কক্সবাজারের টেকনাফ এলাকা থেকে অপহরণের শিকার মাদ্রাসা পড়ুয়া তৃতীয় শ্রেণির ছাত্র মো. সাইফকে উদ্ধার করেছে র্যাব। এসময় অপহরণ চক্রের ৫ সদস্যকে গ্রেপ্তার করে। এর আগে ২৮ এপ্রিল অপহরণের ঘটনা ঘটে।
বুধবার (১ মে) উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের নয়াপাড়া শালবাগান এলাকা থেকে শিক্ষার্থীকে উদ্ধার ও অপহরণকারীদের আটকের বিষয়টি দুপুর ১২টায় এক সংবাদ সম্মেলন করে জানায় র্যাব-১৫ কক্সবাজার ব্যাটালিয়নের আওতাধীন টেকনাফ ক্যাম্পের কোম্পানি অধিনায়ক লেফটেন্যান্ট কমান্ডার তানভীর হাসান শিথিল।
উদ্ধার হওয়া শিশু মো. সাইফ টেকনাফ উপজেলার হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার মৃত মোহাম্মদ হোছনের ছেলে। সে স্থানীয় জাদিমুরা রহমানিয়া হোসাইনিয়া মাদ্রাসার নূরানি বিভাগের তৃতীয় শ্রেণীর ছাত্র।
গ্রেপ্তারকৃতরা হলো টেকনাফের হ্নীলা ইউনিয়নের জাদিমুরা এলাকার নুর আলমের ছেলে মো. সাব্বির, একই এলাকার ছৈয়দ হোসেনের ছেলে মো. আব্দুল্লাহ, আবুল কালামের ছেলে আকতার কামাল, নয়াপাড়া নিবন্ধিত রোহিঙ্গা ক্যাম্পের এ-৫ ব্লকের বাসিন্দা আবুল ফয়েজ ওরফে মাঝির ছেলে হাসান বশর ও সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়ার মৃত ঠান্ডা মিয়ার ছেলে মো. সেলিম।
গ্রেপ্তারদের স্বীকারোক্তির বরাতে র্যাব জানায়, স্থানীয় ও রোহিঙ্গা ১২-১৫ জন কম বয়সী কিশোর মিলে একটি কিশোর গ্যাং গড়ে তুলে অপহরণসহ নানা অপরাধ সংঘটিত করে আসছিল। মাদ্রাসা থেকে ক্লাস শেষে ফেরার পথে টাকার লোভ দেখিয়ে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রের সদস্যরা মো. সাইফকে কৌশলে অপহরণ করে নিয়ে যায়।
সংবাদ সম্মেলনে তানভীর হাসান শিথিল বলেন, গত ২৮ এপ্রিল বিকেলে মাদ্রাসা থেকে বাড়ি ফেরার পথে তাকে অপহরণ করা হয়। প্রতিদিনের মতো মাদ্রাসা ছুটি হয়ে রাত হলেও ছেলে বাড়িতে ফিরে না আসায় স্বজনরা খুঁজতে বের হয়। অনেক খোঁজাখুঁজির পরে না পেয়ে বাড়িতে ফিরে আসে।
সোমবার (২৯ এপ্রিল) বিকেলে এ ঘটনায় ওই ছাত্রকে উদ্ধারের জন্য তার মামা টেকনাফ থানায় একটি অভিযোগ দেন। মঙ্গলবার সকালে একটি মোবাইল ফোন থেকে বাড়িতে কল করে সাইফকে পেতে ২০ লাখ টাকা মুক্তিপণ দাবি করা হয়। এরপর থেকে শিশুটিকে উদ্ধারে পুলিশের পাশাপাশি র্যাবও অভিযান শুরু করে।
র্যাবের এ কোম্পানি অধিনায়ক বলেন, গোপন সংবাদের ভিত্তিতে মঙ্গলবার বিকালে টেকনাফের সাবরাং ইউনিয়নের নাজিরপাড়া এলাকায় অভিযান চালায় র্যাব। ওই এলাকার মো. সেলিমের আস্তানা থেকে অপহৃত শিশুকে উদ্ধার করা হয়। এতে পালিয়ে যাওয়ার সময় ধাওয়া দিয়ে অপহরণ ঘটনায় জড়িত ৫ জনকে গ্রেপ্তার করা হয়। গ্রেপ্তারকৃতদের টেকনাফ থানা পুলিশের কাছে হস্তান্তর করা হয়েছে বলে জানান তিনি।
এর আগে গত ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ২৮ এপ্রিল পর্যন্ত টেকনাফের বিভিন্ন এলাকা থেকে ১২১ জনকে অপহরণের ঘটনা ঘটেছে। এর মধ্যে ৬৩ জন স্থানীয় বাসিন্দা, বাকিরা রোহিঙ্গা নাগরিক। অপহৃতদের পরিবারের তথ্য বলছে অপহরণের শিকার ব্যক্তিদের মধ্যে অন্তত ৫৩ জন মুক্তিপণ দিয়ে ছাড়া পেয়েছে।
মন্তব্য করুন