রোববার ভোরে পরীমণি তার ভেরিফায়েড ফেসবুক পেজে একটি ভিডিও আপলোড করেন, যাতে একসঙ্গে দেখা যায় পরীমণি ও রাজকে। মান-অভিমান ভুলে পাশাপাশি বসে তাদের হাসতে দেখে অবাক নেটিজেনরা। ভিডিওতে দেখা যায়, কেক কেটে পুত্রসন্তান রাজ্যের ১০ মাস পূর্তি উদযাপন করা হচ্ছে। সেখানে পরিবারের অন্যদের সঙ্গে রয়েছেন শরিফুল রাজ। ওই ভিডিওতে রাজ ও পরীমণিকে পাশাপাশি বসে বেশ হাসিখুশি দেখা যায়। সবাই ভেবেছিলেন, সব অভিমান ভুলে এক হয়েছেন রাজ-পরী। ভক্তরা জানিয়েছিলেন শুভেচ্ছা।
কিন্তু শেষ পর্যন্ত জোড়া লেগেও লাগল না জোড়া, রাজ-পরীর সংসারে এখনো বহাল বিচ্ছেদের সুর। কারণ এই জুটির এক হওয়ার সম্ভাবনা নাকচ করে দিয়েছেন তারা নিজেরাই। বরং সন্তানের জন্যই তাদের এই একত্র হওয়া বলেও জানান উভয়েই। ছেলের জন্য আগামীতেও এই জুটি একসঙ্গে দেখা দেবেন, এমনটাই নিশ্চিত করেছেন রাজ্যর বাবা-মা।
রাজ জানান, সন্তানের বিশেষ দিনটি পালনের জন্য ওই দিন রাত ১২টার পর রাজ্যের জন্য বিশেষ কেক নিয়ে পরীর বসুন্ধরার বাসায় হাজির হয়েছিলেন তিনি। তার কথায়, ‘এখানে একসঙ্গে হওয়া-না হওয়ার বিষয়টি বড় নয়। আমি আমার বাচ্চাকে দেখতে বাসায় যাব না?’ তার বিশেষ দিন সেলিব্রেশন করব না? আমার বাচ্চার বার্থডে সেলিব্রেশন করতে বাসায় গিয়েছিলাম আমি। কারণ, আমাদের দুজনেরই বাচ্চার সঙ্গে সময় কাটাতে ভালো লাগে।’ তারা দুজন মিলেই ছেলের বিশেষ দিনটি উদযাপনের সিদ্ধান্ত নিয়েছেন জানান অভিনেতা। রাজ বলেন, ‘বাচ্চার এই বিশেষ দিনটির জন্য আমরা দুজনই নিজেদের মধ্যে কথা বলেছি। এরপর একসঙ্গে হয়ে সন্তানের জন্মের ১০ মাস পূর্তির কেক কেটেছি। দিনটা রাজ্যের জন্য স্পেশাল। তাই দিনটিতে সব সময়ই তাকে ঘিরে সর্বোচ্চ সময় দিই আমরা। ওকে নিয়ে সেলিব্রেশন করি।’
অপরদিকে পরীমণি ফেসবুকে লিখেন, ‘‘আপনাদের মধ্যে অনেকের মতো আমিও খুশি হয়ে যাই খবরের এসব শিরোনাম দেখে! সব ভুলে আবার এক হলেন… কিন্তু সব কি আর সব সময় এক হয়? আমরা দশ তারিখটা (যেটি আমাদের জীবনের অনেক স্পেশাল দিন। আমাদের বাচ্চার পৃথিবীতে আসার দিন এটি) সেলিব্রেট করেছি মাত্র। আগামী দিনেও করবো। যেখানে আমরা জীবনের অন্য কোনো ইস্যু টানব না। ৯ তারিখ রাতে নানাভাই ঢাকায় আসেন। তারপর এই আয়োজন, সবাই মিলে। শুধু নানাভাই রয়ে গেলেন আমার কাছে।
আর, রাজ চলে গেল রাজের মতো…’
নিজেদের সম্পর্ক যে বিচ্ছেদের দিকে এগোচ্ছে, তার ইঙ্গিত তারা অনেক আগেই দিয়ে রেখেছেন। কয়েক দিন আগে পরীমণি অভিযোগ করেছিলেন, ‘রাজ নিয়মিত বাসায় থাকে না। সন্তানের প্রতিও সে দায়িত্বও পালন করে না। তবুও লোক দেখাতে বিভিন্ন ইভেন্টে আমরা একসঙ্গে অংশ নিয়েছি। কিছুদিন আগে আমি হাসপাতালে ছিলাম, আমাকে দেখতেও যায়নি। বরং বাসায় নিজের জিনিসপত্র গুছিয়েছে চলে যাওয়ার জন্য।’
তাহলে বিচ্ছেদের দিকে যাচ্ছে কিনা এমন প্রশ্নে পরী বলেছিলেন, ‘২০ মে আমাকে ছেড়ে ও (রাজ) চলে গেছে। বিচ্ছেদ তো সেদিনই হয়ে গেছে। শুধু আইনি প্রক্রিয়া হয়নি। একটা মানুষ চলে গেলে তো তাকে আর ধরে রাখা যায় না। পরী হাসতে হাসতে আরও বলেন, ‘রাজ এখন বলে কী, আমাদের বিয়ের কাবিননামা নাকি ভুল। আমাদের নাকি ঠিক ঠিক বিয়েই হয়নি। যে এভাবে বলতে পারে, সে ভয়ংকর মানুষ। তার সঙ্গে থাকা যাবে না। শুধু কষ্ট লাগবে সন্তানের কথা ভেবে।’
রাজ আবার ফিরে এলে তাকে গ্রহণ করা হবে কিনা প্রশ্নেও নারাজি দিয়েছিলেন পরীমণি। তিনি জানিয়েছিলেন, ‘বিয়ে-সংসার মুদি দোকান নয়। যে মানুষ স্ত্রী-বাচ্চার মায়ের চরিত্র নিয়ে কথা তুলতে পারে, তার সঙ্গে ঘর করার সুযোগ নেই আর। আমি রাজের স্ত্রী, এটি আর শুনতে চাই না। আমি ওর প্রাক্তন, এটা শোনাটাই বরং সম্মানের।’
পরীর এমন বক্তব্যে রাজ জানিয়েছিলেন, পরীর সিদ্ধান্তই তিনি মেনে নেবেন।
উল্লেখ্য, ২০২২ সালের ১০ জানুয়ারি পরী সন্তানসম্ভবা বলে গণমাধ্যমে খবর আসে। তখনই সামনে আসে ২০২১ সালের ১৭ অক্টোবর রাজ ও পরীমণির গোপন বিয়ের খবর। পরে ২২ জানুয়ারি তারা পারিবারিক আয়োজনে বিয়ের আনুষ্ঠানিকতা সারেন। একই বছরের ১০ আগস্ট তাদের ছেলে শাহীম মুহাম্মদ রাজ্যর জন্ম হয়।
মন্তব্য করুন