ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের (ইবি) আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের শিক্ষার্থী সাজিদ আবদুল্লাহর মৃত্যুর কারণ উদঘাটন করতে তথ্য চেয়ে গণবিজ্ঞপ্তি দিয়েছে ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটি। রোববার (২০ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের গঠিত ফ্যাক্ট ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক ও কলা অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন স্বাক্ষরিত এ গণবিজ্ঞপ্তি প্রকাশ করা হয়েছে।
এদিকে সাজিদের মৃত্যুতে সকাল ১০টায় ক্যাম্পাসে শোক র্যালি করেছে আল-কোরআন বিভাগ।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়েছে, ইসলামী বিশ্ববিদ্যালয়ের সব শিক্ষক, ছাত্র-ছাত্রী, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের জানানো যাচ্ছে যে, গত ১৭ জুলাই আল কোরআন অ্যান্ড ইসলামিক স্টাডিজ বিভাগের ছাত্র সাজিদ আব্দুল্লাহ মৃত্যুবরণ করেন। তার মৃত্যুর সঠিক কারণ উদঘাটনের লক্ষ্যে প্রশাসন কর্তৃক গঠিত ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির কাজ সুষ্ঠুভাবে সম্পন্ন করার জন্য ওই বিষয়ে আপনাদের কাছে কোনো তথ্য থাকলে আগামী ৭২ ঘণ্টার মধ্যে লিখিতভাবে কমিটির আহ্বায়ক বরাবর অথবা নিম্নলিখিত হোয়াটসঅ্যাপ নম্বরে পৌঁছানোর জন্য আহ্বান জানানো যাচ্ছে। হোয়াটসঅ্যাপ নাম্বার- ০১৭১৫২১০০১২ ও ০১৭১৬০৫৩৫৯৬।
গত ১৭ জুলাই বিকেলে বিশ্ববিদ্যালয়ের শাহ আজিজুর রহমান হল সংলগ্ন পুকুর থেকে সাজিদের মরদেহ উদ্ধার করা হয়। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের শহীদ জিয়াউর রহমান হলের ১০৯ নম্বর কক্ষে থাকতেন। সাজিদের এভাবে হঠাৎ পুকুরে মরদেহ পাওয়ার ঘটনায় তৈরি হয়েছে রহস্য।
সহপাঠীসহ ঘনিষ্ঠজনদের দাবি, ভালো সাঁতার জানা সাজিদ পুকুরে ডুবে মরতে পারে না। এ দিকে সাজিদের মৃত্যুরহস্য উদঘাটনে ৫ সদস্যের ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটি গঠন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন। একই সঙ্গে জিয়াউর রহমান হল প্রশাসন পৃথকভাবে ৩ সদস্যের তদন্ত কমিটি গঠন করে।
এ ছাড়া সাজিদের মৃত্যুর কারণ উদঘাটন ও নিরাপদ ক্যাম্পাস নিশ্চিত, আগামী ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক তদন্ত প্রতিবেদন ও ৬ দিনের মধ্যে পূর্ণাঙ্গ প্রতিবেদন প্রকাশ, তদন্ত কমিটিতে ২ শিক্ষার্থী অন্তর্ভুক্তকরণসহ ১৫ দফা দাবিতে শনিবার (১৯ জুলাই) বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন ভবনের সামনে বিক্ষোভ করেন সাজিদের সহপাঠী ও শিক্ষার্থীরা।
ফ্যাক্টস ফাইন্ডিং কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. এমতাজ হোসেন বলেন, আমরা উন্মুক্ত বিজ্ঞপ্তি চেয়ে নোটিশ দিয়েছি। যাদের জিজ্ঞাসা করা দরকার আমরা তাদের জিজ্ঞেস করছি। জিজ্ঞেসের পরে আশা করছি নির্ধারিত সময়ের মধ্যে আমরা একটি চূড়ান্ত প্রতিবেদন দিতে পারব। তদন্ত কমিটিতে দুই শিক্ষার্থীকে অর্ন্তভুক্ত করার বিষয়ে প্রশাসন থেকে কোনো নোটিশ পাইনি। তবে এটি আইনবহির্ভূত। আর ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন দেওয়া সম্ভব নয়। কারণ এখানে অনেকগুলো ফ্যাক্টর রয়েছে যেগুলো তদন্ত করা সময়সাপেক্ষ। তাছাড়া এটি সুষ্ঠু তদন্তকাজে বাধা হয়ে দাঁড়াতে পারে।
জিয়াউর রহমান হল প্রশাসনের গঠিত তদন্ত কমিটির আহ্বায়ক অধ্যাপক ড. আবদুল গফুর গাজি বলেন, আমাদের তদন্ত কাজ চলছে। আমরা সংশ্লিষ্ট সবার সঙ্গে কথা বলছি। নির্ধারিত সময়ের মধ্যে শেষ করতে পারব বলে আশা করছি। তবে ২৪ ঘণ্টার মধ্যে প্রাথমিক প্রতিবেদন জমা দেওয়া সম্ভব নয়।
এ ছাড়া দুপুরে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রশাসন ভবনে সাজিদের মৃত্যুর বিষয়ে সংবাদ সম্মেলন করে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন।
সংবাদ সম্মেলনে বিশ্ববিদ্যালয়ের দায়িত্বপ্রাপ্ত উপাচার্য অধ্যাপক ড. এম এয়াকুব আলী বলেন, তদন্ত কার্যক্রম চলমান। ক্যাম্পাসের নিরাপত্তার স্বার্থে আমরা ইতোমধ্যে জিয়াউর রহমান হলে সিসি ক্যামেরা লাগিয়েছি। অন্য গুরুত্বপূর্ণ জায়গাগুলোতেও সিসি ক্যামেরা লাগানোর কার্যক্রম চলমান রয়েছে। আমরা সাজিদের মৃত্যুর রহস্য খুব দ্রুতই উদঘাটন করতে পারব বলে আশা করছি।
মন্তব্য করুন