টাঙ্গাইলের সখীপুরে ইউপি নির্বাচনে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুর ঘটনার মামলায় ছয়জনকে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ।
বুধবার (১৯ জুলাই) ভোরে উপজেলার হতেয়া-রাজাবাড়ী ইউনিয়নের হতেয়া এলাকায় অভিযান চালিয়ে তাদের গ্রেপ্তার করা হয়।
এর আগে সোমবার (১৭ জুলাই) সখীপুরে ইউপি নির্বাচনকে কেন্দ্র করে পুলিশের গাড়িতে হামলা ও ভাঙচুরের ঘটনা ঘটে।
গ্রেপ্তাররা হলেন আবদুল বারেক (৬০), রনি মোল্লা (২১), আলহাজ মিয়া (২৩), সাইফুল ইসলাম (২৬), নাহিদ মিয়া (২০) ও সুজন আহমেদ (২৪)। তাদের সবার বাড়ি হতেয়া গ্রামে।
এ ঘটনায় বুধবার সকালে মির্জাপুর থানার বাঁশতৈল ফাঁড়ির সহকারী উপপরিদর্শক মো. নেছার উদ্দিন বাদী হয়ে গ্রেপ্তার ছয়জনসহ ১৫ জনের নাম উল্লেখ ও ৫০ থেকে ৬০ জনকে অজ্ঞাত আসামি করে সখীপুর থানায় মামলা করেন। সহিংসতার পর থেকেই পুরুষশূন্য হয়ে পড়েছে গ্রামটি।
আরও পড়ুন : ফেনীতে বিএনপির দুই হাজার নেতাকর্মীর বিরুদ্ধে মামলা
সরেজমিনে দেখা যায়, সংঘর্ষের পর থেকে গ্রামের বাসিন্দারা গ্রেফতার আতঙ্কে বসতভিটা ছেড়ে পালিয়েছেন। দিনের বেলায় কয়েকজন বৃদ্ধ পুরুষকে দেখা গেলেও রাতে সে সংখ্যা নেমে আসে শূন্যের কোঠায়। বর্তমানে গ্রামের বেশিরভাগ বাড়িতে নারী ও শিশুরাই অবস্থান করছেন। তাদের চোখেমুখেও রয়েছে আতঙ্কের ছাপ। এলাকাজুড়ে থমথমে পরিবেশ বিরাজ করছে। নারীরাও গ্রেপ্তার আতঙ্কে দিন কাটাচ্ছেন।
পুলিশ ও স্থানীয় সূত্র জানায়, গত ১৭ জুলাই সখীপুরের চারটি ইউনিয়ন পরিষদে (ইউপি) নির্বাচন অনুষ্ঠিত হয়। হতেয়া ভোটকেন্দ্রের ফল ঘোষণার পর পরাজিত দুই সদস্য প্রার্থী পুনরায় ভোটগণনার অনুরোধ করেন। প্রিসাইডিং কর্মকর্তা রাজি না হওয়ায় তাদের লোকজন প্রিসাইডিং কর্মকর্তার কক্ষে হামলা চালানোর চেষ্টা করেন। এ ঘটনায় স্থানীয় মাসুদ রানা নামের এক সাংবাদিক ঘটনার ভিডিও করলে ওই সাংবাদিককে বেধড়ক মারধর করে বিক্ষোভকারীরা। পুলিশ বাধা দিতে গেলে বিক্ষোভকারীরা পুলিশের ওপর চড়াও হয়। খবর পেয়ে নির্বাচনে দায়িত্বরত পুলিশের ৪ থেকে ৫টি গাড়ি এসে নির্বাচনের ব্যালটসহ সরঞ্জাম নিয়ে বের হলে ইউপি নির্বাচনে পরাজিত তিন সদস্য প্রার্থীর লোকজন গাড়িতে বাধা দেয় এবং হামলা চালিয়ে ভাঙচুর করে।
মামলার তদন্ত কর্মকর্তা ও থানার উপপরিদর্শক মো. নজরুল ইসলাম জানান, অভিযান চালিয়ে ছয়জনকে গ্রেপ্তার করে টাঙ্গাইল আদালতের মাধ্যমে কারাগারে পাঠানো হয়েছে। বাকিদের ধরতে অভিযান অব্যাহত রয়েছে।
ঘটনার ৩ দিন পর মামলার বিষয়ে জানতে চাইলে সখীপুর থানার ওসি রেজাউল করিম বলেন, আসামিদের নাম ঠিকানা নিশ্চিতকরণ, আহত পুলিশ সদস্যদের চিকিৎসা দেওয়া ও ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের অনুমতির জন্য মামলা নিতে দেরি হয়েছে। এ ঘটনায় অপরাধীদের ধরতে পুলিশের অভিযান অব্যাহত থাকবে।
মন্তব্য করুন