..
চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়কে চুয়েটের দুই শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় ঘাতক শাহ আমানত বাসের চালককে গ্রেপ্তার করেছে পুলিশ। বুধবার (২৪ এপ্রিল) দুপুরে চট্টগ্রাম নগরী থেকে তাকে গ্রেপ্তার করা হয়। আটককৃতের নাম তাজুল ইসলাম (৪৮)। তার বাড়ি চন্দ্রঘোনা আধুরপাড়া গ্রামে।
চালককে গ্রেপ্তারের বিষয়ে শিক্ষার্থীদের অবহিত করা হলে, এতে তারা সন্তোষ প্রকাশ করেন। তবে বাকি দাবিগুলো বাস্তবায়ন না হওয়া পর্যন্ত তাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবেন বলে জানান শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের যন্ত্রকৌশল বিভাগের ২১ ব্যাচের শিক্ষার্থী মোস্তফা খালিদ বিন শামস আরিয়ান বলেন, আমাদের সব দাবি আদায় না হওয়া পর্যন্ত আমরা আন্দোলন চালিয়ে যাব। তৌফিক ও শান্ত ভাইয়ের রক্ত বৃথা যেতে দেব না। বাস মালিক সমিতি মাত্র দুই লাখ টাকা করে দিবে বলেছে যা নিতান্তই লজ্জাজনক। শাহ আমানত ও এবি ট্রাভেলসকে এদের কাপ্তাই সড়কে রুট পারমিট বাতিল করতে হবে। এছাড়াও চুয়েট অ্যাম্বুলেন্স ও বাসের সংখ্যা বৃদ্ধির দাবিও মেনে নেওয়া হয়নি। চারটি অ্যাম্বুলেন্স ও পাঁচটি বাসের বদলে একটি করে দেওয়ার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, যা হতাশাজনক।
তিনি আরও জানান, সাধারণ জনগণ ও পণ্যবাহী ট্রাক এ রাস্তায় চলাচল করে। সেসব দিক বিবেচনা করে আজ রাতের মধ্যেই আমরা এ রাস্তা ছেড়ে দিতে চাই। তাই, দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আবারও আন্দোলনে নেমেছি।
এ বিষয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের উপ-উপাচার্য ড. জামাল উদ্দিন আহমেদ শিক্ষার্থীদের উদ্দেশ্যে বলেন, শিক্ষার্থীদের জন্য সর্বোত্তম ব্যবস্থা নিশ্চিত করাই আমাদের মূল লক্ষ্য। এ লক্ষ্যে আমরা পুনরায় আলোচনা করব এবং ফলপ্রসূ সিদ্ধান্তে আসার ব্যবস্থা করব।
বিষয়টি নিশ্চিত করে রাঙ্গুনিয়া মডেল থানার ওসি চন্দন কুমার চক্রবর্তী জানান, ঘাতক বাস চালককে গোপন সংবাদের ভিত্তিতে অভিযান চালিয়ে চট্টগ্রাম মহানগর এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়। চুয়েট শিক্ষার্থী নিহতের ঘটনায় তাকে এবং বাসের হেল্পারকে আসামি করে সড়ক দুর্ঘটনা আইনে মামলা দায়ের করে। পরে এ মামলায় চালককে আইনি প্রক্রিয়া শেষে কারাগারে পাঠানো হবে।
এদিকে এ ঘটনায় তৃতীয় দিনের মতো চট্টগ্রাম-কাপ্তাই সড়ক অবরোধ করে আন্দোলন করছে চট্টগ্রাম প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। গতকাল ৯ দফা দাবির কথা বলা হলেও তার সাথে আরও এক দফা দাবি যোগ করেন তারা। আন্দোলন নিয়ে কটূক্তি করা হয়েছে এমন দাবিতে সুমন দে নামে চুয়েটের এক শিক্ষকেরও অপসারণ দাবিও করেন শিক্ষার্থীরা। তাদের দেওয়া দশ দফা দাবি না মানা পর্যন্ত আন্দোলন চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেন তারা।
উল্লেখ্য, গত সোমবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে কাপ্তাই সড়কের রাঙ্গুনিয়ার সেলিমা কাদের কলেজ গেট এলাকায় মোটরসাইকেলে ঘুরতে বেরিয়ে দুর্ঘটনার শিকার হন চুয়েটের তিন শিক্ষার্থী। দ্রুতগতির শাহ আমানত পরিবহনের একটি বাস শিক্ষার্থীদের মোটরসাইকেলটিকে ধাক্কা দিলে ঘটনাস্থলে মারা যান চুয়েটের পুরকৌশল বিভাগের তৃতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী শান্ত সাহা। গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে নেওয়ার পথে মারা যান একই বিভাগের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী তৌফিক হোসাইন। নিহত শান্ত সাহা নরসিংদী সদরের ৪ নম্বর ওয়ার্ডের কাজল সাহার ছেলে এবং তৌফিক হোসেন নোয়াখালী সদর উপজেলার সুধারাম থানার নিউ কলেজ রোডের ২ নম্বর ওয়ার্ডের মোহাম্মদ দেলোয়ার হোসেনের ছেলে। এ ঘটনায় আহত হন জাকারিয়া হিমু। তিনি চুয়েটের দ্বিতীয় বর্ষের শিক্ষার্থী। বর্তমানে তিনি এভারকেয়ার হাসপাতালে চিকিৎসাধীন।
মন্তব্য করুন