কালবেলা প্রতিবেদক
প্রকাশ : ০৬ সেপ্টেম্বর ২০২৩, ০২:১১ পিএম
অনলাইন সংস্করণ

জনস্বাস্থ্যের নির্বাহী প্রকৌশলী হাবীবের বিরুদ্ধে বহু বিয়ের অভিযোগ

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি : কালবেলা
বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলন। ছবি : কালবেলা

আগের দুই বিয়ের তথ্য গোপন করে নোয়াখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী আহসান হাবিবের বিরুদ্ধে প্রতারণা করে বহু বিয়ের অভিযোগ তুলেছেন তার তৃতীয় স্ত্রী দাবিদার এক নারী।

স্ত্রীর স্বীকৃতি, সন্তানের পিতৃপরিচয় অস্বীকার করে উল্টো নানা অপপ্রচার, সামাজিক ও সম্মানহানির অভিযোগ তুলেছেন ডাক্তার সুমনা ইসলাম।

সামাজিকভাবে হেয়-প্রতিপন্ন করা থেকে বিরত থেকে স্ত্রী হিসেবে নিজের স্বীকৃতি ও সন্তানের পিতৃপরিচয়ের নিশ্চয়তা দাবি করেছেন তিনি। এজন্য সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ করেছেন ভুক্তভোগী ডাক্তার সুমনা ইসলাম।

বুধবার দুপুরে বাংলাদেশ ক্রাইম রিপোর্টার্স এসোসিয়েশন (ক্র্যাব) মিলনায়তনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে এ দাবি জানান তিনি।

ডা. সুমনা ইসলাম বলেন, আমি রাশিয়া থেকে এমবিবিএস পাসের পর ২০১৯ সালে পাবনা মেডিকেলে ইন্টার্নশিপ করি। ২০১৯ সালে পাবনায় থাকাকালে জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তর ও নোয়াখালী জনস্বাস্থ্য প্রকৌশল অধিদপ্তরের নির্বাহী প্রকৌশলী মো. আহসান হাবীব (৩৮) সঙ্গে পরিচয় হয়।

২০১৯ সালের ২ মার্চ সাক্ষাৎ করে আহসান হাবীব বিয়ের প্রস্তাব দেন। কথোকথনের একপর্যায়ে পরিবার সম্মতিতে ২০২১ সালের ২৫ জানুয়ারি বিয়ে করি। কিন্তু আহসান হাবীব তার প্রথম বিয়ের তথ্য গোপন করেন, যা আমি জানতাম না। আমাদের বিবাহিত জীবনে কিছুদিন পর আহসান হাবীবের আচার-আচরণ সন্দেহ হয়। তার বাড়িতে যেতে চাইলে আহসান হাবীব বিভিন্ন ধরনের তালবাহানা করেন। তার নেত্রকোনার বাসভবনে আমি স্থায়ীভাবে তার সাথে বসবাস করতে চাইলে সে এটা সম্ভব না বলে জানায়।

পরে খোঁজখবর নিয়ে জানতে পারি, আহসান হাবীবের পূর্বে আরও একটি বিবাহিত স্ত্রী (আরিফা পারভীন) আছে। সেখানে একটি ছেলে সন্তান এবং দ্বিতীয় স্ত্রী হুমায়রার রহমানের সঙ্গে সংসার জীবন চলমান ও দুটি সন্তান রয়েছে। এসব বিষয় নিয়ে আহসাব হাবীবকে জানতে চাইলে ক্ষীপ্ত হয়ে আমাকে শারীরিক ও মানসিক নির্যাতন শুরু করেন। আমি, আমার মা ও ভাই তার গ্রামের বাড়ি মহাদেবপুর, নওগাঁ গেলে সন্ত্রাসী বাহিনী দিয়ে আমি, আমার মা ও ভাইকে হত্যার উদ্দেশ্যে মারধর করেন। এ ঘটনায় মহাদেবপুর থানায় একটি মামলা দায়ের করি। মামলার পর তিনি আরও হিংস্র হয়ে ওঠেন। পরে স্থানীয় সরকার বিভাগের সচিব বরাবর একটি অভিযোগ দিই। পরে আমার সাথে আপস করেন। ভবিষ্যতের কথা চিন্তা করে সংসার করার উদ্দেশ্যে মামলাটি প্রত্যাহার করি।

কিছুদিন পর কিন্তু সন্তান-সম্ভবা হওয়ার খবরে আহসান হাবীব আমার সন্তান নষ্ট করার জন্য চাপ দিতে থাকে, না করলে আমাকে ডিভোর্স দেওয়ার হুমকি দেয়। সকল যোগাযোগ বন্ধ করে দেয়। তার তখনকার কর্মস্থল নেত্রকোনায় গেলে আমাকে ও আমার মাকে তালাবদ্ধ করে রাখে। পরে পুলিশের সহায়তায় নিজেদের উদ্ধার করি। ২০২২ সালের ২৭ মার্চ ঢাকার চিফ মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে সি আর মামলা করি।

ডাক্তার সুমনা দাবি করে বলেন, শুধু আমি নই, আমার আহসান হাবীবের বিরুদ্ধে প্রথম স্ত্রী আরিফা পারভীন বিভিন্ন সময়ে মামলা দায়ের করেছিলেন। বর্তমানে আমার ১৪ মাসের কন্যা সন্তান আছে এবং আহসান হাবীব সন্তানের পিতৃ পরিচয় ও ভরণপোষণ হতে বিরত রয়েছেন। আহসান হাবীব সামাজিকভাবে শুধু দ্বিতীয় স্ত্রী ও সন্তানদের কথা স্বীকার করেন। আহসান হাবীব বিভিন্ন সময় আমার বাসায় সন্ত্রাসী পাঠিয়ে আমাকে ও আমার সন্তানকে প্রাণনাশের চেষ্টাও করেছেন। ২০২৩ সালের ২ ফেব্রুয়ারি আমাকে ও আমার সন্তানকে তুলে নিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করে সন্ত্রাসীরা।

ডাক্তার সুমনা বলেন, আমি সংসার টিকিয়ে রাখার চেষ্টা করলেও সে আমাকে নানাভাবে হেয়প্রতিপন্ন করার চেষ্টা করেছে। আমার ডাক্তারি লাইসেন্স বাতিল করার চেষ্টায় তার বান্ধবী মালিহা মাহজাবিন নামে অজ্ঞাতনামা নারীকে দিয়ে ভিত্তিহীন ও বানোয়াট তথ্যে বাংলাদেশ মেডিকেল ও ডেন্টাল কাউন্সিলের রেজিস্ট্রার, আবেদন করায়।

ডা. সুমনা বলেন, বাসুকা করপোরেশন নামে প্রতিষ্ঠান খুলে নেত্রকোনা জেলার আটপাড়া উপজেলায় ৯৩টি টিউবওয়েল বসানোর কাজ প্রদান করেন তিনি। এর সব কাগজপত্র করেন আমার নামে। যার টেন্ডার আইডি- ৫১০২৬২। দরপত্রের বিপরীতে বাসুকা করপোরেশন পারফরম্যান্স সিকিউরিটি বাবদ ৬ লাখ ৫৬ হাজার ৫৬৬ টাকা ব্যাংক জামানত রাখে। জামানতকৃত টাকা এখন ও অসংগৃহীত রয়েছে। ঠিকাদারি কাজটি সম্পন্ন করার জন্য মালামাল কেনার উদ্দেশ্যে আহসান হাবীব আমার কাছ থেকে ৫০ লাখ টাকা বিভিন্ন সময়ে পর্যায়ক্রমে নিয়েছে। অথচ বিল প্রদান না করে কাজটি বাতিল করে ২০২১ সালের ৯ জুন আবার দরপত্র আহবান করে। এমন প্রতারণার বিষয়ে জানতে চাইলেও তিনি নানাভাবে হুমকি দেন। একইভাবে দ্বিতীয় স্ত্রী, শালী, ও অন্যান্য আত্মীয়স্বজনের নামে ট্রেড লাইসেন্স করে ক্ষমতার অপব্যবহার করে নিজে কাজ করে আর্থিকভাবে লাভবান হয়েছেন।

এক প্রশ্নের জবাবে ডাক্তার সুমনা ইসলাম করেন, আমি সংসার করতে চাই, স্ত্রীর স্বীকৃতি চাই, সন্তানের স্বীকৃতি চাই। তার নানামুখি অসম্মানজনক তৎপরতা বন্ধ চাই। মিথ্যাচার, সামাজিক সম্মানহানি থেকে রেহাই পেতে সংশ্লিষ্ট মন্ত্রণালয় ও প্রধানমন্ত্রীর হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।

কালবেলা অনলাইন এর সর্বশেষ খবর পেতে Google News ফিডটি অনুসরণ করুন

মন্তব্য করুন

  • সর্বশেষ
  • জনপ্রিয়

গাজায় ইসরায়েলি হামলায় ২৭০ শিশু নিহত

লোহাগড়ায় অবসরপ্রাপ্ত মেজরের বিরুদ্ধে চাঁদাবাজির মামলা

ট্রাম্পের ভণ্ডামিতেই কি গাজার সংকট বাড়ল

নামাজ পড়ায় সাইকেলসহ নানা পুরস্কার পেল শিশু-কিশোররা

গুলশানে ডিশ ব্যবসায়ী সুমন হত্যায় গ্রেপ্তার ২

আন্তর্জাতিক মিলিটারি আর্চারি টুর্নামেন্টে তৃতীয় সশস্ত্র বাহিনী

প্রতারণার ফাঁদে ৩০ হাজার টাকা খোয়ালেন জবি শিক্ষার্থী

বেসরকারি ৯ বিশ্ববিদ্যালয়ের পদবঞ্চিতদের বিক্ষোভ ও কুশপুত্তলিকা দাহ

‘বঙ্গবন্ধু এভিনিউ’সহ নানা স্থাপনার নাম পরিবর্তন

ঈদের আগে সুদের টাকার ঝগড়ায় শিশুর করুণ পরিণতি

১০

ডিসেম্বরের মধ্যে দ্রুত নির্বাচন ও ভোটের অধিকার চায় জনগণ : খোকন

১১

স্বাধীনতা অক্ষুণ্ন রাখতে প্রত্যেক সদস্য প্রস্তুত রয়েছে : সেনাপ্রধান

১২

গণহত্যা ভয়ংকর ও বিপজ্জনক দৃষ্টান্ত : স্বপন

১৩

ঐক্যবদ্ধ থেকে সব ষড়যন্ত্র মোকাবিলা করতে হবে : আমিনুল হক

১৪

গণঅভ্যুত্থানে আহত ইমরানের খোঁজ নিলেন তারেক রহমান

১৫

হামিম গ্রুপের জিএম আহসান উল্লাহর রক্তাক্ত মরদেহ উদ্ধার

১৬

‘আমার পরিবারের পঞ্চাশ বছর আগেও ৫০টি গাড়ির ভাড়া দেওয়ার সামর্থ্য ছিল’

১৭

পঙ্গু হাসপাতালে ঈদ উপহার বিতরণ এ্যাবের

১৮

প্রতিবাদ চলবে, আঘাত কিংবা মৃত্যুর জন্য প্রস্তুত : হান্নান মাসুদ

১৯

ছোট হয়ে আসছে দেশের শ্রমবাজার, রপ্তানি কমেছে ৩০ শতাংশ

২০
X