ফেনীর সোনাগাজীতে শৃঙ্খলা পরিপন্থী কার্যকলাপে জড়িত থাকার অপরাধে চরমজলিশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন সৌরভকে তার স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
চরমজলিশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন সৌরভের বিরুদ্ধে এক প্রবাসীর স্ত্রীর থেকে চাঁদা আদায়ের অভিযোগ উঠায় সংগঠনবহির্ভূত অনৈতিক কর্মকাণ্ডের অভিযোগ এনে গত ২৩ এপ্রিল তাকে কারণ দর্শানো নোটিশ দিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
কারণ দর্শানো নোটিশের জবাব সন্তোষজনক না হওয়ায় রোববার (২৮ এপ্রিল) রাত সাড়ে ৮টার দিকে সংবাদ বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে তাকে স্ব পদ থেকে অব্যাহতি দিয়েছে উপজেলা ছাত্রলীগ।
উপজেলা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহমুদুর রহমান রাসেল ও সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন স্বাক্ষরিত এক সংবাদ বিজ্ঞপ্তিতে বিষয়টি জানা যায়।
উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক মিনহাজ উদ্দিন সাইমুন বলেন, শৃঙ্খলা পরিপন্থী এবং সংগঠনের মর্যাদা ক্ষুণ্ণ হয় এমন কার্যকলাপে জড়িত থাকায় আফাজ উদ্দিন সৌরভকে চরমজলিশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক পদ থেকে অব্যাহতি প্রদান করা হয়েছে। একইসঙ্গে শাহারিয়ার জামান ফাহিম (১নং যুগ্ম-সাধারণ সম্পাদক, চরমজলিশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগ)-কে চরমজলিশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের ভারপ্রাপ্ত সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব প্রদান করা হয়েছে।
জানা যায়, উপজেলার চরমজলিশপুর ইউনিয়নের চান্দলা গ্রামের সৌদি প্রবাসী বেলায়েত হোসেনের ছেলে সাখাওয়াত হোসেন ফাহাদের সঙ্গে একটি মেয়ের প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে। বিষয়টি ফাহাদের মা জানতে পেরে ছেলে ফাহাদকে ওই মেয়ের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে বলেন এবং ফাহাদের মা মতিগঞ্জ ইউনিয়নের ভোয়াগ গ্রামে মেয়ের বাড়িতে গিয়ে তার অভিভাবককে ছেলের সঙ্গে যোগাযোগ বন্ধ করতে অনুরোধ করেন। এ সময় উল্টো মেয়ের পরিবার ছেলের মাকে আটকে রাখে। খবর পেয়ে আফাজ উদ্দিন সৌরভ মতিগঞ্জ গিয়ে ফাহাদ এর মাকে উদ্ধার করে নিয়ে আসে। এ অজুহাত দেখিয়ে ফাহাদের মায়ের ব্যবহত স্বর্ণ স্থানীয় কুঠিরহাট বাজারে এক স্বর্ণ দোকানে বন্ধক রেখে দেড় লাখ টাকা হাতিয়ে নেয়। সম্প্রতি ফাহাদের বাবা প্রবাসী বেলায়েত হোসেন খবর পেয়ে ওই টাকা ফেরত আনতে ফাহাদের মাকে চাপ প্রয়োগ করে।
ফাহাদের মা মনোয়ারা বেগম জানান, সৌরভ নিজে তার বাড়িতে এসে স্বর্ণ নিয়ে তাকে সহ কুঠিরহাট বাজারে গিয়ে এক স্বর্ণ দোকানে স্বর্ণ বন্ধক রেখে এবং এক নিকট আত্মীয় থেকে সংগ্রহ করা দেড় লাখ টাকা নিয়ে যায়। সম্প্রতি আরও ৫০ হাজার টাকা দিতে চাপ প্রয়োগ করে। এতে নিরুপায় হয়ে তিনি বিষয়টি তার পরিবারকে, স্থানীয় মেম্বার ও চেয়ারম্যানকে অবহিত করে।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে চরমজলিশপুর ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আফাজ উদ্দিন সৌরভ বলেন, ফাহাদের মাকে মতিগঞ্জ ইউনিয়নে ওই মেয়ের বাড়িতে আটকে রাখলে বিষয়টি ফাহাদ আমাকে জানায়। পরে আমি গিয়ে স্থানীয় চেয়ারম্যান ও মেম্বারের সঙ্গে কথা বলার পর মতিগঞ্জ ইউনিয়ন পরিষদের সালিশ বৈঠকের কথা বলে ছেলের মাকে নিয়ে আসি। এ জন্য আমি তার কোনো টাকা গ্রহণ করিনি। আমার এলাকার স্থানীয় ইউপি সদস্য মো. রিয়াদ আমার নামে মিথ্যা অপবাদ দিচ্ছে।
মন্তব্য করুন