আগামী দ্বাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনকে কেন্দ্র করে উত্তপ্ত রয়েছে দেশের রাজনৈতিক অঙ্গন। সরকারবিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর হরতাল-অবরোধের কারণে আতঙ্কে রয়েছে সর্বস্তরের মানুষ। এর মধ্যে আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা শুরু হওয়ার কথা রয়েছে। তবে রাজনৈতিক দলগুলোর লাগাতার হরতাল-অবরোধ কর্মসূচির কারণে পরীক্ষা পেছানোর দাবি তুলেছেন প্রিলিমিনারিতে উত্তীর্ণ প্রার্থীরা।
গত রোববার (১৯ নভেম্বর) সকালে ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি জানিয়ে প্রধান নির্বাচন কমিশনার (সিইসি) ও পিএসসির চেয়ারম্যান বরাবর আবেদন করেছেন পরীক্ষার্থীরা।
অর্ধশতাধিক পরীক্ষার্থী স্বাক্ষরিত ওই আবেদনপত্রে বলা হয়েছে, আগামী ২৭ নভেম্বর থেকে ১১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ১৫ দিন ঢাকাসহ সারা দেশে ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা অনুষ্ঠিত হবে। ইতোমধ্যে পিএসসি লিখিত পরীক্ষার সময়সূচি প্রকাশ করেছে। ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার্থী হিসেবে সময়সূচি অনুযায়ী পরীক্ষা দিতে তাদের কোনো আপত্তি নেই। তবে তপশিল ঘোষণার পর চলমান হরতাল-অবরোধ আরও ব্যাপক ও মারাত্মক আকার ধারণ করায় পরীক্ষার পরিবেশ নিয়ে আমরা শঙ্কিত। ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষার ১২ হাজারের বেশি পরীক্ষার্থীর মধ্যে অর্ধেকের বেশি পরীক্ষার্থী ঢাকা শহরের বিভিন্ন কেন্দ্রে পরীক্ষা দেবে। এমতাবস্থায় টানা পরীক্ষায় নিরাপত্তার বিষয়টি গুরুত্বসহকারে দেখা উচিত।
গত ১৯ নভেম্বর থেকে ২১ নভেম্বর পর্যন্ত দৈনিক কালবেলা পত্রিকার অনলাইন সংস্করণে একটি জরিপ পরিচালনা করা হয়। জরিপের শিরোনাম ছিল ‘২৭ নভেম্বর থেকে অনুষ্ঠিতব্য ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি করেছেন পরীক্ষার্থীরা। আপনি কি তাদের দাবি সমর্থন করেন?’। জরিপের উত্তরে ৩টি অপশন রাখা হয়। এক নম্বরে ‘হ্যাঁ’, দুই নম্বরে ‘না’ এবং তিন নম্বরে রাখা হয় ‘মন্তব্য নেই’।
এই রিপোর্ট লেখা পর্যন্ত জরিপে অংশগ্রহণ করেছেন ১৩ হাজার ৫১ জন। এতে ৪৫তম বিসিএস লিখিত পরীক্ষা পেছানোর দাবি করছেন ১২ হাজার ১৬৭ জন। যা শতকরা হিসাবে প্রায় ৯৩.২২ শতাংশ। পরীক্ষা পেছানোর বিপক্ষে ভোট দিয়েছেন ৭২৩ জন। যা শতকরা হিসেবে ৫.৫৪ শতাংশ। আর জরিপে ভোট দেওয়া থেকে বিরত থেকেছেন ১৬১ জন। যা শতকরা হিসেবে ১.২৪ শতাংশ।
এ বিষয়ে জানতে চাইলে পিএসসির পরীক্ষা নিয়ন্ত্রক (ক্যাডার) আনন্দ কুমার বিশ্বাস কালবেলাকে বলেন, এখনও লিখিত পরীক্ষার বিষয়ে নতুন কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি। তবে দুয়েকদিন পর সভা করে সিদ্ধান্ত নেওয়া হতে পারে।
পিএসসির একাধিক সদস্যও জানিয়েছেন, ৪৫তম বিসিএসের লিখিত পরীক্ষা পেছানো হবে কি না বা হলেও কবে হতে পারে তা নিয়ে এখনও কোনো সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়নি।
জানতে চাইলে পিএসসি চেয়ারম্যান সোহরাব হোসাইন কালবেলাকে বলেন, বিষয়টি আমাদের নজরে রয়েছে। আমরা পরিস্থিতি বিবেচনা করে সিদ্ধান্ত নেব। আগ থেকে বলা কঠিন। কারণ, দুয়েকদিনের মধ্যে পরিস্থিতি তো স্বাভাবিকও হতে পারে।
মন্তব্য করুন