প্রাথমিক বিদ্যালয়ের পুরোনো লোহার বেঞ্চ, জানালার গ্রিল, টিউবওয়েল, পরিত্যক্ত জিনিসপত্রসহ মূল্যবান আসবাবপত্র গোপনে বিক্রি করে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে প্রধান শিক্ষকের বিরুদ্ধে।
ঘটনাটি ঘটেছে কিশোরগঞ্জের হোসেনপুর উপজেলার ৪৬নং উত্তর পুমদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ে।
এ ঘটনায় স্থানীয় অভিভাবক এবং এলাকাবাসীর মধ্যে বিরূপ প্রতিক্রিয়ার সৃষ্টি হয়েছে। প্রধান শিক্ষকের এমন অনৈতিক কর্মকাণ্ডে ক্ষুব্ধ হয়ে স্থানীয় এলাকাবাসী জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারের কাছে লিখিত অভিযোগ দায়ের করে জরুরি প্রতিকার দাবি করেছেন।
অভিযোগ সূত্রে জানা যায়, হোসেনপুর উপজেলার ৪৬নং উত্তর পুমদী সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের নতুন ভবন নির্মাণের সময় পুরোনো ভবন ভেঙে ফেলার কারণে শিক্ষার্থীদের পাঠদানের সুবিধার্থে ঢেউটিন দিয়ে ক্লাসরুম তৈরি করা হয়। পরে নতুন ভবনের কাজ শেষ হওয়ায় টিনের তৈরি কক্ষ পরিত্যক্ত হয়ে পড়ে। এ অবস্থায় বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক মোছা. মাহমুদা খাতুন গোপনে ও সম্পূর্ণ বিধি বহির্ভূতভাবে ওইসব টিন, টিউবওয়েলসহ পরিত্যক্ত মালামাল বিক্রি করে দেন।
বিষয়টি জানাজানি হলে প্রধান শিক্ষক নিজেকে বাঁচাতে এবং ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে দেখানোর জন্য স্থানীয় ঢেউটিন ক্রেতা ও ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করে রাতারাতি কিছু টিন স্কুলের আঙ্গিনায় নিয়ে আসেন।
এ ব্যাপারে স্থানীয় ভাঙাড়ি ব্যবসায়ী নজরুল ইসলামের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তিনি জানান, ১২ হাজার টাকায় তিনি এসব পুরাতন টিন প্রধান শিক্ষকের কাছ থেকে কিনেছিলেন। তিনি এগুলো তার ঘরের চালায় লাগিয়েছিলেন। পরে, এ ব্যাপারে স্থানীয় এলাকাবাসীর অভিযোগের খবর পেয়ে প্রধান শিক্ষক আবার এগুলো তার কাছ থেকে ফেরত এনেছেন।
স্থানীয় বাসিন্দা গোলাম কিবরিয়া জানান, পুরোনো স্কুলের বেড়ার সকল টিন তিনি বিক্রি করেছেন। এ ছাড়া সেখানে কিছু বেঞ্চ ছিল। সেগুলোও উধাও। কোনো টেন্ডার ও অ্যাকশন ছাড়াই তিনি এগুলো বিক্রি করেছেন।
অভিযু্ক্ত প্রধান শিক্ষক মোছা. মাহমুদা খাতুনের সঙ্গে যোগাযোগ করা হলে তার বিরুদ্ধে আনীত সকল অভিযোগ অস্বীকার করে জানান, এগুলো মিথ্যা ও বানোয়াট। এটি একটি বিশেষ মহলের ষড়যন্ত্র। তিনি কোনো অনিয়মের সঙ্গে কখনোই জড়িত নয়।
এ ব্যাপারে উপজেলা শিক্ষা অফিসার মো. নুরুল ইসলাম জানান, এ বিষয়ে জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিস থেকে তদন্তের নির্দেশনা এসেছে। এ ব্যাপারে তদন্ত চলমান আছে। তদন্ত শেষে রিপোর্ট জমা দেওয়া হবে।
জেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসার মজিব আলম জানান, স্থানীয় এলাকাবাসীর এ সংক্রান্ত একটি লিখিত অভিযোগ পেয়েছি। এ ব্যাপারে হোসেনপুর উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত রিপোর্ট জমা দিতে বলা হয়েছে। তদন্ত সাপেক্ষে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দেন তিনি।
হোসেনপুর উপজেলা নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) অনিন্দ্য মন্ডল জানান, বিষয়টি তিনি অবগত আছেন। উপজেলা প্রাথমিক শিক্ষা অফিসারকে তদন্ত রিপোর্ট প্রস্তুত করে অবগত করার জন্য বলা হয়েছে বলেও জানান তিনি।
মন্তব্য করুন