দেবীগঞ্জ (পঞ্চগড়) প্রতিনিধি
প্রকাশ : ২১ এপ্রিল ২০২৪, ০৫:৩০ এএম
অনলাইন সংস্করণ

ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে স্বাবলম্বী রাসেল প্রধান 

কৃষি উদ্যোক্তা রাসেল প্রধান। ছবি : কালবেলা
কৃষি উদ্যোক্তা রাসেল প্রধান। ছবি : কালবেলা

পঞ্চগড়ের দেবীগঞ্জে ভার্মি কম্পোস্ট (কেঁচো সার) উৎপাদন করে স্বাবলম্বী হয়েছেন কৃষি উদ্যোক্তা রাসেল প্রধান। তিনি উপজেলার দেবীডুবা ইউনিয়নের সোনাপোতা এলাকার বাসিন্দা। ২০২৩ সালে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের সহযোগিতায় চারটি রিং স্লাব দিয়ে শুরু করেন ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন। ধীরে ধীরে সার উৎপাদনের পরিধি বাড়িয়েছেন। বাড়ির উঠানে টিনের সেড ও দোচালা পলিথিনের ঘরে ৩৭ টি রিং স্থাপন করে বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছেন। প্রতি মাসে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করে রাসেল প্রধান আয় করেন ৩০-৩৫ হাজার টাকা।

সরেজমিনে কৃষি উদ্যোক্তা রাসেল প্রধানের ভার্মি কম্পোস্ট সারের প্লান্ট ঘুরে দেখা যায়, সার তৈরির জন্য স্থাপন করা প্রতিটি সিমেন্টের রিংয়ে ২ থেকে ৩ মণ গোবর, শাকসবজির উচ্ছিষ্ট ও কলাগাছের টুকরার মিশ্রণ করে প্রতিটি রিংকে ১০কেজি কেঁচো ছেড়ে দেয়া হয়। তারপর চটের বস্তা দিয়ে রিংক ঢেকে রাখা হয়। এভাবে এক মাস ঢেকে রাখার পর তৈরি হয় ভার্মি কম্পোস্ট সার।

ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের খরচ এবং লাভের বিষয় জানতে চাইলে রাসেল প্রধান বলেন, রিং স্লাব ও ঘর নির্মাণসহ মোট খরচ হয় প্রায় ৯ হাজার টাকা। পরে চাহিদা বেরে যাওয়ায় আরও ৫০ হাজার টাকা খরচ করে রিং স্ল্যাব তৈরি করেছি। এক মাসে উৎপাদন হয় ৩ টন কেঁচো সার। প্রতি কেজি সার ১২ টাকা দরে বিক্রি করা হয়। পাশাপাশি প্রতি কেজি কেঁচো এক হাজার ২০০ টাকা দরে বিক্রি করি। কেঁচো সার উৎপাদন করে নিজের চাহিদা পূরণ করি। বাড়তি কেঁচো এবং সার বিক্রি করে মাসে ৩০ থেকে ৩৫ হাজার টাকা আয় করা সম্ভব হয়।

উপজেলা কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, দিনাজপুর অঞ্চলে টেকসই কৃষি উন্নয়ন প্রকল্পের আওতায় দেবীগঞ্জ উপজেলায় ২০২৩-২০২৪ রবি মৌসুমে বেশ কিছু কৃষকদের ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন প্রদর্শনী দেওয়া হয়েছে। প্রদর্শনীর আওতায় ঘর নির্মাণের জন্য টিন, খুঁটি, রিং এবং কেঁচো দেওয়া হয়েছে। দেবীগঞ্জ উপজেলায় প্রায় দুই শতাধিক কৃষক ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছেন। এছাড়া ৬ থেকে ৭ জন কৃষক বাণিজ্যিকভাবে ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদন করছেন।

এদিকে রাসেল প্রধানের উৎপাদিত কেঁচো সার স্থানীয় কৃষকদের কাছে দিনদিন জনপ্রিয় হয়ে উঠছে। বিভিন্ন এলাকা থেকে চাষিরা এসে রাসেল প্রধানের বাড়ি থেকে সার কিনে নিয়ে চাষাবাদ করছেন।

দেবীডুবা ইউনিয়নের সোনাপোতা এলাকার কৃষক মো. মাহাবুব আলম জানান, রাসেল প্রধানের ভার্মি কম্পোস্ট সার ফসলে ব্যবহার করে ভালো ফলন পেয়েছি। আমার মতো অনেকেই এখন চাষাবাদে ভার্মি কম্পোস্ট সার ব্যবহার করছেন। এতে রাসায়নিক সারের তুলনায় খরচ কম, উৎপাদন বেশি হয়।

ভার্মি কম্পোস্ট সার উৎপাদনের বিষয়ে দেবীগঞ্জ উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা কৃষিবিদ নাঈম মোর্শেদ বলেন, পরিবেশবান্ধব ভার্মি কম্পোস্ট সার মাটির স্বাস্থ্য রক্ষা ও মাটির উর্বরতা বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখছে। পাশাপাশি রাসায়নিক সারের ব্যবহার কমেছে। ভার্মি কম্পোস্ট সারের উৎপাদন বাড়াতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের পক্ষ থেকে কৃষি উদ্যোক্তাদের সার্বিক সহযোগিতা ও দিক নির্দেশনা প্রদান করা হচ্ছে।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

কেশবপুরে ইউনিয়ন পরিষদে তালা ঝুলিয়ে দিল বিএনপি

০১ জুন : কী ঘটেছিল ইতিহাসের এই দিনে

সিলেটে মাটিচাপা ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

০১ জুন : আজকের নামাজের সময়সূচি

বৈষম্যবিরোধী নেত্রীর ওপর হামলা, ওসি প্রত্যাহার

শহীদ আবু সাইদ, মুগ্ধদের দলীয়করণের চেষ্টা চলছে : ডা. জাহিদ

দুপুরের মধ্যে ঝড় হতে পারে যেসব জেলায়

জাতীয় পার্টি নিষিদ্ধের দাবিতে মশাল মিছিল

টানা বৃষ্টিতে ডুবল সিলেট ওসমানী মেডিকেল

টঙ্গীতে এনিসিপি প্রতিনিধির ওপর হামলা, গ্রেপ্তার ২

১০

নিঝুমদ্বীপে ভেসে আসা ডলফিনের সাথে জেলেদের খুনসুটি

১১

অভয়নগরে সহিংসতায় জড়িতদের বিচার ও ক্ষতিপূরণ দাবি

১২

চাঁদাবাজির অভিযোগে বৈষম্যবিরোধী নেতাদের বিরুদ্ধে মামলা, কমিটি স্থগিত

১৩

সিলেটে টিলা ধসে একই পরিবারের চারজন মাটিচাপা

১৪

জিজ্ঞাসাবাদ শেষে ছেড়ে দেয়া হল বৈষম্যবিরোধী দুই নেতাকে

১৫

‘১৫ বছরের দুর্নীতির কারণে আর্থিক খাতের অবস্থা অত্যন্ত খারাপ’

১৬

ঢামেকে শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের ৪৪তম শাহাদাতবার্ষিকীতে দোয়া মাহফিল

১৭

প্রয়াত মেয়ের স্মরণে এনরিকের চোখভেজা উৎসব

১৮

ইন্টারকে উড়িয়ে ইউরোপের নতুন রাজা পিএসজি

১৯

রংপুরে বৈষম্যবিরোধী দুই নেতাকে সেনাবাহিনীর জিজ্ঞাসাবাদ, ছুটে এলেন সারজিস

২০
X