নোয়াখালীর বেগমগঞ্জে প্রেমের ফাঁদে ফেলে অপহরণ করে মুক্তিপণ দাবির ঘটনায় নারীসহ চারজনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। এ সময় অপহৃত যুবক ও তাদের ব্যবহৃত মোটরসাইকেল উদ্ধার করা হয়।
শনিবার (৯ মার্চ) সকাল থেকে দুপুর পর্যন্ত বিশেষ অভিযান পরিচালনা করে জেলার বিভিন্ন স্থান থেকে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়। বিকেলে তাদের চিফ জুডিশিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে।
গ্রেপ্তার হওয়ারা হলেন, সদর উপজেলার চরমটুয়া ইউনিয়নের রামানন্দী গ্রামের হাজী মাওলানা ইয়াছিনের ছেলে আবদুল্লাহ আল মামুন (৩৩), নোয়াখালী পৌরসভার ৫ নম্বর ওয়ার্ডের পূর্ব মহোদরী গ্রামের আবুল বাশারের ছেলে আসাদুজ্জামান সায়েম (৩৬), ধর্মপুর ইউনিয়নের চর দরবেশ গ্রামের আবদুল মালেকের ছেলে মো. সবুজ (২৪) ও লক্ষ্মীপুর জেলার হাসনাবাদ গ্রামের জসিম উদ্দিনের মেয়ে ওয়াসিমা আফরিন নদী (২৮)।
পুলিশ সূত্রে জানা যায়, বেগমগঞ্জ পৌরসভার আলীপুর গ্রামের বাসিন্দা মো. ইলিয়াছ ও লক্ষ্মীপুর জেলার হাসনাবাদ গ্রামের জসিম উদ্দিনের মেয়ে ওয়াসিমা আফরিন নদীর মধ্যে দীর্ঘদিন ধরে প্রেমের সম্পর্ক চলছিল। নদী গত ৫ মার্চ ইলিয়াছকে বেগমগঞ্জ চৌরাস্তায় আসতে বলেন। ইলিয়াছ তার জেলা শহর মাইজদীর বাসায় যাওয়ার জন্য নদীকে নিয়ে সিএনজিচালিত অটোরিকশায় রওনা দেয়।
এ সময় পথ থেকে মামুন, সায়েম ও সবুজ সিএনজিতে ওঠেন। তারা সবাই ইলিয়াছের গলায় ছুরি ধরে চুপ থাকতে বাধ্য করেন। তারপর আসামিরা সবাই ইলিয়াছের বাসায় আসেন এবং দুই লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করেন। মুক্তিপণ দিতে অস্বীকার করলে আসামিরা তাকে মারধর করে জখম করেন।
আসামি মামুন ভুক্তভোগীর ভাইকে ফোন দিয়ে পুলিশ পরিচয় দেন এবং জানান ভুক্তভোগী ইয়াবাসহ হাইওয়ে পুলিশে আটকে আছে। তাকে ছাড়িয়ে নিতে হলে দুই লাখ টাকা দিতে হবে। পরে পুলিশ জানতে পেরে অভিযান চালিয়ে তাকে উদ্ধার করে।
বেগমগঞ্জ মডেল থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. আনোয়ারুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেন। তিনি বলেন, আমরা প্রথমে সবুজকে গ্রেপ্তার করি। সবুজের থেকে তথ্য নিয়ে বাকি তিনজনকে গ্রেপ্তার করি এবং অপহরণের কাজে ব্যবহৃত একটি অটোরিকশা উদ্ধার করি।
আসামিদের প্রাথমিক জিজ্ঞাসাবাদের বরাতে ওসি জানান, অপহরণ চক্রের সদস্যরা দীর্ঘদিন ধরে নারী সদস্যকে দিয়ে বিভিন্ন শ্রেণিপেশার মানুষের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে তুলত। তারপর কৌশলে ডেকে নিয়ে অপহরণের পর মুক্তিপণ আদায় করত। এ বিষয়ে মামলা হয়েছে।
মন্তব্য করুন