যশোর বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ে (যবিপ্রবি) শাখা ছাত্রলীগ নেতা কর্তৃক শিক্ষার্থী নির্যাতনের ঘটনা ঘটেছে।
বৃহস্পতিবার (৩১ আগস্ট) যবিপ্রবির শহীদ মসীয়ূর রহমান হলের ১০৬ নম্বর কক্ষে দুপুর আনুমানিক ১২টা থেকে ১টার মধ্যে এ ঘটনা ঘটে। শাহরিন রহমান নামের এক শিক্ষার্থীকে শারীরিকভাবে নির্যাতন করে হলের রুম ছাড়ার হুমকি দেন যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাজমুস সাকিব ও শারীরিক শিক্ষা ও ক্রীড়া বিজ্ঞান বিভাগ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি আসিফ আল মাহমুদ। শাহরিন রহমান পিইএসএস বিভাগের ২০১৯-২০ সেশনের শিক্ষার্থী।
বিশ্ববিদ্যালয়ে ছুটির দিন এ ঘটনায় ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন ও শ ম র হল প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদকে মৌখিকভাবে জানিয়েছেন।
এ বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী শাহরীন রহমান বলেন, যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাজমুস সাকিব ভাই ও আসিফ আল মাহমুদ ভাই ২১৫ নম্বর কক্ষে আমাকে ডেকে নিয়ে প্রথমে আমার অ্যালটেড রুম (১০৬ নম্বর কক্ষ) ছেড়ে হলের ১০৩ নম্বর কক্ষে তৎক্ষণাৎ উঠতে বলে। ১০৩ নম্বর কক্ষে না উঠলে কিছুক্ষণ পরে নাজমুস সাকিব ভাই ও আসিফ ভাই ১০৬ নম্বর কক্ষের সামনে থেকে আমাকে ঘাড় ধাক্কা দিয়ে রুমে ঢুকিয়ে না বুঝার আগেই ওনারা দুজনেই আমার গলা চেপে ধরে ও মুখ, মাথায় ও শরীরে এলোপাথাড়ি কিল-ঘুসি মারতে থাকে। একপর্যায়ে রুম পরিবর্তন না করলে হল ও ক্যাম্পাস ছাড়ার হুমকি দেয়। তারা এও বলেন, তুই ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানাকে জানা, কিছুই করতে পারবি না আমাকে। এই ঘটনার পর আমি নিরাপত্তাহীনতায় ভুগতেছি। এ ছাড়া ঘটনাটি আমি বিশ্ববিদ্যালয় উপাচার্য স্যার ও শমর হলের প্রভোস্ট স্যারকে মোবাইল ফোনে অবহিত করেছি।
এ বিষয়ে যবিপ্রবি শাখা ছাত্রলীগের সহসভাপতি নাজমুস সাকিব কে জানতে চাইলে তিনি নিজেকে শারীরিকভাবে অসুস্থ বলে দাবি করে বলেন, শাহরীন ১০৬ নম্বর রুমের স্থায়ী বাসিন্দা নন, তিনি গণরুমের সিট প্রাপ্ত শিক্ষার্থী। আমরা তাকে সিট পরিবর্তন করার কথা বলি কিন্তু আমার বিরুদ্ধে মারধর করার অভিযোগ সম্পূর্ণ মিথ্যা। হলে সিট পরিবর্তন করানোর অধিকার তার আছে কিনা জানতে চাইলে তিনি এই বিষয়ে কথা বলতে রাজি হননি।
ছাত্রলীগ নেতাদের ওপর আনা অভিযোগের বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয় শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি সোহেল রানা বলেন, এই সম্পর্কে আমি অবগত নই তবে এমন কোনো ঘটনা ঘটে, যদি প্রমাণিত হয় তবে আমরা যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
এ বিষয়ে শহীদ মশিয়ূর রহমান হলের প্রভোস্ট ড. আশরাফুজ্জামান জাহিদ বলেন, বিষয়টি আমরা জেনেছি এবং জানার পর প্রভোস্ট বডি সরজমিনে গিয়ে ঘটনাস্থল পরিদর্শন করেছি। ভুক্তভোগী শিক্ষার্থীকে ১০৬ নম্বর রুমে থকার ব্যবস্থা করব। মারধরের বিষয়ে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী পরবর্তীতে লিখিত অভিযোগ দিলে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ গ্রহণ করব।
এ ঘটনায় যবিপ্রবি উপাচার্য অধ্যাপক ড. মো. আনোয়ার হোসেন বলেন, আমাকে ভুক্তভোগী শিক্ষার্থী মোবাইল ফোনে জানানোর পর আমি হল প্রভোস্টকে তৎক্ষণাৎ নির্দেশনা প্রদান করি তাকে সকল প্রকার সহযোগিতা করার জন্য। শিক্ষার্থীদের বরাদ্দকৃত কক্ষ থেকে কাউকে জোরপূর্বক বের হতে বাধ্য করা অত্যন্ত নিন্দনীয় ও ঘৃণার কাজ। প্রভোস্ট তদন্ত প্রতিবেদন দিলেই আমি তৎক্ষণাৎ ব্যবস্থা গ্রহণ করব।
মন্তব্য করুন