

দেশের শোবিজ অঙ্গনের চেনা মুখগুলো একে একে হারিয়ে যাচ্ছে। অমিত হাসান থেকে শুরু করে মাহিয়া মাহি, কিংবা জায়েদ খান— জনপ্রিয় অনেক তারকাই এখন স্থায়ীভাবে পাড়ি জমাচ্ছেন বিদেশে। কেউ কেউ দেশে ফিরলেও তা সাময়িক; কাজ শেষ করেই আবার উড়াল দিচ্ছেন প্রবাসে। কেন তারকারা এভাবে দেশ ছাড়ছেন? সেই গুমোট প্রশ্নের খোলামেলা উত্তর দিলেন বাংলাদেশ চলচ্চিত্র শিল্পী সমিতির সভাপতি ও খল অভিনেতা মিশা সওদাগর।
সম্প্রতি একটি বেসরকারি টেলিভিশনের অনুষ্ঠানে অংশ নিয়ে মিশা সওদাগর জানান, দেশে পর্যাপ্ত কাজের সুযোগ না থাকাই শিল্পীদের দেশ ছাড়ার প্রধান কারণ। এফডিসির বর্তমান অবস্থা নিয়ে আক্ষেপ করে তিনি বলেন, “কাজ না থাকলে শিল্পীদের কী করার আছে? এক সময় আমরা সকাল থেকে রাত পর্যন্ত এফডিসিতে শুটিং নিয়ে ব্যস্ত থাকতাম। এখন সেই এফডিসি প্রায় নিস্তব্ধ। যারা দেশ ছেড়েছেন, তাদের কারও কি যাওয়ার খুব ইচ্ছে ছিল?”
কয়েকজন সহকর্মীর নাম উল্লেখ করে মিশা বলেন, “অমিত হাসান, মৌসুমী, ইমন, মাহিয়া মাহি বা আলেকজান্ডার বো— তারা এখন বিদেশে। দেশে কাজ থাকলে তারা কেউই যেতেন না।”
গ্ল্যামার মেনটেইন বনাম শূন্য পকেট মিশা সওদাগর শিল্পীদের সামাজিক ও অর্থনৈতিক বাস্তবতার করুণ চিত্র তুলে ধরেন। তিনি বলেন, “একজন শিল্পীর কাজ থাকুক বা না থাকুক, তাকে অনেক কিছু মেনটেইন করে চলতে হয়। তার গেটআপ, ভালো পোশাক, গাড়ি বা থাকার পরিবেশ বজায় রাখা জরুরি। দিনশেষে শিল্পীরাও তাদের পরিবারের জন্য কাজ করেন। কিন্তু যখন ইনকাম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে যায়, তখন পরিবারের টিকে থাকার লড়াইয়ে শিল্পীদের সামনে বিদেশ যাওয়া ছাড়া আর কোনো বিকল্প থাকে না। প্রবাসে গেলে অন্তত কাজ করে সম্মানের সাথে পরিবার চালানো যায়।”
তালিকায় প্রবাসীদের মধ্যে সাম্প্রতিক সময়ে অমিত হাসান, সাইমন সাদিক, জায়েদ খান, মাহিয়া মাহি, সাজু খাদেমসহ অনেক তারকাই বিদেশের স্থায়ী নাগরিকত্ব বা দীর্ঘমেয়াদি থাকার সুযোগ নিয়ে দেশ ছেড়েছেন। এই প্রবণতা দিন দিন বাড়ছেই।
উল্লেখ্য, খোদ মিশা সওদাগরের পরিবারও বর্তমানে যুক্তরাষ্ট্রে স্থায়ীভাবে বসবাস করছেন। অভিনয়ের প্রয়োজনে তিনি দেশে থাকলেও বছরের বড় একটি সময় তাকে মার্কিন মুলুকেই কাটাতে হয়। তাই প্রবাস জীবনের বাস্তবতা তিনি নিজেও খুব কাছ থেকে উপলব্ধি করেন।
মন্তব্য করুন