ভারতের মাটিতে ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলাকে সরাসরি যুদ্ধের শামিল হিসেবে বিবেচনা করা হবে- এমন হুঁশিয়ারি দিয়েছে দিল্লি।
একইসঙ্গে বলা হয়েছে, এমন কোনো হামলা হলে তাৎক্ষণিক ও সমপর্যায়ের সামরিক জবাব দেওয়া হবে। ভারতীয় সরকারের ভাষায়, সন্ত্রাস মোকাবিলায় এবার কোনো রকম ‘ছাড়’ দেবে না তারা।
শনিবার (১০ মে) বিকেলে দেশটির উচ্চপর্যায়ের সরকারি সূত্রের বরাতে এ তথ্য প্রকাশ করে ভারতের শীর্ষস্থানীয় সংবাদমাধ্যম টাইমস অব ইন্ডিয়া।
প্রতিবেদনে বলা হয়, পাকিস্তানভিত্তিক সন্ত্রাসী তৎপরতার বিরুদ্ধে লড়াইয়ের কৌশলে বড় পরিবর্তন এনেছে ভারত। সীমান্তে চলমান উত্তেজনা এবং সাম্প্রতিক হামলাগুলোর পরিপ্রেক্ষিতে দেশটি এমন সিদ্ধান্ত নিয়েছে। সরকারি সূত্রগুলো বলছে, ভবিষ্যতে কোনো হামলা হলে তা যুদ্ধ ঘোষণার ইঙ্গিত বলেই বিবেচিত হবে।
গত ২২ এপ্রিল জম্মু ও কাশ্মীরের পর্যটন শহর পেহেলগামে ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ নিরীহ পর্যটক নিহত হন। ভারত অভিযোগ করে, এই হামলার পেছনে ছিল পাকিস্তান থেকে পরিচালিত জঙ্গি সংগঠনগুলো। যদিও ইসলামাবাদ বরাবরের মতো এ অভিযোগ অস্বীকার করেছে।
পেহেলগামের ওই ঘটনার পর থেকেই কাশ্মীর সীমান্তে উত্তেজনা চরমে পৌঁছায়। টানা ১২ রাত ধরে চলে গোলাগুলি ও হামলা-পাল্টা হামলা। পরিস্থিতির জবাবে ভারত গত মঙ্গলবার চালায় ‘অপারেশন সিঁদুর’- যার আওতায় পাকিস্তান নিয়ন্ত্রিত অন্তত ৯টি জায়গায় নিশানা করে মিসাইল হামলা চালানো হয়।
ভারতের এই অভিযানের পর পাল্টা জবাব দেয় পাকিস্তান। শুক্রবার (৯ মে) মধ্যরাত থেকে তারা শুরু করে ‘অপারেশন বুনিয়ান-উন-মারসুস’। ইসলামাবাদ দাবি করেছে, তারা ভারতের অভ্যন্তরে ড্রোন ও মিসাইল হামলা চালিয়েছে এবং দিল্লির এস-৪০০ আকাশ প্রতিরক্ষা ব্যবস্থাও ধ্বংস করেছে।
এছাড়া পাকিস্তানের দাবি, তারা ভারতের শাসক দল বিজেপি ও সরকারি কিছু ওয়েবসাইটে সাইবার হামলা চালিয়ে তা হ্যাক করেছে। তবে এসব দাবির সত্যতা স্বাধীনভাবে যাচাই করা সম্ভব হয়নি বলে জানিয়েছে ব্রিটিশ সংবাদমাধ্যম বিবিসি।
ভারতীয় গোয়েন্দা সংস্থাগুলোর মতে, পাকিস্তান সেনাবাহিনীর ছত্রছায়ায় এখনো সক্রিয় রয়েছে বহু জঙ্গি ক্যাম্প। এসব ক্যাম্প সেনা স্থাপনার কাছাকাছিই পরিচালিত হচ্ছে, যা থেকে বোঝা যায়, পাকিস্তান রাষ্ট্রীয়ভাবেই এসব তৎপরতায় জড়িত। দিল্লি এখন এসব ঘটনাকে আর আলাদা সন্ত্রাস হিসেবে দেখছে না, বরং তা রাষ্ট্রীয় সন্ত্রাস ও পরোক্ষ যুদ্ধ হিসেবে বিবেচনা করছে।
এই অবস্থায় ভারত স্পষ্ট করেছে, ভবিষ্যতে যে কোনো ধরনের সন্ত্রাসী হামলার অর্থই হবে যুদ্ধ, আর সে যুদ্ধের জবাব দেওয়া হবে উপযুক্ত সামরিক কৌশলে।
মন্তব্য করুন