কাপ্তাই (রাঙামাটি) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২৫ মার্চ ২০২৪, ০২:১০ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

কাপ্তাই হ্রদে পানির অভাবে কমে গেছে বিদ্যুৎ উৎপাদন

কমে গেছে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ। ছবি : কালবেলা
কমে গেছে রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ। ছবি : কালবেলা

দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে ও পলিমাটি জমে যাওয়ায় রাঙামাটির কাপ্তাই হ্রদে পানির স্তর কমে গেছে। ফলে পানির অভাবে দেশের একমাত্র কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের উৎপাদন সর্বনিম্ম পর্যায়ে চলে এসেছে। হ্রদে পানির কমে যাওয়ায় একদিকে যেমন বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যাহত হচ্ছে তেমনি হ্রদের ওপর নির্ভরশীল মানুষের ভোগান্তিও বৃদ্ধি পেয়েছে।

বর্তমানে বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচ ইউনিটের মধ্যে মাত্র এক ইউনিট দিয়ে দৈনিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। পানির অভাবে বন্ধ রয়েছে চার ইউনিট। সবগুলো ইউনিট সচল থাকলে ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হয়।

বিদ্যুৎকেন্দ্র সূত্রে জানা গেছে, কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ রুলকার্ভ অনুযায়ী ৯০ ফুট মিন সি লেভেল (এমএসএল) থাকার কথা থাকলেও পানি রয়েছে ৮০ ফুট মিন সি লেভেল। রুলকার্ভের পরিমাপ অনুযায়ী কাপ্তাই হ্রদে ১০ ফুট পানি কম রয়েছে। বিদ্যুৎকেন্দ্রের পাঁচ ইউনিট উৎপাদনের জন্য সক্ষম হলেও পানির অভাবে বিদ্যুৎ উৎপাদন ব্যহত হচ্ছে। ভারী বৃষ্টিপাত না হলে পানি বাড়ার সম্ভাবনা নেই। ফলে পানি স্বল্পতায় সবগুলো ইউনিট চালু করে বিদ্যুৎ উৎপাদন করা সম্ভব হবে না।

কাপ্তাই জলবিদ্যুৎ কেন্দ্রের ব্যবস্থাপক এটিএম আব্দুজ্জাহের বলেন, দীর্ঘদিন বৃষ্টি না হওয়ার কারণে কাপ্তাই হ্রদের পানির স্তর কমে গেছে। বর্তমানে এক ইউনিট দিয়ে দৈনিক ৩০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদন হচ্ছে। তবে সামনে বৃষ্টি হলে এবং হ্রদের পানির পরিমাণ বাড়লে বিদ্যুৎ উৎপাদনও বৃদ্ধি পাবে।

পানি কমে যাওয়ায় নৌ চলাচল ব্যাহত হচ্ছে। হ্রদের সঙ্গে সংশ্লিষ্ট কয়েকটি উপজেলার সঙ্গে নৌপথে যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন হওয়ার আশঙ্কা করছেন স্থানীয়রা। হ্রদের বিভিন্ন স্থানে জেগে ওঠা চরের কারণে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হচ্ছে। বেশকিছু অংশে পলিমাটি ভরাট হওয়ায় দেখা দিয়েছে নাব্যসংকট।

কাপ্তাই হ্রদে ইঞ্জিনচালিত বোট চালিয়ে জীবিকা নির্বাহ করেন মো. সামশুল আলম, রতন দাশসহ অনেকে। বোটচালক সামশুল আলম বলেন, বছরের এই মৌসুমে কাপ্তাই হ্রদে পানির পরিমাণ কমলে আমাদের ভোগান্তি বেড়ে যায়। হ্রদের বিভিন্ন স্থানে ডুবোচরে বোট আটকে যায়। এতে নৌ চলাচল বাধাগ্রস্ত হয়।

তিনি আরও বলেন, বোটের তেল খরচও বেশি লাগে। গন্তব্যে পৌঁছাতে সময়ও লাগে বেশি। এ ছাড়া পাহাড়ের দুর্গম অঞ্চল থেকে নৌযোগে বিভিন্ন কৃষিপণ্য আনতে হয়। চলাচল বিঘ্নিত হলে এই ফসল নষ্ট হয়ে কৃষকের অনেক ক্ষতি হয়। বৃষ্টিপাত না হলে এই ভোগান্তি আরও বাড়বে।

স্থানীয় বাসিন্দা সুমেচিং মারমা বলেন, ভারী বৃষ্টিপাত না হওয়া পর্যন্ত কাপ্তাই হ্রদে পানি বাড়ার কোনো সম্ভাবনা নেই। হ্রদে ড্রেজিং করা প্রয়োজন। এতে হ্রদের গভীরতা বাড়বে। ফলে সমস্যা থেকে কিছুটা সমাধান পাওয়া যাবে।

ষাটের দশকে বিদ্যুৎ উৎপাদনের জন্য কাপ্তাই বাঁধ তৈরি করা হয় নির্মাণ করা হয় দেশের একমাত্র জলবিদ্যুৎ কেন্দ্র। শুরুতে দুই ইউনিট নিয়ে শুরু হলেও বর্তমানে পাঁচটি ইউনিটে প্রতিদিন ২৪০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ উৎপাদনের সক্ষমতা রয়েছে। জ্বালানি ছাড়া কাপ্তাই হ্রদের পানি ব্যবহার করে কেন্দ্রটি দেশের সবচেয়ে কম দামে বিদ্যুৎ উৎপাদন করে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

খালেদা জিয়ার লন্ডন যাওয়ার বিষয়টি পিছিয়ে যাচ্ছে

স্ত্রী নাকফুল না পরলে স্বামীর হায়াত কমে যায়, এই কথাটি কি সঠিক?

ট্রাকচাপায় প্রাণ গেল চাচা-ভাতিজার

শুক্রবারে মারা গেলে কি কবরের আজাব মাফ হয়?

ভালোবাসার বন্ধন

ভারতে শত শত ফ্লাইট বাতিল, ২০ বছরের রেকর্ড

ছুটির দিনেও ঢাকার বাতাস ‘খুব অস্বাস্থ্যকর’

দেশে কত দামে স্বর্ণ বিক্রি হচ্ছে আজ

কেমন থাকবে আজ ঢাকার আবহাওয়া

আসছে তীব্র শৈত্যপ্রবাহ, হতে পারে শিলাবৃষ্টিসহ বজ্রঝড়

১০

চুয়াডাঙ্গায় জেঁকে বসেছে শীত

১১

যুক্তরাষ্ট্রকে তুলাধুনা করলেন পুতিন

১২

খালেদা জিয়াকে বহনকারী এয়ার অ্যাম্বুলেন্সে যেসব সুবিধা আছে

১৩

তেঁতুলিয়ায় বেড়েছে শীতের তীব্রতা

১৪

কলেজছাত্রের মৃত্যুর খবরে হাসপাতাল অবরুদ্ধ ও ভাঙচুর

১৫

ইসরায়েলকে অন্তর্ভুক্তির প্রতিবাদে আন্তর্জাতিক প্রতিযোগিতা বয়কট ৪ দেশের

১৬

রাজধানীতে আজ কোথায় কী

১৭

মধ্যযুগীয় কায়দায় প্রতিবন্ধীকে নির্যাতন

১৮

শুক্রবার রাজধানীর যেসব এলাকার মার্কেট বন্ধ

১৯

৫ ডিসেম্বর : আজকের নামাজের সময়সূচি

২০
X