দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ১০:২৬ এএম
অনলাইন সংস্করণ

অল্প খরচে বেশি লাভ হওয়ায় গম চাষে ঝুঁকছেন চাষিরা

দেবীগঞ্জ পৌরসদরের ময়নামতির চরের একটি গম ক্ষেত। ছবি : কালবেলা
দেবীগঞ্জ পৌরসদরের ময়নামতির চরের একটি গম ক্ষেত। ছবি : কালবেলা

দেশের সর্ব উত্তরের জেলা পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে অল্প খরচে অধিক লাভজনক হওয়ায় বোরো চাষের পাশাপাশি গম চাষে ঝুঁকছেন এলাকার কৃষকরা।

রোববার (২৪ মার্চ) সরেজমিনে উপজেলার বিভিন্ন এলাকা ঘুরে দেখা যায়, চলতি মৌসুমে দেবীগঞ্জে গমের বাম্পার ফলন হয়েছে। আশানুরূপ ফলন ঘরে তুলতে শেষ সময়ে ব্যস্ত সময় পার করছেন এলাকার গম চাষিরা। নভেম্বরের শুরুর দিকে গমের বীজ বপণ করা হয় এবং মার্চের শেষের দিকে গম কাটা শুরু হয়।

চাষিদের সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, গমে রোগবালাইয়ের আক্রমণ কম হয়। সেচ ও সার কম লা‌গে তাই উৎপাদন ব্যয়ও কম। আবাহাওয়া অনুকূলে থাকলে সঠিক পরিচর্যায় প্রতি বিঘায় ১৫ থেকে ১৭ মন পর্যন্ত গম উৎপাদিত হয়। বাজার ভেদে প্রতি মন কাঁচা গম এক হাজর ৮০০ টাকা থেকে শুরু করে এক হাজার ৯০০ টাকায় বিক্রি হয় এবং প্রতি মন শুকনো গম দুই হাজার ১০০ টাকা থেকে শুরু করে দুই হাজার ২০০ টাকায় বিক্রি হয়। ধানের চে‌য়ে তুলনামূলক গমের দামও ভালো এবং কম খরচে অধিক আয়ের লক্ষ্যে গম আবাদে ঝুঁকছেন এ এলাকার চাষিরা।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের তথ্য অনুযায়ী, চলতি মৌসুমে দেবীগঞ্জ উপজেলার ১০ ইউনিয়ন এবং এক পৌরসভায় মোট এক হাজার ২৯০ হেক্টর জমিতে গমের চাষ হয়েছে। এর মাঝে ৪৪০ হেক্টর জমিতে বারি গম- ৩০, ১৫০ হেক্টর জমিতে বারি গম- ৩২, ৬৯৭ হেক্টর জমিতে বারি গম- ৩৩, ২ হেক্টর জমিতে WMRI- 1 এবং ১ হেক্টর জমিতে WMRI- 2 চাষ হয়েছে। এ ছাড়া গমের চাষ বৃদ্ধির লক্ষ্যে এক হাজার প্রান্তিক কৃষকের মাঝে জনপ্রতি বিভিন্ন জাতের ২০ কেজি গমের বীজ, ১০ কেজি ড্যাপ এবং ১০ কেজি এমওপি সার বিনামূল্যে বিতরণ করা হয়।

উপজেলার পামুলী ইউনিয়নের সরকার পাড়া এলাকার প্রান্তিক কৃষক বিষ্ণু রায় বলেন, গত বছর কৃষি অফিসের পক্ষ বিনামূল্যে সার ও বীজ পেয়ে আমার এক বিঘা ডাঙা জমিতে গম চাষ করি। বাসায় খাওয়া জন্য অর্ধেক রেখে বাকি অর্ধেক বাজারে বিক্রি করি। সব খরচ বাদ দিয়েও ৭/৮ হাজার টাকা লাভ হয়। এ বছর পুনরায় সেখানে গম লাগাই। এখনো গম কাটেনি তবে বাজারে গমের দাম ভালো থাকায় আশা করছি এবারো ভালো দামে বিক্রি করতে পারবো।

পার্শ্ববর্তী দেবীডুবা ইউনিয়নের তাতীপাড়া এলাকার কৃষক মোহিনী বর্মন বলেন, গত কয়েক বছর ধরে গম আবাদ করতেছি‌। ধানের থেকেও গমে লাভ বেশি। এ বছর কৃষি অফিসের প্রণোদনার বীজ ও সার বিনামূল্যে পেয়েছি। জমি চাষ, সেচ এবং শ্রমিক খরচ মিলিয়ে এক বিঘা জমিতে সর্বোচ্চ ৯ হাজার টাকা খরচ হয়েছে। এবার জমিতে ১৭ মন গম হয়েছে যা এক হাজার ৯০০ টাকা দরে ৩২ হাজার টাকায় বিক্রি করি। এতে করে খরচ বাদ দিয়ে বিঘায় প্রায় ২৩ হাজার টাকার মতো লাভ হয়।

এ বিষয়ে উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ মো. নাঈম মোর্শেদ বলেন, বাংলাদেশের ক্রমবর্ধমান জনগোষ্ঠীর পুষ্টি চাহিদা নিশ্চিত এবং কৃষিকে লাভজনক করার জন্য গম চাষে কৃষকদের আগ্রহী করতে কাজ করে যাচ্ছে উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর। এ লক্ষ্যে কৃষকদের প্রশিক্ষণ ও প্রণোদনা প্রদান, সঠিক সময়ে গুণগত মানের বীজ সরবরাহ এবং রোগ বালাই ব্যবস্থাপনা সম্পর্কে নিয়মিত দিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

প্রতিবন্ধী নারীকে ধর্ষণের অভিযোগ, থানায় মামলা

কুষ্টিয়ায় বন্যা পরিস্থিতির ভয়াবহ অবনতি

জুলাই গণঅভ্যুত্থানের প্রাণ ভোমরারা হতাশ হয়েছেন : নুর

দেশে ফিরলেন প্রধান উপদেষ্টা

এবার চট্টগ্রামে সাংবাদিককে গলা টিপে হত্যাচেষ্টা

সাবেক ৩ গভর্নর ও ৬ ডেপুটি গভর্নরের ব্যাংক হিসাব তলব

এনসিপির হয়ে নির্বাচন করব কিনা সিদ্ধান্ত নেইনি : আসিফ মাহমুদ

সবাইকে টেস্ট খেলানো জরুরি নয় : জোরাজুরিতে দেউলিয়ার শঙ্কা

প্রবাসেও আপ বাংলাদেশের কমিটি ঘোষণা 

ইসরায়েল পুড়ছে রেকর্ড তাপমাত্রায়

১০

শ্রমিক কল্যাণ ফাউন্ডেশনকে আর্থিক সহায়তার চেক দিল যমুনা অয়েল

১১

অসহায় পরিবারের দুই শিশুকে চিকিৎসা সহায়তা-অটোরিকশা দিলেন তারেক রহমান

১২

৩০০ আসনে নির্বাচনের পরিকল্পনা করছে গণতন্ত্র মঞ্চ 

১৩

ড্রোন শো পরিচালনার প্রশিক্ষণে চীন যাচ্ছেন ১১ জন

১৪

সামাজিক কাজে অবদান রাখায় নিবন্ধন পেল প্রভাত

১৫

স্বাস্থ্যের ডিজির আশ্বাসে মন গলেনি, নতুন কর্মসূচি ছাত্র-জনতার

১৬

শহীদ মিনারে কাফনের কাপড় পরে বস্তিবাসীদের অবস্থান

১৭

পিআর পদ্ধতিতেই নির্বাচন হতে হবে : চরমোনাইর পীর

১৮

চট্টগ্রামে ১০ লাখ গাছ লাগানোর ঘোষণা মেয়রের

১৯

রাজধানীতে জামায়াতের বিক্ষোভ-সমাবেশ

২০
X