ছয় বছর পর চতুর্থ সংগীত উৎসব উদযাপন করেছে জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের (জবি) সংগীত বিভাগ। দিনব্যাপী উৎসবের মূল প্রতিপাদ্য ছিল ‘সুস্থ সংস্কৃতির বিকাশ’। দিনব্যাপী গানে গানে মুগ্ধতা ছড়িয়েছে শিক্ষার্থীরা।
বুধবার (৭ মে) বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের সদ্য প্রয়াত শিক্ষার্থী প্রত্যাশা মজুমদারকে উৎসর্গ করে বিজ্ঞান ভবনের মাঠে এ উৎসব অনুষ্ঠিত হয়।
উৎসবের সূচনা হয় সকালে সেমিনার দিয়ে। দিনব্যাপী সংগীতের মাধ্যমে রাত ৯টার সময় এই উৎসব শেষ হয়। এদিন উৎসবে ‘সার্বিক স্বরূপ সমীক্ষণ : সংগীত ও সংবিৎ’ শীর্ষক এই সেমিনারে প্রবন্ধ উপস্থাপন করেন সহকারী অধ্যাপক ড. আলী এফ এম রেজোয়ান। অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করেন চতুর্থ সংগীত উৎসব উদযাপন কমিটির আহ্বায়ক ও সংগীত বিভাগের চেয়ারম্যান ড. ঝুমুর আহমেদ এবং সঞ্চালনা করেন সংগীত বিভাগের সহকারী অধ্যাপক মো. মাহমুদুল হাসান।
এদিন অনুষ্ঠানে আলোচনায় অংশ নেন সোনারগাঁও বিশ্ববিদ্যালয়ের স্থাপত্য বিভাগের অধ্যাপক মুহাম্মাদ আলী নকী। বিকাল ৩টায় দ্বিতীয় অধিবেশনে প্রয়াত প্রত্যাশার স্মরণে এক মিনিট নীরবতা পালনের পর পরিবেশিত হয় উদ্বোধনী সংগীত ‘ধ্বনিল আহ্বান’ এবং ‘ও আলোর পথযাত্রী’।
আয়োজনে সমবেতভাবে অষ্টপ্রহরের রাগ, রবীন্দ্রসংগীত, নজরুলসংগীত, দেশাত্মবোধক গান, আধুনিক গান, উপশাস্ত্রীয় সংগীত ও লোকসংগীত। শিক্ষার্থীদের পরিবেশনায় ছিল ‘সাগর বাউল’ এবং সম্মেলক পরিবেশনায় ছিল ‘মানুষ ভজলে সোনার মানুষ হবি’ পরিবেশিত হয়। জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মধ্য দিয়ে শেষ হয় আয়োজন।
উৎসবে শিল্পী শাহীন সামাদকে বিশেষ সম্মাননা প্রদান করা হয়। দিনব্যাপী আয়োজনের সাংস্কৃতিক পর্বে অংশগ্রহণ করেন শিল্পী খায়রুল আনাম শাকিল, লাইসা আহমদ লিসা, প্রিয়াংকা গোপ, সাগর দেওয়ানসহ জগন্নাথ বিশ্ববিদ্যালয়ের সংগীত বিভাগের শিক্ষক-শিক্ষার্থীরা।
এদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক ড. সাবিনা শরমীন শুভেচ্ছা বক্তব্যে বলেন, তোমরা কখনও স্বার্থপর হয়ো না। অনাকাঙ্ক্ষিত মৃত্যু পরিবারের সদস্যদের জন্য চিরদিনের বেদনা বয়ে আনে। এমন ঘটনার পুনরাবৃত্তি যেন না ঘটে, সেদিকে সচেষ্ট থাকতে হবে।
উদ্বোধনী বক্তব্যে উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. রেজাউল করিম বলেন, ২০২৪ সালের জুলাই-পরবর্তী সময়ে দেশে মুক্ত ও সৃজনশীল পরিবেশ প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। এরই ধারাবাহিকতায় এই উৎসবের মাধ্যমে আমরা আমাদের সমৃদ্ধ দেশীয় সংস্কৃতিকে বিশ্বদরবারে তুলে ধরতে পারব। সংগীত শুধু বিনোদনের মাধ্যম নয়, এটি জাতির প্রেরণার উৎস। মহান মুক্তিযুদ্ধে এবং জুলাই বিপ্লবে সংগীতের শক্তিই আমাদেরকে সংগ্রামে উদ্বুদ্ধ করেছে, ঐক্যবদ্ধ করেছে।
তিনি আরও বলেন, আজ আমরা প্রত্যাশা মজুমদারকে স্মরণ করছি। এমন সম্ভাবনাময় প্রাণের অকালপ্রয়াণে আমাদের গভীরভাবে ব্যথিত করে। এই ঘটনা আমাদেরকে শিক্ষা দেয় যে আমাদেরকে মানবিক হতে হবে, কিন্তু আবেগের বশবর্তী হয়ে যেন অন্ধকার পথে পা না বাড়াই।
মন্তব্য করুন