সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৫টি ধারা সাংবাদিকদের বিপদে ফেলতে পারে বলে মন্তব্য করেছেন হাইকোর্ট বিভাগের বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ।
সোমবার (২৬ ফেব্রুয়ারি) সুপ্রিম কোর্ট আইনজীবী সমিতিতে ল’ রিপোর্টার্স ফোরাম আয়োজিত এক কর্মশালায় তিনি এ মন্তব্য করেন।
শেখ হাসান আরিফ বলেন, সাইবার নিরাপত্তা আইনের ৫টি ধারা সাংবাদিকতায় মারাত্মক আকার ধারণ করতে পারে। এগুলো হলো- ধারা ২২, ২৩, ২৫, ২৭ ও ২৮।
তিনি বলেন, প্রথমটা ধারা ২২, ডিজিটাল বা ইলেকট্রনিক জালিয়াতি। সংজ্ঞায়িত করেন জালিয়াতিকে— কোন কাজ করলে জালিয়াতি হবে, কোন কাজ করলে জালিয়াতি হবে না। যদি সংজ্ঞায়িত না করেন, তাহলে একেক সময় একেক সরকার আসবে একেক ভিউ নিয়ে। মন্ত্রীদের একেকজনের মাইন্ড সেট একেক রকম হবে। অনেকের ইনটলারেন্স থাকে প্রচণ্ড। এ ছাড়া আমাদের পলিটিক্যাল এনভায়রনমেন্টও ইনটলারেন্সের।
বিচারপতি শেখ হাসান আরিফ বলেন, ১৯৯১ সাল থেকে দুই রাজনৈতিক দলের মধ্যে প্রচণ্ড ইনটলারেন্স আমরা দেখেছি। কোনো ধরনের সমালোচনা হলেই গ্রেপ্তার-অ্যারেস্ট-নির্যাতন ছাড়া আর কোনো পন্থা ওনাদের হাতে আছে বলে ওনারা মনে করেন না। এক্ষেত্রে বিরোধী রাজনৈতিক দলকে দমন করতে গিয়ে দেখা যায় সাংবাদিকরাও এর ভিকটিম হয়ে যেতে পারেন। টার্গেট করা হয়, সাংবাদিকরা ওই রাজনৈতিক দলের প্রতি দুর্বল।
কর্মশালায় প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য রাখেন সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের জ্যেষ্ঠ বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম। এ ছাড়াও উপস্থিত ছিলেন অ্যাটর্নি জেনারেল এ এম আমিন উদ্দিন।
আপিল বিভাগের বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, শিশুদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। যাতে পরিচয় প্রকাশ না করা হয়।
কিশোর গ্যাংকে একটি সামাজিক সমস্যা উল্লেখ করে ‘সুপ্রিম কোর্ট স্পেশাল কমিটি ফর চাইল্ড রাইটস’-এর সভাপতি বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম বলেন, সাম্প্রতিককালে কিশোর গ্যাং গ্রেপ্তার হচ্ছে, আমাদের সমাজে কিশোর গ্যাং আসলেই একটা সমস্যা। কিশোর গ্যাং কেন হয়, কী কারণে হয়, সমাজবিজ্ঞানীরা আছেন তারা ভালোভাবে দেখতে পারবেন কীভাবে প্রিভেন্ট করা যায়। কিন্তু আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর দৃষ্টিকোণ থেকে তারা মনে করছে এ ধরনের কিশোর গ্যাংদের গ্রেপ্তার করা প্রয়োজন।
বিচারপতি এম ইনায়েতুর রহিম আরও বলেন, মানুষ কিন্তু কিছু কিছু জায়গায় ভীষণ অতিষ্ঠ। আমি যখন বিভিন্ন জায়গায় যাই আমাদের বলে- এ কিশোর গ্যাংয়ের আসলে কেউ কিশোর না। হতে পারে সবাই কিশোর না, ১৫ থেকে ১৬ বছর বয়স। আমাদের শিশু আইনে ১৮ বছর। শিশু আইন ও হাইকোর্টের রায়ে বলা আছে, শিশুদের সংবাদ পরিবেশনের ক্ষেত্রে যথেষ্ট সাবধানতা অবলম্বন করতে হবে। পরিচয় যাতে প্রকাশ না করা হয়। কিন্তু আমি কয়েক দিন ধরে দেখছি আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যে প্রবণতা আছে কে কতটুকু কাজ করছে তা তুলে ধরার। তারা হয়তো ডাকল, ডেকে মিডিয়ায় ব্রিফ করল। প্রাথমিকভাবে ধরে নিতে হবে এরা কিশোর। কারও যদি বয়স কম বেশি হয়- সে বিষয়ে প্রশ্ন এলে সেটা আদালত নির্ধারণ করবেন।
মন্তব্য করুন