কুমিল্লায় স্ত্রীকে হত্যার দায়ে মো. মোজাম্মেল হোসেন রাজু নামে এক ব্যক্তির মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। বৃহস্পতিবার (২৩ মে) দুপুরে কুমিল্লার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ তৃতীয় আদালতের বিচারক রোজিনা খান এ রায় দেন।
দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মোজাম্মেল হোসেন রাজু (২৫) কুমিল্লা চৌদ্দগ্রাম উপজেলার শাটিষক গ্রামের নুরুন্নবী প্রকাশ নুর আলমের ছেলে। কুমিল্লার অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর (পিপি) অ্যাডভোকেট আমিনুল ইসলাম বিষয়টি নিশ্চিত করেছেন। রায় ঘোষণাকালে দণ্ডপ্রাপ্ত আসামি মো. মোজাম্মেল হোসেন রাজু আদালত কাঠগড়ায় অনুপস্থিত ছিলেন।
মামলার বিবরণে জানা যায়, মোজাম্মেল হোসেন রাজুর সঙ্গে নাঙ্গলকোট উপজেলার পূর্ব দৈয়ারা এলাকার মোবারক হোসেনের মেয়ে খালেদা আক্তারের প্রেমের বিয়ে হয়। তাদের দাম্পত্য জীবনে মীম নামের ৩ বছর বয়সী একটি কন্যা সন্তান রয়েছে।
বিয়ের পর হতেই ভিকটিমের স্বামী মো. মোজাম্মেল হোসেন রাজু বেকার থাকায় খালেদা আক্তার তার শিশু সন্তান মীমকে নিয়ে বাবার বাড়ি থাকতো। ২০১৮ সালের ২ নভেম্বর ভিকটিম তার শ্বশুরবাড়ি বেড়াতে আসে।পরদিন ভোরে স্ত্রীকে তার কাপড় ধুয়ে দিতে বলেন। এ নিয়ে কথা কাটাকাটির একপর্যায়ে গলায় ওড়না পেঁচিয়ে খালেদাকে শ্বাসরোধে হত্যা করেন রাজু। লাশ পুকুর ঘাটের কাছের ফেলে রেখে শ্বশুরবাড়ি থেকে দ্রুত পালিয়ে যায়। পরে পুকুর ঘাটে মরদেহ পড়ে থাকতে দেখেন স্বজনরা। এ ঘটনায় খালেদার বাবা মো. মোবারক হোসেন বাদী রাজুকে (২৫) আসামি করে দণ্ডবিধির ৩০২ ধারার বিধানমতে নাঙ্গলকোট থানায় একটি হত্যা মামলা দায়ের করে। মামলার তদন্তকারী কর্মকর্তা এসআই মো. সোহেল রানা আসামি রাজুকে গ্রেপ্তার করে আদালতে সোপর্দ করলে তিনি দোষ স্বীকারোক্তিমূলক জবানবন্দি দেন।
পরে ঘটনার মূল রহস্য উদঘাটন করে আসামির বিরুদ্ধে উঠা অভিযোগ প্রাথমিকভাবে প্রমাণিত হওয়ায় ২০১৯ সালের ৩০ জুন সংশ্লিষ্ট ধারায় আদালতে অভিযোগপত্র দাখিল করেন। তারপর মামলাটি বিচারে আসলে আসামির বিরুদ্ধে সংশ্লিষ্ট ধারায় অভিযোগ গঠনক্রমে রাষ্ট্রপক্ষে ১৩ সাক্ষীর সাক্ষ্যগ্রহণ শেষে যুক্তিতর্ক শুনানি শেষে আসামি মো. মোজাম্মেল হোসেন রাজুর বিরুদ্ধে আনা অভিযোগ প্রমাণিত হওয়ায় তাকে মৃত্যুদণ্ড দেন।
এ রায়ে সন্তোষ প্রকাশ করে রাষ্ট্রপক্ষের আইনজীবী অতিরিক্ত পিপি অ্যাডভোকেট মো. আমিনুল ইসলাম ও অতিরিক্ত পিপি অ্যাড. মো. নুরুল ইসলাম বলেন, আমরা আশা করছি উচ্চ আদালত উক্ত রায় বহাল রেখে দ্রুত বাস্তবায়ন করবেন।
মন্তব্য করুন