুবকের মৃত্যু হয়। গত ১৮ ফেব্রুয়ারি রাতে পাটগ্রাম উপজেলার চৈতার বাজার এলাকায় শহিদার রহমান (৫৫) নামের ব্যক্তি মোটরসাইকেলের ধাক্কায় মৃত্যুবরণ করেন। গত ১৯ ফেব্রুয়ারি পাটগ্রাম উপজেলার উফারমারা এলাকায় পাথরবোঝাই ট্রাকের ধাক্কায় মোটরসাইকেল চালক আমিনুল রহমান (৩০) নিহত হয়। গত ২৫ ফেব্রুয়ারি শহরের পুলিশ লাইন সংলগ্ন সড়কে পাথরবোকাই ট্রাকে পিষ্ট হয়ে মাদ্রাসার ছাত্র আব্দুল্লাহ নিহত হয়। গত ২৭ ফেব্রুয়ারি আদিতমারী উপজেলার সাপ্টিবাড়ী এলাকায় ট্রাকের ধাক্কায় ট্রলি চালক ফরিদুল (৩৫) নিহত হয়। গত ২৯ ফেব্রুয়ারি কালিগঞ্জ উপজেলার কাকিনায় ট্রাক এবং অটোরিকশার মুখোমুখি সংঘর্ষে মাস্টার্স পরীক্ষার্থী সোহেল রানা (২৫) নিহত হয়। গত ১ মার্চ আদিতমারী উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সের সামনে অটোরিকশা থেকে নামার সময় মোটরসাইকেলের ধাক্কায় নিহত হন মসজিদের ইমাম সোলায়মান আলী (৭০)।
সাংস্কৃতিক জোট লালমনিরহাট জেলা শাখার সভাপতি মজিবর রহমান জানান, তিস্তা সেতু থেকে বুড়িমারী স্থলবন্দরমুখী ১২০ কিলোমিটার সড়কটি এক লেন হওয়ায় যানবাহনের মাত্রাতিরিক্ত চাপ বেড়েছে। এতে সড়কে দুর্ঘটনা বেড়েছে এবং অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যুর সংখ্যাও বৃদ্ধি পেয়েছে।
লালমনিরহাট এসপি সার্কেল মো. আতিকুল ইসলাম জানান, স্থলবন্দর থেকে প্রতিদিন শতশত ট্রাক এ রোডে চলাচল করে। সড়কটি এক লেন হওয়ায় গাড়ি চালকের নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হয় সাধারণ পথচারীরা। সড়কের নিরাপত্তায় জেলা পুলিশ সকল প্রচেষ্টা অব্যাহত রয়েছে।
মন্তব্য করুন