টঙ্গিতে শ্রমিকদের বকেয়া বেতন আদায় করতে গিয়ে নিহত হওয়া শ্রমিক নেতা শহিদুল ইসলাম শহিদ হত্যাকাণ্ড মামলায় ৯ আসামিকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
গ্রেপ্তাররা হলেন, মো. সোহেল ওরফে রিপন, মাজহারুল ইসলাম (৩৫), রাসেল (৩২), আকাশ ওরফে বাবুল (৪৩), রাইসুল ইসলাম ওরফে রাতুল (১৯), জুলাহাস আলী (২৩), সোহেল হাসান ওরফে সোহাগ (২৩), শাহীনুর ইসলাম (২১) ও মো. হানিফ (৫০)।
জানা যায়, সোমবার (১৭ জুলাই) এই চাঞ্চল্যকর হত্যা মামলায় গাজীপুর আদালতে মামলার এজাহারভুক্ত আসামি মো. সোহেল ওরফে রিপন আত্মসমর্পণ করেন। ৯ আসামির মধ্যে চারজন আসামি আদালতে স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দিয়ে হত্যার অপরাধ স্বীকার করেন। আদালতের কাছে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা আসামিদের ১০ মিনের রিমান্ড আবেদন করলে আদালত তিন দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
আরও পড়ুন : টঙ্গীতে শ্রমিক নেতা হত্যা মামলায় আরেক আসামি গ্রেপ্তার
মামলার তদন্ত দলের প্রধান গাজীপুর শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইমরান আহম্মেদ গণমাধ্যমকে বলেন, আসামিদের দেওয়া তথ্যের ভিত্তিতে তথ্য যাচাই-বাছাই করে আমরা ইতোমধ্যে হত্যাকাণ্ডে কারা জড়িত ও হত্যাকাণ্ডের কারণ শনাক্ত করতে পেরেছি। এ ঘটনার পেছনে কোনো ইন্ধন ছিল কি না তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে। এই হত্যা মামলায় ইন্ধনদাতাকেও দ্রুত আইনের আওতায় আনা হবে।
একাধিক সূত্র থেকে জানা যায়, টঙ্গীতে স্থানীয় শ্রমিক নেতাদের জায়গায় গাজীপুর থেকে শ্রমিক নেতা শহিদুল কাজ করতে যাওয়ায় সাংগঠনিক বিরোধ দেখা দেয়। টঙ্গীতে শ্রমিক নেতাদের প্রভাব ও আধিপত্য ধরে রাখতে এই হত্যাকাণ্ড হয়ে থাকতে পারে। আর এই আধিপত্য বিস্তারে বড় কোনো নেতার ইন্ধন থাকতে পারে বলে ধারণা পুলিশের।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের গাজীপুর জেলা শাখার সভাপতি শহিদুল ইসলাম গত ২৫ জুন টঙ্গীর সাতাইশে ‘প্রিন্স জ্যাকার্ড সোয়েটার লিমিটেড’ কারখানায় বকেয়া বেতন আদায়ের জন্য আন্দোলনরত শ্রমিকদের পক্ষে ভূমিকা রাখতে গিয়ে প্রতিপক্ষের হামলায় নিহত হন। শহিদুলের বাড়ি গাজীপুর জেলার শ্রীপুর উপজেলার রাজাবাড়ি ইউনিয়নের মিঠালু গ্রামে।
এ ঘটনায় বাংলাদেশ গার্মেন্টস অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রিয়াল শ্রমিক ফেডারেশনের সভাপতি কল্পনা আক্তার বাদী হয়ে টঙ্গি পশ্চিম থানায় ৬ জনের নাম শনাক্ত করে ও অজ্ঞাতনামা আসামি উল্লেখ করে একটি হত্যা মামলা দায়ের করেন।
মামলার সাথে সাথে এক আসামি গ্রেপ্তার হন। পরবর্তী সময় মামলাটি টঙ্গি পশ্চিম থানা থেকে শিল্প পুলিশে স্থানান্তর করা হয়। ইন্ডাস্ট্রিয়াল পুলিশ-২ গাজীপুর মামলার তদন্তভার পেয়ে মামলাটিকে বিশেষ গুরুত্ব দিতে মামলার তদারক কমিটি গঠন করে। এই কমিটির সভাপতি হলেন শিল্প পুলিশের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার মো. ইমরান আহম্মেদ।
মন্তব্য করুন