১০ বছর পর নিজ বিশ্ববিদ্যালয়ে গেছেন সাবেক শিক্ষক ও অন্তর্বর্তী সরকারের প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ ইউনূস। গাউন পরিহিত ড. মুহাম্মদ ইউনূসকে ক্যাম্পাসে প্রবেশ করার পর থেকেই উচ্ছ্বসিত দেখা গেছে। মুখভরা হাসিই জানান দিচ্ছে বিশ্ববিদ্যালয়ের সমাবর্তনে অংশ নিয়ে উচ্ছ্বসিত তিনি।
বুধবার (১৪ মে) দুপুর ২টার দিকে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পঞ্চম সমাবর্তন উপলক্ষে ক্যাম্পাসে পৌঁছান তিনি। প্রায় এক দশক পর চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে সমাবর্তন অনুষ্ঠিত হচ্ছে আজ। এ সমাবর্তনে প্রধান উপদেষ্টা অধ্যাপক মুহাম্মদ ইউনূসকে সম্মানসূচক ডি.লিট ডিগ্রি প্রদান করেছে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ।
জানা যায়, তিনি ১৯৭২ সালে বিশ্ববিদ্যালয়ে অর্থনীতি বিভাগে সহযোগী অধ্যাপক হিসেবে যোগ দেন ড. মুহাম্মদ ইউনূস। পরে ১৯৭৫ সালে অধ্যাপক পদে পদোন্নতি পান। ১৯৮৯ সাল পর্যন্ত মুহাম্মদ ইউনূস এ পদেই কর্মরত ছিলেন।
বিশ্ববিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত রেজিস্ট্রার ও অর্থনীতি বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ সাইফুল ইসলাম বলেন, নোবেল পুরস্কার পাওয়ার পর ২০০৬ সালে মুহাম্মদ ইউনূস একবার চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ে এসেছিলেন। পরে ২০১৫ সালের সেপ্টেম্বরে অর্থনীতি বিভাগ পরিদর্শনে আসেন। সেই হিসাবে প্রায় ১০ বছর পর তিনি ক্যাম্পাসে আসছেন। আজ অনুষ্ঠানের এক ফাঁকে অর্থনীতি বিভাগে যেতে পারেন।
সমাবর্তন অনুষ্ঠানে সভাপতিত্ব করছেন চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য ড. মো. ইয়াহইয়া আখতার। এ ছাড়া উপস্থিত রয়েছেন শিক্ষা উপদেষ্টা অধ্যাপক ড. চৌধুরী রফিকুল আবরার, ইউজিসি চেয়ারম্যান অধ্যাপক এস এম এ ফায়েজ এবং আরও চারজন উপদেষ্টা।
কিছুক্ষণ পর অনুষ্ঠিত হবে সমাবর্তন শোভাযাত্রা, যেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ের ১০০ জন শিক্ষক অংশ নেবেন। তবে এ শোভাযাত্রায় গ্র্যাজুয়েটরা অংশ নিতে পারবেন না। মূল অনুষ্ঠান শুরু হবে বেলা ২টায় জাতীয় সংগীত পরিবেশনের মাধ্যমে, যা চলবে বিকেল ৪টা পর্যন্ত।
এবারের সমাবর্তনে ৪২ জন পিএইচডি ও ৩৩ জন এমফিল ডিগ্রিধারীসহ স্নাতক ও স্নাতকোত্তর পর্যায়ের শিক্ষার্থীদের ডিগ্রি প্রদান করা হবে। এই বিশাল আয়োজনকে ঘিরে খরচ ধরা হয়েছে প্রায় ১৪ কোটি টাকা, যার মধ্যে ৩ কোটি টাকায় নির্মিত হয়েছে দেড় লাখ স্কয়ার ফিটের অত্যাধুনিক প্যান্ডেল। সাবেক ও বর্তমান শিক্ষার্থী, শিক্ষক ও অতিথিসহ প্রায় এক লাখ মানুষের সমাগম হবে বলে ধারণা করছেন বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সকাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের নির্ধারিত বাসে করে ক্যাম্পাসে আসেন গ্র্যাজু্য়েট শিক্ষার্থীরা। বিশেষ এ দিনটি উদ্যাপন করতে সঙ্গে এসেছেন পরিবার পরিজনও। ৪২ জন পিএইচডি, ৩৩ জন এম ফিলসহ ২২ হাজার ৫ ৮৬ শিক্ষার্থীকে দেওয়া হবে স্নাতক ও স্নাতকোত্তর ডিগ্রি। বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় মাঠের মূল অনুষ্ঠানে বসার ব্যবস্থা করা হয়েছে শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও অতিথিসহ ২৫ হাজার মানুষের। পুরো ক্যাম্পাসজুড়ে বিরাজ করছে সাজসাজ রব।
মন্তব্য করুন