সাতক্ষীরার আশাশুনিতে ঘূর্ণিঝড় রিমালের তাণ্ডবে নদীভাঙনের হাত থেকে রক্ষা পেলেও উড়ে গেছে উপজেলার ২৫৩টি পরিবারের বসতঘর ও ২৪টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিনের চাল। তবে কোনো হতাহতের খবর পাওয়া যায়নি।
এ ছাড়া সর্বশেষ তথ্য অনুযায়ী, ঝড়ের তাণ্ডবে বৈদ্যুতিক খুঁটি ভেঙেছে ১১টি, বেঁকে গেছে ২৭টি, তার ছিঁড়ে গেছে ৮১টি স্পটে, ক্রস ওয়ান ভেঙেছে ১৫টি, ট্রান্সমিটার নষ্ট হয়েছে ১৩টি ও ভেঙে পড়েছে ২০৩টি মিটার।
আশাশুনি পল্লী বিদ্যুতের এজিএম লিটন মণ্ডল বলেন, ঝড়ের কবলে বিদ্যুৎ বিভাগের ব্যাপক ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। উপজেলায় প্রত্যেক অঞ্চলে লাইন চালু করতে ঠিকাদার ও অফিসের প্রায় শতাধিক শ্রমিক রাত দিন কাজ করে যাচ্ছে। তবে আরও দুই দিন অপেক্ষা করতে হতে পারে।
পানি উন্নয়ন বোর্ডের সেকশন অফিসার সুমন আলীর দেওয়া প্রাথমিক তথ্য অনুযায়ী, ঘূর্ণিঝড় রিমালের জলোচ্ছ্বাসের তাণ্ডবে উপজেলার প্রায় ২০ কিমি বেড়িবাঁধ ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।
উপজেলা শিক্ষা অফিসার স্বপন বর্মন জানান, ঝড়ে কালকি, খাজরাসহ বিভিন্ন স্থানে মোট ৮টি শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের টিনের চাল উড়ে গেছে।
মাধ্যমিক শিক্ষা অফিসার আতিয়ার রহমান জানান, ঝড়ে ৯টি মাদ্রাসা ও ৭টি মাধ্যমিক বিদ্যালয়ের টিনের চাল উড়ে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানের শিক্ষা কার্যক্রম আপাতত বন্ধ রাখতে বলা হয়েছে।
প্রকল্প বাস্তবায়ন কর্মকর্তা মো. সোহাগ খান জানান, ঝড়ে ৪০টি কাঁচা ঘর সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে ও ২১৩টি ঘর আংশিক ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে বলে প্রাথমিকভাবে জানা গেছে।
এদিকে মঙ্গলবার (২৮ মে) সকালে আশাশুনি উপজেলার বিভিন্ন ক্ষতিগ্রস্ত এলাকা পরিদর্শন করেছেন জেলা প্রশাসক মোহাম্মদ হুমায়ুন কবির।
তিনি আশাশুনি সদরের দয়ারঘাট বেড়িবাঁধ, শ্রীকলস, তুয়ারডাঙ্গা আশ্রয়ণ প্রকল্প, প্রতাপনগরের চাকলা বেড়িবাঁধসহ বিভিন্ন এলাকা পরিদর্শন করেন। চাকলায় ২০০ ক্ষতিগ্রস্ত পরিবারের মাঝে ১০ কেজি করে চাল বিতরণ করা হয়েছে। এ ছাড়া ২৭ টন চাল ও ৩ লাখ ৫০ হাজার টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
পরিদর্শনকালে উপস্থিত ছিলেন, উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা মো. রনি আলম নূর, সাতক্ষীরা পানি উন্নয়ন বোর্ড-২ এর নির্বাহী প্রকৌশলী মনিরুল ইসলাম, ওসি বিশ্বজিৎ কুমার, এসডিই রাশিদুল ইসলাম, আশাশুনি সদর ইউপি চেয়ারম্যান হোসেনুজ্জামান হোসেন, আনুলিয়া ইউপি চেয়ারম্যান রহুল কুদ্দুস, প্রতাপনগর ইউপি চেয়ারম্যান হাজি আবু দাউদ, পিআইও মো. সোহাগ খান, এসও মমিনুল হক প্রমুখ।
মন্তব্য করুন