২০০৬ সালে ময়মনসিংহের ত্রিশালে প্রতিষ্ঠিত হয় জাতীয় কবি কাজী নজরুল ইসলাম বিশ্ববিদ্যালয়। বিজ্ঞান, কলা, ব্যবসায় শিক্ষা, সামাজিক বিজ্ঞান ও আইন সংশ্লিষ্ট ২৪টি বিষয় শিক্ষার্থীদের পড়ানো হয়। এ ছাড়া গবেষণার প্রতি বিশেষ সুনজর রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টির।
শিক্ষক-শিক্ষার্থীর অনুপাত, আউটকাম বেইজড শিক্ষা, স্বনামধন্য জার্নালে গবেষণা প্রকাশসহ বিভিন্ন বিষয় নিয়ে নিয়মিত আলোচনা সভা, প্রশিক্ষণ করতেও দেখা যায়। এসব কিছুর মূলে যে জাতীয় ও আন্তর্জাতিক পর্যায়ে এই বিশ্ববিদ্যালয়ের পরিচয় সৃষ্টি করা তা বলা বাহুল্য। কিন্তু বিশ্বব্যাপী বিশ্ববিদ্যালয়গুলোর র্যাঙ্কিং মূল্যায়নকারী প্রতিষ্ঠানগুলোর তালিকায় বরাবরই অনুপস্থিত বিশ্ববিদ্যালয়টির নাম।
র্যাংকিং বিশ্লেষণ করে দেখা যায়, কয়েকটি কারণে পিছিয়ে রয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়টি। এর মধ্যে রয়েছে-
১. মানসম্পন্ন ও মৌলিক গবেষণার অভাব : আন্তর্জাতিক পর্যায়ে বিশ্ববিদ্যালয়কে এগিয়ে নিতে গবেষণার মাধ্যমে মৌলিক জ্ঞান সৃষ্টির বিকল্প নেই। অথচ নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ গবেষণাই বিশ্ববিদ্যালয় ও দেশীয় জার্নালে প্রকাশিত হয়।
২. ওয়েবসাইটে তথ্যের অপ্রতুলতা : র্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে বাড়তি নজর থাকে বিশ্ববিদ্যালয়ের ওয়েবসাইটে। কিন্তু এ বিষয়ে বরাবরই উদাসীন প্রশাসন। তথ্যগুলো নিয়মিত হালনাগাদও করা হয় না। এর আগেও একাধিকবার ওয়েবসাইটের উন্নতি এবং নতুন একটি অত্যাধুনিক ওয়েবসাইট তৈরি করা হচ্ছে বলা হলেও তার কোনো অগ্রগতি নেই।
৩. আন্তর্জাতিকীকরণের অভাব : ইউজিসির সর্বশেষ বার্ষিক প্রতিবেদনের তথ্যমতে, বাংলাদেশের বিভিন্ন সরকারি-বেসরকারি বিশ্ববিদ্যালয়ে অধ্যয়নরত বিদেশি শিক্ষার্থীর সংখ্যা ১ হাজার ৯৫৭ জন। অথচ প্রতিষ্ঠার দেড় যুগ পার হলেও এখন পর্যন্ত কোনো বিদেশি শিক্ষার্থী ভর্তি হয়নি নজরুল বিশ্ববিদ্যালয়ে।
৪. ইন্ডাস্ট্রি সংযুক্তি এবং আন্তর্জাতিক সম্ভাবনা : বিশ্ববিদ্যালয় প্রতিষ্ঠার ১৮ বছরেও কেন্দ্রীয় কোনো অ্যালামনাই অ্যাসোসিয়েশন নেই, যে কারণে গ্র্যাজুয়েট শিক্ষার্থীদের ইন্ডাস্ট্রিতে কী রকম অবস্থান, সেটি সম্পর্কেও সঠিক তথ্য পাওয়া যায় না।
এরই মধ্যে গত ১ জুলাই ফিল্ম অ্যান্ড মিডিয়া স্টাডিজ বিভাগের সহযোগী অধ্যাপক ড. জিল্লুর রহমান পলকে পরিচালক হিসেবে নিয়োগ দিয়ে প্রথমবারের মতো ইন্টারন্যাশনাল অ্যাফেয়ার্স দপ্তরের কার্যক্রম শুরু করেছে বিশ্ববিদ্যালয়টি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ড. সৌমিত্র শেখর বলেন, প্রতি বছর বিশ্ববিদ্যালয়ের আন্তর্জাতিক কনফারেন্স, গবেষণা মেলায় বিশ্বের বিভিন্ন দেশ থেকে অধ্যাপক-গবেষকরা আসছেন। ফলে নেটওয়ার্কিং বাড়ছে।
তিনি বলেন, শিক্ষকদের পদোন্নতি ও জার্নাল প্রকাশে মানসম্মত গবেষণার বিষয়ে জোর দেওয়া হচ্ছে। এরই মধ্যে নতুন একটি ওয়েবসাইট তৈরির কাজও প্রায় শেষের দিকে রয়েছে। আর অ্যালামনাই গঠনে শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের সমন্বিত উদ্যোগ নিতে হবে, যে কোনো প্রয়োজনে আমরা সহযোগিতা করব।
মন্তব্য করুন