কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৯ জুন ২০২৪, ১০:০৪ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

তরুণদের কথায় ওঠে এলো মাদকের ভয়াবহ ছোবলের গল্প

আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্রের সংবাদ সম্মেলন। ছবি : কালবেলা
আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্রের সংবাদ সম্মেলন। ছবি : কালবেলা

দেশে মাদকের বিস্তৃতি ভয়াবহ রূপ নিয়েছে। মাদকাসক্তদের শীর্ষে তরুণ সমাজ। সব মিলিয়ে, সর্বনাশা মাদকের মরণ ছোবলে আক্রান্ত তরুণ ও যুবসমাজ আজ ভয়াবহ বিপর্যয়ের মুখে। আক্রান্তদের মধ্যে শিক্ষিত ও বিশ্ববিদ্যালয়পড়ুয়া প্রায় ৩০ ভাগ তরুণ রয়েছে। গাঁজা, ইয়াবা ও ফেন্সিডিলে আসক্ত এদের প্রত্যেকেই। নেশার কারণে একপর্যায়ে তারা শিক্ষা থেকে ছিটকে গিয়ে অনিশ্চিত জীবনের দিকে যাচ্ছে।

রোববার (৯ জুন) মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরের আলমপুরে অবস্থিত আন্তর্জাতিক মানের স্পেশালাইজড মাদকাসক্তি ও মানসিক হাসপাতাল আহ্ছানিয়া হেনা আহমেদ মনোযত্ন কেন্দ্রে এক সংবাদ সম্মেলনে এসব তথ্য তুলে ধরা হয়েছে।

এতে বলা হয়েছে, শিক্ষাজীবনে বেশিরভাগ তরুণ মাদকের অন্ধকারে পা রাখছে। এর নেপথ্যে হতাশা, পারিবারিক নানা সংকট, মতবিরোধসহ প্রেম সংক্রান্ত ঘটনা।

সংবাদ সম্মেলনে আক্রান্তদের কথায় ওঠে এলো অন্ধকারে পা বাড়ানোর করুন গল্প। কীভাবে একটি সম্ভাবনাময় জীবন দিন দিন মাদকের ছোবলে থেমে যেতে পারে, সে কথাই কান্নাজড়িত কণ্ঠে জানিয়েছেন তারা।

সংবাদ সম্মেলনে বিস্তারিত তথ্য তুলে ধরেন, কেন্দ্রটির ম্যানেজার দীপক হাসদাক এবং সিনিয়র কাউন্সিলর আবু হাসান মন্ডল।

এ সময় প্রতিবেদনে বলা হয়, ২০২১ সালের ৯ ফেব্রুয়ারি এ কেন্দ্রটির যাত্রা শুরু হয়। তবে, ২০২৩ সালের ৮ জুলাই স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান এই কেন্দ্রের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন। ২০২১ সাল থেকে এখানে ১০৮ জন রোগী চিকিৎসা নিয়েছেন। যাদের মধ্যে প্রায় ৮০ ভাগই তরুণ। চিকিৎসা থেকে সুস্থতার হার প্রায় ৬৫ ভাগ। ৩৫ ভাগের বেশি আবারও মাদকে আসক্ত হয়। বর্তমানে এখানে ২২ জন চিকিৎসাধীন রয়েছে।

এ সময় কেন্দ্রে চিকিৎসারত দুজন রোগী তাদের মাদকনির্ভরশীল জীবন ও চিকিৎসারত জীবন সম্পর্কে অনুভূতি প্রকাশ করেন।

তাদের একজন রাজধানীর স্বনামধন্য ইউনিভার্সিটির ছাত্র স্বাধীন (ছন্দনাম)। বয়স ২৫। ছোটবেলা থেকে প্রচণ্ড কৌতূহলী সে। এক সময় পারিবারিক ধর্মীয় মূল্যেবোধের সঙ্গে চর্চার একটা মতপার্থক্য দেখা দেয়। মূলত বাবার সঙ্গেই এ নিয়ে দূরত্বের সৃষ্টি। একপর্যায়ে সে ঘরবিমুখ হয়ে পড়ে এবং অসৎ বন্ধুদের সঙ্গে মেলামেশা শুরু করে। ফলস্বরূপ তিনি প্রথমে গাঁজা ও পরে মরফিনের প্রতি ভীষণভাবে আসক্ত হন। ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে না পারার হতাশা থেকে গাজায় আসক্তি বাড়তে থাকে। তবে তিনি অন্য একটি পাবলিক বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতিতে ভর্তি হন। তার ভালো লাগার বিষয় ছিল সংগীত। বাবার পক্ষ থেকে এ নিয়ে বাধা দেওয়ায় দিন দিন তার মাদকাসক্তি বাড়তে থাকে। একপর্যায়ে প্রেমঘটিত বিচ্ছেদ তাকে সার্বক্ষণিক মাদকাসক্ত করে তুলে।

কেন্দ্রটির বিশেষ সুবিধা হচ্ছে, কেন্দ্রের সঙ্গেই অবস্থিত হেনা আহমেদ হাসপাতাল থেকে কেন্দ্রে চিকিৎসারত মাদকনির্ভরশীল ও মানসিক রোগীদের প্রাথমিক ও জরুরি স্বাস্থ্যসেবা প্রদান করা হয়।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

একাত্তরের ইস্যুর সমাধান চাইল এনসিপি

রাজধানীতে তামাকের বিরুদ্ধে ‘ইয়ুথ মার্চ’

বুড়িগঙ্গা নদী থেকে নারী-শিশুসহ ৪ জনের মরদেহ উদ্ধার

ত্রিবার্ষিক সম্মেলন / আবারো জামালপুর জেলা বিএনপির নেতৃত্বে শামীম-মামুন

দাবি আদায় ছাড়া ঘরে না ফেরার ঘোষণা মুক্তিযোদ্ধা পরিবার ও বস্তিবাসীর

লিডসের বিরুদ্ধে আর্সেনালের গোল উৎসব

আউটসোর্সিং কর্মচারীদের ন্যায্য দাবি উপেক্ষিত: জোনায়েদ সাকি

এনসিপির কর্মকাণ্ডে ফিরছেন সারোয়ার তুষার

যৌথ বাহিনীর অভিযানে পিস্তলসহ যুবক গ্রেপ্তার 

সাংবাদিকের বাড়িতে চুরি, স্বর্ণালংকারসহ ৫ লাখ টাকার ক্ষতি

১০

৪৫ বছর ভাত না খেয়েও সুস্থ ও সবল বিপ্লব

১১

চেতনানাশক খাইয়ে দুধর্ষ ডাকাতি

১২

রংপুর বিভাগের ৩৩ আসনে খেলাফত মজলিসের প্রার্থী ঘোষণা

১৩

প্রার্থিতা প্রত্যাহার নিয়ে ছাত্রদলের নির্দেশনা, না মানলে ব্যবস্থা

১৪

নারী শিক্ষার্থীকে অনৈতিক প্রস্তাব দিয়ে চাকরি খোয়ালেন বেরোবি সমন্বয়ক

১৫

হাওর ও চরাঞ্চলের শিক্ষক বদলির তদবির আসে ওপর থেকে : গণশিক্ষা উপদেষ্টা

১৬

জয় স্যুটকেস ভরে টাকা নিয়ে গেছে : সোহেল

১৭

২৫ বছর ধরে বাঁশির মায়ায় আটকে আছে শফিকুলের জীবন

১৮

একাত্তরেও আ.লীগ পালিয়েছে, এবারও পালিয়ে গেছে : টুকু

১৯

একাদশে ভর্তির দ্বিতীয় ধাপের আবেদন শুরু, শেষ হচ্ছে কবে

২০
X