ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু) নির্বাচনে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দিয়েছে। প্রচারণা নিয়ে কেন্দ্রটিতে দুপক্ষের মধ্যে উত্তেজনা দেখা দেয়। পরে প্রক্টোরিয়াল টিমসহ সংশ্লিষ্টরা তাদের নিবৃত্ত করার চেষ্টা করেন।
মঙ্গলবার (৯ সেপ্টেম্বর) সকালে কয়েকজন প্রার্থী লাইনে থাকা ভোটারদের কাছে ভোট চাচ্ছিলেন। এ সময় অন্য প্রার্থী প্রতিবাদ করলে পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে ওঠে। তবে এক পক্ষের দাবি, তারা কেন্দ্র থেকে অন্তত ১০০ গজ দূরে ভোট চাচ্ছিলেন।
বিষয়টি নিয়ে উভয় পক্ষ বিতণ্ডায় জড়িয়ে পড়ে। পরে প্রক্টোরিয়াল টিম এবং দায়িত্বশীলরা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণের চেষ্টা করেন।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রক্টর জানান, কেন্দ্রের ১০০ মিটারের মধ্যে ভোট চাওয়ার ব্যাপারে অভিযোগ পেলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
বায়ান্নর ভাষা আন্দোলন, ১৯৬৬ সালের ছয় দফা, কিংবা ১৯৬৯ সালের গণঅভ্যুত্থান অথবা ১৯৭১ সালের মুক্তিযুদ্ধ—দেশের গুরুত্বপূর্ণ সব বাঁকবদলেই গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রেখেছে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (ডাকসু)। এজন্য একে অনেকেই ‘দ্বিতীয় সংসদ’ বলে থাকেন। জুলাই গণঅভ্যুত্থান-পরবর্তী দেশের পরিবর্তিত রাজনৈতিক প্রেক্ষাপটে ভিন্ন এক আবহে শুরু হয়েছে ৩৮তম ডাকসু নির্বাচনের ভোট গ্রহণ। বেশ কয়েকটি দিক থেকে রেকর্ড গড়তে যাচ্ছে এবারের নির্বাচন।
নির্বাচনে ২৮টি পদের বিপরীতে প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন ৪৭১ জন, যা ডাকসুর ইতিহাসে সর্বোচ্চ। এর মধ্যে নারী ৬২ জন। অন্যদিকে, ১৮টি হলে ১৩টি পদে মোট ১ হাজার ৩৫ প্রার্থী প্রতিদ্বন্দ্বিতা করছেন। এবারের নির্বাচনে ছাত্রদল, ছাত্রশিবির, বাংলাদেশ গণতান্ত্রিক ছাত্র সংসদ (বাগছাস) ও ছাত্র অধিকার পরিষদ আলাদা প্যানেল দিয়েছে। বামপন্থি ছাত্র সংগঠনগুলো নির্বাচন করছে দুটি প্যানেলে। এ ছাড়া স্বতন্ত্রদের পূর্ণ ও আংশিক মিলিয়ে প্যানেল রয়েছে ১০টির মতো।
এবারের নির্বাচনে মোট ভোটার ৩৯ হাজার ৭৭৫ জন। এর মধ্যে ছাত্র ২০ হাজার ৮৭৩ এবং ছাত্রী ভোটার ১৮ হাজার ৯০২ জন। আটটি কেন্দ্রের ৮১০টি বুথে প্রত্যেক ভোটারের ডাকসু ও হল সংসদের মোট ৪১টি পদে নিজের পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দেওয়ার সুযোগ থাকছে। সকাল ৮টা থেকে শুরু হওয়া এ ব্যালট যুদ্ধ বিকেল ৪টা পর্যন্ত টানা আট ঘণ্টা চলবে। ভোট গ্রহণ শেষে নির্বাচন কমিশন তাৎক্ষণিকভাবে গণনা শুরুর পর ফল প্রকাশ করবে। একজন ভোটার গড়ে ১০ মিনিট সময় নিলেও কোনো রকম বিঘ্ন ছাড়াই সব কেন্দ্রে নির্ধারিত সময়ে ভোট দিতে সক্ষম হবেন বলে আশা করছে নির্বাচন কমিশন।
আলোচনায় যারা: এবারের নির্বাচনে ১০টি প্যানেল ও বহু স্বতন্ত্র প্রার্থী থাকলেও মূলত তিনটি প্যানেল নিয়ে হচ্ছে বেশি আলোচনা। ছাত্রদল, ছাত্রশিবির এবং বাগছাস সমর্থিত প্রার্থীরা এগিয়ে আছেন বলে বিভিন্ন জরিপ ও শিক্ষার্থীদের আলোচনায় উঠে এসেছে। এর বাইরে উমামা ফাতেমা ও বামজোট সমর্থিত প্যানেলের প্রার্থীরাও আলোচনায় রয়েছেন। এর বাইরে স্বতন্ত্র কয়েকজন প্রার্থীও আলোচনায় রয়েছেন। তাদের মধ্যে ভিপি পদে শামীম হোসেন, জিএস পদে আরাফাত চৌধুরী এবং এজিএস পদে তাহমীদ আল মুদাসসীর চৌধুরীর নাম বেশি শোনা যাচ্ছে।
মন্তব্য করুন