সুনামগঞ্জ শহরের এক বখাটের সঙ্গে প্রেমের সম্পর্কে জড়িয়ে পড়েন এক কলেজছাত্রী। অতঃপর ওই বখাটে তাকে ফুসলিয়ে হোটেলে নিয়ে অন্তরঙ্গ মুহূর্তের ছবি ও ভিডিও ধারণ করে। পরে এটি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় থানায় একটি পর্নোগ্রাফির মামলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (২৫ জুন) সকালে পর্নোগ্রাফির শিকার মেয়েটি ৩ জনকে আসামি করে সুনামগঞ্জ সদর থানায় মামলা দায়ের করে।
অভিযুক্ত ওই বখাটের নাম জাহানুরের (২৮)। তিনি সদর উপজেলার শান্তিগঞ্জের জয়সিদ্ধি গ্রামের শামছুন নূরের ছেলে।
অপর দুই আসামিরা হলো, জাহানুরের বন্ধু- দেওয়ান নগর গ্রামের ইয়াদ আলীর ছেলে শাহাব উদ্দিন এবং দেওয়াননগর গ্রামের মোক্তার আলীর ছেলে লাল মিয়া। মামলার পর শাহাব উদ্দিনকে আটক করে পুলিশ।
ভুক্তভোগী ওই শিক্ষার্থী স্থানীয় একটি কলেজের এইচএসসি পরীক্ষার্থী।
মামলা থেকে জানা যায়, জাহানুরের সঙ্গে তিন মাস আগে মোবাইল ফোনে পরিচয় হয় ভুক্তভোগীর। কথা বলতে বলতে প্রেমের সম্পর্ক গড়ে ওঠে দুজনের। একপর্যায়ে জাহানুর বিয়ের প্রস্তাব দেয়। সামনে এইচএসসি পরীক্ষা থাকায় প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে ভুক্তভোগী মেয়েটি। তাতে জাহানুর ক্ষিপ্ত হয় এবং তার ক্ষতি করার নানা ফন্দি করতে থাকে। গত ৯ জুন তাকে ফুসলিয়ে শহরের পুরাতন বাসস্ট্যান্ডের একটি হোটেলের দ্বিতীয় তলায় কথা বলার জন্য নিয়ে যায় সে। কথা বলার একপর্যায়ে জাহানুর তার সঙ্গে ঘনিষ্ঠ হয়। ওই সময়ের কিছু ছবি ও ভিডিও ধারণ করে রাখে সে। পরদিন জাহানুর ভুক্তভোগীর কুয়েত প্রবাসী ভাইকে ও দেশে থাকা আরেক ভাইকে ফোন করে বিয়ের প্রস্তাব দেয়। তারা বিয়ের প্রস্তাব নাকচ করে দেন। পরক্ষণেই ভুক্তভোগীর সঙ্গে তোলা ভিডিও ও ছবি ভাইদের পাঠিয়ে হুমকি দেওয়া শুরু করে। বিয়েতে রাজি না হলে এই ভিডিও এবং ছবি ইন্টারনেটে ছড়িয়ে দেবে বলে ফোন করে জানায়। লাল মিয়া জানায়, এসব ছবি ও ভিডিও তার মোবাইলে এবং আরেক বন্ধু শাহাব উদ্দিনকে পাঠিয়েছে জাহানুর। বিয়েতে রাজি না হলে এই ছবি তারা ছড়িয়ে দেবে।
পরে এই ছবি ও ভিডিও তারা মেয়েটির আত্মীয়-স্বজনসহ এলাকার অনেকের কাছে ছড়িয়ে দেয়। এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মানসিকভাবে বিপর্যস্ত হয়ে পড়েছে এবং তার পরিবারের সামাজিক মর্যাদাহানি ঘটেছে বলে মামলায় উল্লেখ করে ভুক্তভোগী।
সুনামগঞ্জ সদর থানার ওসি খালেদ চৌধুরী জানান, এ ঘটনায় তিনজনকে আসামি করে পর্নোগ্রাফি নিয়ন্ত্রণ আইনে মামলা হয়েছে। আসামি শাহাবুদ্দিনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। দুপুরে আদালতে সোপর্দ করার পর আদালত তাকে জেলহাজতে পাঠিয়েছেন।
মন্তব্য করুন