রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের (রাবি) সাবেক ছাত্রী মোছা. লায়লা আক্তারের মা মোসলেমিনার হৃৎপিণ্ডের দুটি ভাল্ব নষ্ট। এর চিকিৎসার জন্য প্রয়োজন প্রায় সাত লাখ টাকা। এ টাকা পরিবারের পক্ষে জোগাড় করা সম্ভব নয়৷ তাই মাকে বাঁচাতে সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন লায়লা আক্তার।
তাদের বাড়ি নীলফামারির সৈয়দপুর উপজেলার পূর্ব বেলপুকুর পাকাধারা গ্রামে। ২০১১-১২ শিক্ষাবর্ষের ছাত্রী লায়লা আক্তার জানান, দীর্ঘদিন ধরে তার মা শারীরিক অসুস্থতায় ভুগছিলেন। প্রাথমিকভাবে তারা ভেবে আসছিলেন এটা হয়তো ঠান্ডা বা শ্বাস কষ্টের সমস্যা। কিন্তু চলতি বছরের জুলাই মাসে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালের চিকিৎসক মো. হাসানুল ইসলাম পরীক্ষা করে জানান, মোসলেমিনার হৃৎপিণ্ডের দুটি ভাল্ব সম্পূর্ণ নষ্ট হয়ে গেছে। অতি দ্রুতই তাকে অপারেশন করা লাগবে।
এরপর মোসলেমিনার পরিবার তাকে জাতীয় হৃদরোগ ইনস্টিটিউট ও হাসপাতালে নিয়ে যায়। সেখানে ডা. কামরুল ইসলাম তালুকদারকে দেখালে তিনিও অপারেশন করার পরামর্শ দেন। কিন্তু অপারেশনের বিকল্প উপায় খুঁজতে পর দিন একই হাসপাতালের মেডিসিন কার্ডিওলজিস্ট মীর নিসারুদ্দীন আহম্মেদকে দেখালে তিনি ওষুধ দেন। সঙ্গে বলে দেন, যত দ্রুত সম্ভব তাকে অপারেশন করাতে হবে। এরপর বাসায় এসে নিয়মিত ওষুধ খেতে থাকেন মোসলেমিনা।
কিন্তু গত মাসে খুবই অসুস্থ হওয়ায় ডাক্তারের পরামর্শে তাকে রংপুর মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঁচ দিন ভর্তি রাখা হয়। সেখানে কার্ডিওলজি ও হৃদরোগ বিশেষজ্ঞ ডা. হরিপদ সরকার ও রবীন্দ্র নাথ বর্মন জানান, তাকে অপারেশন করা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই। দরিদ্র এ পরিবারের কপালে পড়ে দুশ্চিন্তার ভাঁজ। অপারেশনের ব্যয় শুনে ধরেই নিয়েছিলেন তিল তিল করে মৃত্যুর দিকে এগোনোই যেন তাদের ভবিতব্য।
মাকে বাঁচাতে তাই সাহায্যের আবেদন জানিয়েছেন সন্তানরা। এখন পর্যন্ত এক লাখ টাকা সাহায্য পেয়েছেন তারা।
লায়লা আক্তার বলেন, ‘সংসারে একমাত্র উপার্জনক্ষম আমার বাবা কয়েক বছর ধরে ডিমেনশিয়া রোগে আক্রান্ত। দুই বার স্ট্রোক করে শারীরিক কার্যক্ষমতা হারিয়েছেন বাবা। পাঁচ বোনের মধ্যে আমি বহু কষ্টে বিশ্ববিদ্যালয়ের গণ্ডি পেরিয়েছি। কিন্তু মায়ের হার্টের ভাল্ব নষ্টের বিষয়টি ধরা পড়ার পর অর্থের অভাবে চিকিৎসা করতে না পেরে আমরা দিশাহিন হয়ে পড়েছি। মাকে বাঁচাতে সবার কাছে সাহায্যের আবেদন জানাচ্ছি।’
মন্তব্য করুন