ছোটবোন নিপার একমাস আগে ইমরানের সঙ্গে বিয়ে হয়েছে। তাদের হাতের মেহেদীও এখন পর্যন্ত মুছে নাই। তাদের ইচ্ছে ছিল বরিশাল থেকে কুয়াকাটা গিয়ে হানিমুন করবে। কিন্তু সেই ইচ্ছে আর পূরণ হলো না। এখন হানিমুনের পরিবর্তে অন্তিম শয়ানে শায়িত হবে।
বুধবার (১৭ এপ্রিল) বিকেলে সদর হাসপাতালে মরদেহের পাশে বিলাপ করতে করতে কথাগুলো বলছিলেন নিপার বোন তরিকা আক্তার।
ঝালকাঠির রাজাপুরের সাংগর গ্রামের একই পরিবারের ছয়জন প্রাইভেটকারে করে বরিশাল যাচ্ছিলেন। গাবখান ব্রিজের টোল প্লাজায় টোল দিচ্ছিলেন চালক। এ সময় সিমেন্টবোঝাই ট্রাক নিয়ন্ত্রণ হারিয়ে পেছন থেকে ধাক্কা দিলে দুমড়েমুচড়ে যায় মাইক্রোবাসটি।
এ সময় গাড়িতে থাকা একই পরিবারের হাসিবুর রহমান (৩২), স্ত্রী নাহিদা আক্তার (২৭) সন্তান তাকিয়া (৪), তাহমিদ (৮ মাস), সদ্য বিবাহিত ইমরান (২৬) ও তার স্ত্রী নিপা (২২) ঘটনাস্থলে নিহত হয়। এ দুর্ঘটনায় আরও আটজনসহ মোট ১৪ জন নিহত হয়েছেন।
আহাজারি করতে করতে তরিকা আক্তার বলেন, দুপুর দেড়টার দিকে সবাইকে নিয়ে খাওয়া-দাওয়া শেষে প্রাইভেটকারে বরিশালে যাচ্ছিল তারা। পরে খবর পাই ট্রাকচাপায় তারা মারা গেছেন। ওরে নাহিদা, ওরে নিপা তোদের ছাড়া আমি কেমনে থাকব। তোদের ছোট ছোট সন্তানদেরও আদর করে দিলাম। এটাই যদি শেষ আদর হবে বুঝতাম তাহলে আরও বেশি করে আদর দিতাম।
এর আগে বুধবার (১৭ এপ্রিল) দুপুর ২টার দিকে ঝালকাঠির সদর উপজেলার গাবখান সেতু টোল প্লাজায় ট্রাক-প্রাইভেটকার ও অটোরিকশার সংঘর্ষে ১৪ জন নিহত হয়েছেন। নিহতদের মধ্যে ৭ জন পুরুষ, ৪ জন নারী ও ৩ জন শিশু রয়েছে। এ ছাড়া আহত হয়েছেন অন্তত ১৫ জন।
দুর্ঘটনার তদন্তে ঝালকাঠির অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) মো. রুহুল আমিনকে প্রধান করে ৪ সদস্যবিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করেছে জেলা প্রশাসন। আগামী পাঁচদিনের মধ্যে কমিটিকে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দিতে নির্দেশ দিয়েছেন জেলা প্রশাসক ফারাহ গুল নিঝুম।
মন্তব্য করুন