ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের (ঢাবি) লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউটে ‘প্রোটিওলাইটিক এনজাইম ভিত্তিক পরিবেশ-বান্ধব চামড়া প্রক্রিয়াকরণ’ শীর্ষক একটি সেমিনার অনুষ্ঠিত হয়েছে।
বুধবার (২৯ মে) দুপুরে ইন্সটিটিউট মিলনায়তনে পরিবেশ, বন ও জলবায়ু মন্ত্রণালয়ের আওতাভুক্ত বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের (বিসিসিটি) অর্থায়নে আয়োজিত হয় সেমিনারটি।
এতে ‘কার্বন নির্গমন হ্রাস এবং জলবায়ু পরিবর্তন প্রশমনের জন্য বৃত্তাকার অর্থনীতি ভিত্তিক পরিবেশ-বান্ধব চামড়ার কঠিন বর্জ্য প্রক্রিয়াকরণ প্রযুক্তির উদ্ভাবন’ প্রকল্পসহ এই শিল্পে পরিবেশবান্ধব প্রক্রিয়া গ্রহণের গুরুত্ব, নতুন প্রোটিওলাইটিক এনজাইমের ব্যবহার এবং এর সুবিধা, এবং টেকসই চামড়া শিল্প গড়ে তোলার জন্য প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ সম্পর্কে আলোচনা করা হয়।
সেমিনারে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ ক্লাইমেট চেঞ্জ ট্রাস্টের ব্যবস্থাপনা পরিচালক (অতিরিক্ত সচিব) মো. জয়নাল আবেদীন। বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের জীববিজ্ঞান অনুষদের ডিন অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. মাহবুব হাসান।
মো. জয়নাল আবেদীন বলেন, বাংলাদেশে চামড়া শিল্প দেশের অর্থনীতির জন্য গুরুত্বপূর্ণ এবং উদ্ভাবিত এই চামড়া প্রক্রিয়াকরণ পদ্ধতিটি বাংলাদেশের চামড়া শিল্পকে আরও টেকসই এবং আন্তর্জাতিক বাজারে প্রতিযোগিতামূলক করে তোলার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ অবদান রাখতে পারে।
তিনি বলেন, উদ্ভাবিত পদ্ধতিটি ব্যাপকহারে ট্যানারিতে বাস্তবায়িত হলে বাংলাদেশে বাণিজ্যিকভাবে এনজাইম উৎপাদনের পথ প্রশস্ত হবে। এছাড়াও ট্যানারিগুলো এলডব্লিও সনদ অর্জন করতে পারবে, রপ্তানি বৃদ্ধি পাবে, কেমিক্যালের আমদানি নির্ভরতা কমবে, ট্যানারি শিল্প আরও টেকসই হবে। এই প্রযুক্তিতে একদিকে যেমন পরিবেশ দূষণ হ্রাস পাবে, অন্যদিকে বর্জ্য পরিশোধন খরচ কমবে। একই সাথে বাংলাদেশের জলবায়ু পরিবর্তন মোকাবেলায় গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে।
এছাড়া, তিনি বাংলাদেশের চামড়া শিল্পের সম্ভাবনা এবং টেকসই ও পরিবেশবান্ধব পদ্ধতিতে চামড়া প্রক্রিয়াজাতকরণের গুরুত্বের উপর জোর দেন।
বিশেষ অতিথির বক্তব্যে অধ্যাপক ড. এ.কে.এম. মাহবুব হাসান বলেন, ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় বর্তমানে গবেষণায় খুব ভালো করছে। গবেষণা তহবিলের পরিমাণ কম হলেও এখানে অত্যন্ত দক্ষ একদল গবেষক রয়েছেন যারা দেশের মানুষের জীবনযাত্রার মানোন্নয়নের জন্য একাগ্রতার সাথে গবেষণা করে যাচ্ছেন। এসময় তিনি গবেষণার জন্য তহবিল বাড়ানোর জন্য সরকারের কাছে অনুরোধ জানান।
তিনি আশাবাদ ব্যক্ত করে বলেন, এই গবেষণা আরও এগিয়ে যাবে এবং বাংলাদেশের ট্যানারি খাত সম্পর্কে বিরূপ ধারণা বদলে দেবে। চামড়া প্রক্রিয়াকরণ, রফতানি আয় বৃদ্ধি ইত্যাদির ক্ষেত্রে এটি ইতিবাচক প্রভাব ফেলবে। এছাড়া, তিনি ট্যানারি মালিকদেরকেও উপস্থাপিত গবেষণার উন্নয়নে বিনিয়োগ করার আহ্বান জানান।
লেদার ইঞ্জিনিয়ারিং অ্যান্ড টেকনোলজি ইনস্টিটিউট- এর পরিচালক অধ্যাপক ড. মোহাম্মদ মিজানুর রহমানের সভাপতিত্বে সেমিনারে কি-নোট প্রেজেন্টেশন উপস্থাপন করেন ইন্সটিটিউটের গবেষক মো. জাওয়াদ হাসান। এছাড়া, এতে বাংলাদেশের ট্যানারি মালিক, লেদার টেকনোলজিস্ট, চামড়া শিল্পের বিভিন্ন উদ্যোক্তাবৃন্দ, ইনস্টিটিউটের শিক্ষকমন্ডলি এবং শিক্ষার্থীরা উপস্থিত ছিলেন।
মন্তব্য করুন