বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার মামলায় একাধিকবার রিমান্ড শেষে এবার লাইসেন্স বাতিলকৃত অবৈধ অস্ত্রের খোঁজে সাবেক আইনমন্ত্রী আনিসুল হককে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত।
সোমবার (৭ জুলাই) শুনানি শেষে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মিনহাজুর রহমানের আদালত এ আদেশ দেন।
এদিন আনিসুল হককে কারাগার থেকে আদালতে হাজির করে পুলিশ। এরপর অস্ত্র আইনের মামলায় সুষ্ঠু তদন্তের জন্য তার ৫ দিনের রিমান্ড আবেদন করেন বনানী থানার পুলিশ উপ-পরিদর্শক ইয়াদুল হক। এ সময় আসামিপক্ষ পক্ষ থেকে রিমান্ডের বিরোধিতা করা হয়। রাষ্ট্রপক্ষ থেকে রিমান্ডের জোর দাবি জানানো হয়। শুনানি শেষে বিচারক আসামিকে ২ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন। আগামী ৯ জুলাই আনিসুল হককে এ রিমান্ডের জন্য কারাগার থেকে বনানী থানায় নেওয়া হবে।
বিষয়টি কালবেলাকে নিশ্চিত করেছেন আদালতে বনানী থানার সাধারণ নিবন্ধন শাখার কর্মকর্তা উপপরিদর্শক মোকতার হোসেন।
এদিকে রিমান্ড আবেদনে মামলার তদন্ত কর্মকর্তা জানিয়েছেন, সাবেক আইন বিচার ও সংসদ বিষয়ক মন্ত্রণালয়ের মন্ত্রী আনিসুল হকের নিজ নামে বনানী থানার অধীনে লাইসেন্সকৃত একটি অস্ত্র পিস্তল রয়েছে। ২০১৪ সালের ২২ জানুয়ারি অস্ত্রটি ইস্যু করা হয়। স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের জননিরাপত্তা বিভাগ রাজনৈতিক শাখা-৪ ২০২৪ সালের ৬ জানুয়ারী হতে একই বছরের ৫ আগষ্ট পর্যন্ত ব্যক্তিগত নিরাপত্তার জন্য প্রদত্ত সব আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স স্থগিত করা হয়েছে। এসব অস্ত্র ২০২৪ সালের ৩ সেপ্টেম্বর তারিখের মধ্যে জমা দানের নির্দেশ প্রদান করা হয়। এ আদেশের পর আগ্নেয়াস্ত্র লাইসেন্সধারী ব্যক্তিদের মধ্যে অনেকেই তাদের নিকটতম থানায় অস্ত্র-গোলাবারুদ জমা করেন। কিন্তু নির্দিষ্ট সময়ের মধ্যে আসামি আনিসুল হক বা তার পক্ষে কেউ অস্ত্র গোলাবারুদ জমা দেন নাই। অস্ত্রের লাইসেন্সে দেওয়া তার বাসার ঠিকানায় কাউকে পাওয়া যায়নি।
আগ্নেয়াস্ত্রের লাইসেন্স প্রদান নবায়ন ও ব্যবহার নীতিমালা-২০১৬ এর ১৯(চ) ও ২০ অনুচ্ছেদ অনুযায়ী, নির্দিষ্ট তারিখের মধ্যে কোনো অস্ত্র বা গোলাবারুদ থানায় জমা না দেওয়া হলে তা অবৈধ অস্ত্র হিসেবে গণ্য করে অস্ত্র আইনে মামলা হবে। তাই আনিসুল হকের বিরুদ্ধে অস্ত্র আইনে বনানী থানায় একটি মামলা দায়ের করা হয়েছে।
তদন্ত কর্মকর্তা আরও বলেন, এ মামলার সুষ্ঠ তদন্ত ও ন্যায় বিচারের স্বার্থে অস্ত্র কোথায় আছে এবং ওই অস্ত্র উদ্ধার করার জন্য অভিযান পরিচালনাসহ মামলার মূল রহস্য উদঘাটন করতে আসামি আনিসুল হককে ৫ দিনের পুলিশ রিমান্ড প্রয়োজন।
গত বছরের ১৩ আগস্ট পালানোর সময় রাজধানীর সদরঘাট থেকে গ্রেপ্তার হন আনিসুল হক। এরপর তার বিরুদ্ধে হত্যা ও হত্যাচেষ্টার অভিযোগে অন্তত অর্ধশতাধিক মামলা দায়ের করা হয়েছে। এসব মামলায় বিভিন্ন মেয়াদে রিমান্ডে নেওয়া হয়েছে। বর্তমানে তিনি কারাগারে আটক আছেন।
মন্তব্য করুন