যুবদল নেতা আরিফ হত্যা মামলায় শীর্ষ সন্ত্রাসী সুব্রত বাইনের ফের ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেছেন আদালত। শুনানি শেষে সুব্রত বাইন তার আইনজীবীকে বলেন, ‘আমার বিরুদ্ধে কয়টা মামলা হয়েছে তা খোঁজ নিয়ে জানাবেন’।
বুধবার (৯ জুলাই) দুপুর ২টা ১৩ মিনিটের দিকে ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের হাজতখানা থেকে বের করে এজলাসে তোলা হয়। এদিকে লিফটে করে ২টা ১৭ মিনিটের দিকে ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. আবদুল ওয়াহাবের আদালতে তোলা হয় সুব্রত বাইনকে। এসময় তার এক হাত ও পায়ে ডান্ডাবেড়ি পরানো দেখা যায়। হাত দিয়ে ডান্ডাবেড়ি ধরে হাঁটতে থাকেন তিনি। এছাড়া বুকে বুলেটপ্রুফ জ্যাকেট ও মাথায় হেলমেট পরানোও দেখা যায়।
এরপর মামলার তদন্ত কর্মকর্তা তেজগাঁও মহানগর গোয়েন্দা পুলিশের পরিদর্শক মোহাম্মদ মাজহারুল ইসলাম সুব্রত বাইনের ১০ দিনের রিমান্ড চেয়ে আবেদন করেন। এসময় রাষ্ট্রপক্ষে ঢাকা মহানগর দায়রা জজ আদালতের ভারপ্রাপ্ত পাবলিক প্রসিকিউটর আজিজুল হক দিদার রিমান্ড মঞ্জুরের পক্ষে শুনানি করেন। এসময় সুব্রত বাইনের পক্ষে তার আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়া রিমান্ড বাতিল চেয়ে জামিন আবেদন করেন। শুনানি শেষে আদালত আসামিকে ৭ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন।
এদিকে শুনানি শেষে সুব্রত বাইন তার আইনজীবী মোহাম্মদ বাদল মিয়াকে বলেন, ‘রিমান্ড কয়দিন দিল? ৫ দিন নাকি ৭ দিন?’ আইনজীবী জানান, ৭ দিন। এরপর সুব্রত তার আইনজীবীকে ফের বলেন, ‘আমার নামে মামলা কয়টা হয়েছে’। আইনজীবী বলেন, ‘এটা জানা নেই’। তখন সুব্রত বলেন, ‘আমার নামে এখন পর্যন্ত কয়টা মামলা হয়েছে খোঁজ নিয়ে জানাবেন’। আইনজীবী বাদল বলেন, ঠিক আছে।
এদিকে কাঠগড়ায় তার কয়েকজন স্বজন দেখা করেন। তাদের দেখেই সুব্রত বাইন বলেন, ‘কেমন আছো তোমরা। বেশি চিন্তা কইরো না’। পরে সুব্রত বাইনকে ফের ডান্ডাবেড়ি পরানো অবস্থায় আস্তে আস্তে হাঁটিয়ে হাজতখানায় নেওয়া হয়।
এরআগে গত ২৭ মে সুব্রত বাইন ও তার সহযোগী মোল্লা মাসুদসহ চারজনকে অস্ত্রসহ গ্রেপ্তার করে যৌথবাহিনী। পরদিন হাতিরঝিল থানার অস্ত্র আইনের মামলায় সুব্রত বাইনের ৮ দিনের রিমান্ড মঞ্জুর করেন আদালত। এরপর তাকে কারাগারে পাঠানো হয়।
এর আগে গত ২৩ জুন তদন্তকারী কর্মকর্তার আবেদন মঞ্জুর করে সুব্রত বাইনকে যুবদল নেতা আরিফ হত্যা মামলায় গ্রেপ্তার দেখান ঢাকার ম্যাজিস্ট্রেট আদালত। এসময় তাকে ভার্চুয়ালি শুনানিতে কারাগার থেকে যুক্ত করা হয়।
মামলার সূত্রে জানা যায়, গত ১৯ এপ্রিল রাতে রাজধানীর হাতিরঝিল থানাধীন নয়াটোলা মোড়ল গলির ‘দি ঝিল ক্যাফে’র সামনে যুবদল নেতা মো. আরিফ সিকদারকে গুলি করা হয়। আহত অবস্থায় তাকে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হলে চিকিৎসাধীন অবস্থায় ২১ এপ্রিল মৃত্যু হয় তার। নিহত আরিফ সিকদার ঢাকা মহানগর উত্তরের ৩৬ নং ওয়ার্ড যুবদলের সাবেক সহক্রীড়া সম্পাদক।
এই ঘটনায় নিহত আরিফের বোন রিমা আক্তার বাদী হয়ে সুব্রত বাইনের সহযোগী মাহফুজুর রহমান বিপুসহ ১০ জনের বিরুদ্ধে হাতিরঝিল থানায় হত্যা মামলা দায়ের করেন। মামলাটি বর্তমানে ঢাকা মহানগর গোয়েন্দা (ডিবি) পুলিশের তেজগাঁও বিভাগ তদন্ত করছে। মামলার অপর আসামিরা হলেন- মো. ইয়াছিন (১৯), মো. আসিফ হোসেন (২১), মো. অনিক (১৯), মো. মিরাজ (১৯), মো. আশিক (১৯), মো. ইফতি (২৪), জাফর ইমাম তরফদার মন্টু (৪০), রতন শেখ (৪৫) ও আলিফ (১৯)।
মন্তব্য করুন